ত্রিশালে বাইক রাইডার হত্যা পিবিআই কর্তৃক রহস্য উদঘাটন করেছে। সেই সাথে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, গত ৮ জানুয়ারী রাত অনুমান ০৪.১৫ ঘটিকায় জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকা থেকে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ নাজমুল ইসলাম (৩০), আবুল কাশেম @ সোনা মিয়া (৫৫) ও আব্দুল আজিজ @ আনিছ (২৪) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, ময়মনসিংহ।
সুত্র জানায়, ৩০ডিসেম্বর সকাল ০৭.৪৫ ঘটিকায় থানা পুলিশের মাধ্যমে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা সংবাদ পায় ত্রিশাল থানাধীন বৈলর ইউনিয়নের বৈলর কামারপাড়া হতে বৈলর বকশীপাড়া গামী মাটির রাস্তা সংলগ্ন হিন্দুপল্লী গ্রামের জনৈক আঃ রহিম এর পুকুরের দক্ষিণ দিকে হাফওয়াল করা বাউন্ডারির ভিতরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে উক্ত অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে।
জানা যায়, অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির নাম জুবায়েদ আহমেদ (৩১)তার বাড়ি নেত্রকোণার মোহনগজ্ঞ থানায়। পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা থানা পুলিশের মাধ্যমে খবরটি ডিসিস্টের পরিবারকে জানিয়ে দেয়। উক্ত ঘটনায় পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা ছায়া তদন্ত শুরু করে। ডিসিস্টের বড় ভাই আজহারুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ত্রিশাল থানার মামলা নং-২৬, তাং-৩০/১২/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ রুজু হয়। থানা পুলিশের তদন্তকালে গত ০৭/০১/২০২৫ তারিখে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা স্বউদ্যোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার এর সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) অমিতাভ দাস মামলার তদন্ত শুরু করেন।
পিবিআই টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র নয় দিনের মধ্যেই হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাত আসামীদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গত ৮ জানুয়ারী রাত অনুমান ০৪.১৫ ঘটিকায় জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকা থেকে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী ০ মোঃ নাজমুল ইসলাম (৩০), আবুল কাশেম @ সোনা মিয়া (৫৫) ও আব্দুল আজিজ @ আনিছ (২৪) গ্রেফতার করে। আসামীদের দেখানো ও সনাক্ত মতে ডিসিস্টের মোটর-সাইকেলটি উদ্ধার করে জব্দ করে।
তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে গত ০৮/০১/২০২৪ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুইজন আসামী বিজ্ঞ আদালতে নিজেদের সম্পৃক্ত করে ঘটনার বিবরণ উল্লেখপূর্বক ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।
এ বিষয়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এই হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামী নাজমুলের বাড়ী ত্রিশালের বৈলরে। দীর্ঘ ৫/৬ বছর যাবত সে টঙ্গীতে ওয়েলডিং এর কাজ করত। ডিসিস্ট জুবায়েদের বাড়ী নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ। সে মিরপুরের শিয়ালবাড়ী থেকে বাইক রাইডার হিসেবে কাজ করত। গত ২৯ ডিসেম্বর বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকায় জুবায়েদ ভাড়ার জন্য টঙ্গী স্টেশন রোডের মাথায় দাঁড়ালে সেখানে আসামী নাজমুলের সাথে দেখা হয়। আসামী নাজমুল টঙ্গী হতে ময়মনসিংহ শহরে আসা-যাওয়ার কথা বলে জুবায়েদের মোটর-সাইকেল ভাড়া করে। বৈলরে পৌঁছার পর আসামী নাজমুল তার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে পাওনা টাকা নেয়ার কথা বলে জুবায়েদকে নিয়ে ঘটনাস্থল এলাকায় যায়। একপর্যায়ে আসামী নাজমুল বাইক রাইডার জুবায়েদের গলায় থাকা চাদর দিয়ে ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করে এবং নিহত জুবায়েদ এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মোটর-সাইকেল নিয়ে চলে আসে। আসামী নাজমুল ডিসিস্টের মোবাইল ফোনটিকে ধানিখোলা বাজারে জনৈক খোকন মেকারের কাছে ২০০ টাকায় বিক্রি করে এবং মোটর-সাইকেল নিয়ে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। ২/৩ দিন পর আসামী নাজমুল মোটর-সাইকেলটি বাট্টাজোড় এলাকায় তার পরিচিত আসামী সোনা মিয়ার কাছে বাইকটি বিক্রি করে। আসামী সোনা মিয়া ছিনতাইকৃত মোটর-সাইকেলটি তার ভাতিজি জামাই আসামী আব্দুল আজিজ আনিছ এর হেফাজতে রাখে।
পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের আন্তরিকতা, নিরলস প্রচেষ্টা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের সহযোগীতায় মাত্র নয় দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডের আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে সুত্র জানায়।
The post ত্রিশালে বাইক রাইডার হত্যা পিবিআই কর্তৃক রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার ৩ appeared first on দৈনিক ময়মনসিংহের খবর.