কৃষি ক্ষেত্রে কম খরচে অধিক উৎপাদনের এক অন্যতম উপায় আধুনিক (মালচিং) পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তেরখাদার কৃষকরা। উৎপাদিত ফসলের চাহিদা ও মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষক আগ্রহী হয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন এই পদ্ধতি সম্পর্কে। আর এতে কৃষকদের সহায়তা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস। তেরখাদা উপজেলাতে মাটি অধিক উর্বর হওয়ায় প্রতিটি শাক-সবজি ও ফসলের সর্বোচ্চ ফলন হয়। এ উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১০ হাজার ৬ শত ১৯ হেক্টর। উপজেলা
কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, চলতি রবি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো ঘেরের পাড় সহ প্রায় ১২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছে কৃষকরা। গত বছর উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে টমেটোর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। সরেজমিনে উপজেলার আজগড়া, মধুপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘেরের পাড়সহ জমিতে কৃষকেরা বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন। প্রতিটি গাছেই ঝুলছে কাঁচা-পাকা টমেটো। কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন টমেটো সংগ্রহ ও ক্ষেত পরিচর্যায়।
কৃষক সঞ্জয় ঢালী বলেন, আমি ২০ শতাংশ জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো আবাদ করেছি। প্রথমদিকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এখন প্রতি কেজি ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ২০ শতাংশ জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো আবাদ করতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি বিক্রি হবে দেড় লাখ টাকার মতো। অপর কৃষক তাপস বৈরাগী বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকলে আমরা কৃষকরা লাভবান হবো।
তিনি আরো বলেন, তেরখাদায় এই টমেটো স্থানীয় বাজারসহ খুলনা, ঢাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কপিল দেব বসাক বলেন, প্রতিনিয়ত মাঠে এসে সরাসরি কৃষকের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করি। চাষাবাদ সম্পর্কে নানাবিধ পরামর্শ ও সেবা দেই আমরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শিউলি মজুমদার বলেন, জমিকে উত্তমরূপে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বীজ বপন করতে হয়। তারপর সেই বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলি পেপার (পলিথিন)। বীজগুলো থেকে চারা গজানোর পর চারার স্থানগুলো থেকে মালচিং পেপার ছিদ্র করে দিতে হয়। যাতে চারাগুলো সহজে বেড়ে উঠতে পারে। এছাড়া মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না এবং সেচের অতিরিক্ত পানি জমে চারা বিনষ্ট হয় না। এভাবে চাষে অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিকও কম লাগে। এতে উৎপাদন খরচ কমে যায়, জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ফলন অনেক বেশি হয়।
খুলনা গেজেট/ টিএ
The post আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.