3:46 am, Thursday, 16 January 2025

ময়মনসিংহে এলজিইডির  নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবির ছিলেন  ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া!

ময়মনসিংহ জেলায়  উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতিতে সমালোচিত ময়মনসিংহ স্হানীয়  সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবিরের বিরুদ্ধে যোগদানের পর থেকে  একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।   বিলের চেক আটকে ঘুষ আদায় করা, প্রাপ্ত কাজের অনুকূলে অনাপত্তিপত্র প্রদানে ঘুষ নেওয়া, চুক্তিপত্র ও বিলের ফাইল আটকে ঘুষ আদায় এবং জামানতের চেক প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অতিষ্ঠ একাধিক ঠিকাদার ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নির্বাহী প্রকৌশলীর এই ঘুষ-দুর্নীতির ঘটনা ওপেন সিকরেট হলেও প্রকল্প জটিলতার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না কোনো মহল।

একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ- বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ পরিশোধের জন্য এলজিইডি  অফিস  কর্তৃক বিল প্রস্তুত করে জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে পাঠানো হয়। নিয়মানুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে চেক গ্রহণ করবে। অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির   অনেক চেক নিজের কবজায় নিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে  মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। যে ঠিকাদার তাকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে সক্ষম হয়েছে তাকে চাহিদামতো বিল পরিশোধ করেছেন তিনি। এছাড়াও বিল পরিশোধের সময় বিশেষ জামানতের অজুহাত দিয়ে প্রায় অনেক ঠিকাদারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন তিনি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির   ৫-৭ পারসেন্ট অর্থের বিনিময়ে দরপত্রের গোপন রেট পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতে সহায়তা করেন। এছাড়া টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর প্রাপ্ত ঠিকাদারকে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড দিতে এক থেকে দেড় পারসেন্ট নেন তিনি। কোনো ঠিকাদার অতিরিক্ত টাকা দিতে আপত্তি জানালে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেন তিনি।  এছাড়া বিলের ক্ষেত্রে তিন পারসেন্ট দিতে হবে বলে অলিখিত একটি আদেশ জারি করেন তিনি। ফাইলের সঙ্গে টাকা না দিলে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন। তার কাজে সহায়তা করেন সিন্ডিকেট সদস্যরা ।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  এক ঠিকাদার বলেন- জামানতের চেক প্রদান বাবদ দেড় পারসেন্ট অর্থ দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও টেন্ডার কমিটি, টেন্ডার যাচাই-বাছাইসহ দরপত্র প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির আশ্রয় নেন তিনি।

সূত্রমতে, জেলা জুড়ে নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা!
সম্প্রতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মেরামত প্রকল্পে সব কটি রাস্তায় নিম্নমানের কাজ করে ব্যাপক সমালোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির । গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে নিম্নমানের কাজ করায়,কাজ শেষ করতে না করতেই ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা, ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন,স্বজন হারা অনেক পরিবার!
এই দায় কার প্রশ্ন জনমনে! দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তাদের কারণে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকে।

অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির।

তবে বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

The post ময়মনসিংহে এলজিইডির  নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবির ছিলেন  ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া! appeared first on দৈনিক ময়মনসিংহের খবর.

Tag :

ময়মনসিংহে এলজিইডির  নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবির ছিলেন  ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া!

Update Time : 01:07:13 am, Thursday, 16 January 2025

ময়মনসিংহ জেলায়  উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতিতে সমালোচিত ময়মনসিংহ স্হানীয়  সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবিরের বিরুদ্ধে যোগদানের পর থেকে  একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।   বিলের চেক আটকে ঘুষ আদায় করা, প্রাপ্ত কাজের অনুকূলে অনাপত্তিপত্র প্রদানে ঘুষ নেওয়া, চুক্তিপত্র ও বিলের ফাইল আটকে ঘুষ আদায় এবং জামানতের চেক প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অতিষ্ঠ একাধিক ঠিকাদার ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নির্বাহী প্রকৌশলীর এই ঘুষ-দুর্নীতির ঘটনা ওপেন সিকরেট হলেও প্রকল্প জটিলতার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না কোনো মহল।

একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ- বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ পরিশোধের জন্য এলজিইডি  অফিস  কর্তৃক বিল প্রস্তুত করে জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে পাঠানো হয়। নিয়মানুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে চেক গ্রহণ করবে। অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির   অনেক চেক নিজের কবজায় নিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে  মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। যে ঠিকাদার তাকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে সক্ষম হয়েছে তাকে চাহিদামতো বিল পরিশোধ করেছেন তিনি। এছাড়াও বিল পরিশোধের সময় বিশেষ জামানতের অজুহাত দিয়ে প্রায় অনেক ঠিকাদারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন তিনি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির   ৫-৭ পারসেন্ট অর্থের বিনিময়ে দরপত্রের গোপন রেট পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতে সহায়তা করেন। এছাড়া টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর প্রাপ্ত ঠিকাদারকে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড দিতে এক থেকে দেড় পারসেন্ট নেন তিনি। কোনো ঠিকাদার অতিরিক্ত টাকা দিতে আপত্তি জানালে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেন তিনি।  এছাড়া বিলের ক্ষেত্রে তিন পারসেন্ট দিতে হবে বলে অলিখিত একটি আদেশ জারি করেন তিনি। ফাইলের সঙ্গে টাকা না দিলে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন। তার কাজে সহায়তা করেন সিন্ডিকেট সদস্যরা ।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  এক ঠিকাদার বলেন- জামানতের চেক প্রদান বাবদ দেড় পারসেন্ট অর্থ দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও টেন্ডার কমিটি, টেন্ডার যাচাই-বাছাইসহ দরপত্র প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির আশ্রয় নেন তিনি।

সূত্রমতে, জেলা জুড়ে নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা!
সম্প্রতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মেরামত প্রকল্পে সব কটি রাস্তায় নিম্নমানের কাজ করে ব্যাপক সমালোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির । গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে নিম্নমানের কাজ করায়,কাজ শেষ করতে না করতেই ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা, ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন,স্বজন হারা অনেক পরিবার!
এই দায় কার প্রশ্ন জনমনে! দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তাদের কারণে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকে।

অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবির।

তবে বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

The post ময়মনসিংহে এলজিইডির  নির্বাহী প্রকৌশলী এনায়েত কবির ছিলেন  ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া! appeared first on দৈনিক ময়মনসিংহের খবর.