1:59 pm, Friday, 10 January 2025

শিবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিজিবির পাশে গ্রামের মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে তিন দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। গত বুধবার সন্ধ্যায় সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত, তবে আশ্বস্ত হতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। সোম ও মঙ্গলবার এ নিয়ে দুই দফা এবং বুধবার দুপুরে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি দু’পক্ষ।

সর্বশেষ ভারতের মাহদীপুরে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে একটি বৈঠকের পর কিছুটা স্বস্তি এসেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সীমান্তে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত জওয়ান দুই দেশই সরিয়ে নিয়েছে। তবে উভয় দেশের সীমান্তেই তৈরি করা বাংকারগুলো রয়ে গেছে। নির্মাণসামগ্রীর কিছু অংশ সরানো হয়েছে। কিছু সামগ্রী পড়ে রয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফ সতর্ক অবস্থায় নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে সীমান্তবাসীর যে জটলা ছিল, তা নেই।

জানা গেছে, বাংলাদেশের চৌকা সীমান্তের ওপারে নো ম্যান্স ল্যান্ডের ১০০ গজের মধ্যে ভারত একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছে। সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি তারা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে।

বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবির চৌকা সীমান্তের টহল দল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সে কাজে বাধা দেয়। বৈঠকের পরও মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বিএসএফ আবার মাটি খনন কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে বিজিবি গিয়ে তৎক্ষণাৎ বাধা দেয়। তবে বিএসএফ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় নির্মাণকাজ আবার শুরু করে। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করলে উত্তেজনা তৈরি হয়। ভারতীয় নাগরিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরাও সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন। সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে বিজিবি ও বিএসএফ। বুধবার সকালে আবারও সীমানা আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বাধা দেয় বিজিবি।

বিজিবি-রাজশাহীর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ সমকালকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত মঙ্গলবার ও বুধবার সীমান্তের কিছু স্থানে ১৫০ গজের ভেতরে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করছিল বিএসএফ। এ বিষয়ে বিজিবি প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের নাগরিকরা সীমান্তে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন। বিজিবি বিএসএফকে বোঝাতে চেষ্টা করেছে– এ ধরনের ঘটনা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। বুধবার এ বিষয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে দুটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে বিএসএফ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রেখেছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসূতী সীমান্তে গত মঙ্গলবার বিকেলে বিএসএফ শূন্যরেখা বরাবর লাইটপোস্ট স্থাপনের কাজ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। এতে লাইটপোস্ট স্থাপনাটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় বিএসএফ। বিষয়টি বুধবার রাতে বিজিবির রংপুর-৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। গত ১ জানুয়ারি একই উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া সীমান্তে বিএসএফ শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ও লাইটপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা চালায়। এ সময় বিজিবি সদস্যদের প্রতিবাদে পিছু হটেন বিএসএফ সদস্যরা।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বস্তাবর সীমান্তের ওপারে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালায়। বিজিবির বাধা দেওয়ায় গত বুধবার থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় সতর্ক অবস্থানে আছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিজিবি-নওগাঁর পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। আজ শুক্রবার এ বৈঠক হওয়ার কথা।

সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের ‘বন্ধুত্বের’ মধ্যেও একের পর এক হত্যার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশিরা। গত বুধবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সীমান্তে সাইদুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পেটে ও বুকে গুলি লেগেছে। সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক জাকারিয়া কাদির বলেন, ঘটনাটি ভারতীয় সীমানার ২০ গজ অভ্যন্তরে ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ যুবকের সঙ্গে আরও পাঁচ-ছয়জন ছিলেন। দৌড়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন তারা। তারা সুপারি নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন।

সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিগত সরকারের আমলে ঢাকার পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ কখনোই করা হয়নি। তখন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সচিব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে যে বৈঠকগুলো হয়, তাতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে খুব জোরালো ভূমিকা রাখার নজির দেখা যায়নি। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা এবং প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু হত্যা বন্ধ হয়নি। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি বদলেছে। বাংলাদেশও ছাড় দিতে নারাজ। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবিকে কোনো অবস্থাতেই পিঠ নয়, বুক দেখানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

আধুনিক প্রযুক্তিতে জোর বিএসএফের

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে– এ আশঙ্কায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়ার কথা জানাল বিএসএফ। বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি নীলোৎপল কুমার পাণ্ডে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সীমান্ত পাহারায় প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে বিএসএফ। এতে সাফল্যও মিলেছে। তিনি জানান, রাতে সীমান্তে যে কোনো ধরনের মানুষের গতিবিধি শনাক্ত করার জন্য সেন্সরযুক্ত নাইট ভিশন ক্যামেরা এবং প্যান-টিল্ট-জুম ক্যামেরা ব্যবহার করে পুঙ্খানুপুঙ্খ নজরদারি করা হচ্ছে। কন্ট্রোল রুম থেকেই সীমান্তের প্রতিটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সীমান্তে টহলরত সংশ্লিষ্ট জওয়ানদের নির্দেশ দেওয়া হয়। ট্রিপ-লেয়ার ফ্লেয়ার, সেন্সরসহ টপ-এন্ড গ্যাজেটগুলোর ব্যবহারে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণ এবং বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাহিনীর ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

The post শিবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিজিবির পাশে গ্রামের মানুষ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :

শিবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিজিবির পাশে গ্রামের মানুষ

Update Time : 08:07:12 am, Friday, 10 January 2025

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে তিন দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। গত বুধবার সন্ধ্যায় সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত, তবে আশ্বস্ত হতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। সোম ও মঙ্গলবার এ নিয়ে দুই দফা এবং বুধবার দুপুরে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি দু’পক্ষ।

সর্বশেষ ভারতের মাহদীপুরে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে একটি বৈঠকের পর কিছুটা স্বস্তি এসেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সীমান্তে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত জওয়ান দুই দেশই সরিয়ে নিয়েছে। তবে উভয় দেশের সীমান্তেই তৈরি করা বাংকারগুলো রয়ে গেছে। নির্মাণসামগ্রীর কিছু অংশ সরানো হয়েছে। কিছু সামগ্রী পড়ে রয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফ সতর্ক অবস্থায় নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে সীমান্তবাসীর যে জটলা ছিল, তা নেই।

জানা গেছে, বাংলাদেশের চৌকা সীমান্তের ওপারে নো ম্যান্স ল্যান্ডের ১০০ গজের মধ্যে ভারত একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছে। সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি তারা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে।

বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবির চৌকা সীমান্তের টহল দল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সে কাজে বাধা দেয়। বৈঠকের পরও মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বিএসএফ আবার মাটি খনন কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে বিজিবি গিয়ে তৎক্ষণাৎ বাধা দেয়। তবে বিএসএফ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় নির্মাণকাজ আবার শুরু করে। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করলে উত্তেজনা তৈরি হয়। ভারতীয় নাগরিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরাও সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন। সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে বিজিবি ও বিএসএফ। বুধবার সকালে আবারও সীমানা আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বাধা দেয় বিজিবি।

বিজিবি-রাজশাহীর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ সমকালকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত মঙ্গলবার ও বুধবার সীমান্তের কিছু স্থানে ১৫০ গজের ভেতরে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করছিল বিএসএফ। এ বিষয়ে বিজিবি প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের নাগরিকরা সীমান্তে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন। বিজিবি বিএসএফকে বোঝাতে চেষ্টা করেছে– এ ধরনের ঘটনা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। বুধবার এ বিষয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে দুটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে বিএসএফ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রেখেছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসূতী সীমান্তে গত মঙ্গলবার বিকেলে বিএসএফ শূন্যরেখা বরাবর লাইটপোস্ট স্থাপনের কাজ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। এতে লাইটপোস্ট স্থাপনাটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় বিএসএফ। বিষয়টি বুধবার রাতে বিজিবির রংপুর-৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। গত ১ জানুয়ারি একই উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া সীমান্তে বিএসএফ শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ও লাইটপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা চালায়। এ সময় বিজিবি সদস্যদের প্রতিবাদে পিছু হটেন বিএসএফ সদস্যরা।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বস্তাবর সীমান্তের ওপারে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালায়। বিজিবির বাধা দেওয়ায় গত বুধবার থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় সতর্ক অবস্থানে আছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিজিবি-নওগাঁর পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। আজ শুক্রবার এ বৈঠক হওয়ার কথা।

সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের ‘বন্ধুত্বের’ মধ্যেও একের পর এক হত্যার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশিরা। গত বুধবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সীমান্তে সাইদুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পেটে ও বুকে গুলি লেগেছে। সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক জাকারিয়া কাদির বলেন, ঘটনাটি ভারতীয় সীমানার ২০ গজ অভ্যন্তরে ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ যুবকের সঙ্গে আরও পাঁচ-ছয়জন ছিলেন। দৌড়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন তারা। তারা সুপারি নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন।

সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিগত সরকারের আমলে ঢাকার পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ কখনোই করা হয়নি। তখন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সচিব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে যে বৈঠকগুলো হয়, তাতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে খুব জোরালো ভূমিকা রাখার নজির দেখা যায়নি। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা এবং প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু হত্যা বন্ধ হয়নি। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি বদলেছে। বাংলাদেশও ছাড় দিতে নারাজ। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবিকে কোনো অবস্থাতেই পিঠ নয়, বুক দেখানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

আধুনিক প্রযুক্তিতে জোর বিএসএফের

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে– এ আশঙ্কায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়ার কথা জানাল বিএসএফ। বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি নীলোৎপল কুমার পাণ্ডে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সীমান্ত পাহারায় প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে বিএসএফ। এতে সাফল্যও মিলেছে। তিনি জানান, রাতে সীমান্তে যে কোনো ধরনের মানুষের গতিবিধি শনাক্ত করার জন্য সেন্সরযুক্ত নাইট ভিশন ক্যামেরা এবং প্যান-টিল্ট-জুম ক্যামেরা ব্যবহার করে পুঙ্খানুপুঙ্খ নজরদারি করা হচ্ছে। কন্ট্রোল রুম থেকেই সীমান্তের প্রতিটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সীমান্তে টহলরত সংশ্লিষ্ট জওয়ানদের নির্দেশ দেওয়া হয়। ট্রিপ-লেয়ার ফ্লেয়ার, সেন্সরসহ টপ-এন্ড গ্যাজেটগুলোর ব্যবহারে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণ এবং বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাহিনীর ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

The post শিবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিজিবির পাশে গ্রামের মানুষ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.