4:21 am, Thursday, 23 January 2025

ইজারা নিয়েছে খেয়াঘাটের, টাকা নিচ্ছে ফেরির যাত্রীদের

বিশেষ প্রতিনিধি:

নিয়মের তোয়াক্কা না করে বরিশালের বাবুগঞ্জ এবং মুলাদী উপজেলার সংযোগস্থল মীরগঞ্জ নদীতে চালু হওয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ফেরি পার হওয়া যাত্রীদের থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে খেয়াঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এতে চরম ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হচ্ছে দুই উপজেলাসহ আশপাশের কয়েক উপজেলার মানুষ।

জানা গেছে, খেয়া পারাপারের জন্য সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা করে আদায়ের নিয়ম থাকলেও তারা ফেরিতে পারাপার করা যাত্রীদের কাছ থেকেও জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে। সময়কাল ভেদে যাত্রী প্রতি ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে খেয়াঘাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে দেখা যায়, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলা ছাড়াও হিজলা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মানুষ জীবন-জীবিকার তাগিদে এই নদী পার হন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খেয়াঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ মুলাদী প্রান্তে টেবিল-চেয়ার বসিয়ে ফেরি ব্যবহার করে পারাপার হওয়া যানবাহন নিয়ে আসা যাত্রী ও সাধারণ যাত্রীদের থেকে টাকা আদায় করছে। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে।

ফেরির যাত্রী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ফেরিতে আমার কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। কিন্তু ঘাটে আমাকে ১০ টাকা দিতে হয়েছে। ইজারাদারের লোকজন ফেরিঘাটের পথে চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ দিয়ে আটকে রেখেছে। টাকা না দিয়ে কেউ যেতে পারছে না। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।

 তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছে, এর আগে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা আদায় করেছে তারা।

মুলাদী উপজেলার আরেক যাত্রী দেলোয়ার হোসেন বলেন, একটা ব্যাটারি নিয়ে ফেরি পার হয়েছি। কিন্তু ফেরি কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা না চাইলেও খেয়াঘাট ইজারাদাররা ঘাটে থামিয়ে ৫০ টাকা আদায় করেছে। এভাবে তারা হাতে কোনো বস্তা থাকলেও তার জন্য টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে নাজেহাল হতে হয়।

ওষুধ কোম্পানির এক প্রতিনিধি বলেন, অফিসের কাজে প্রায় মুলাদী থেকে হিজলা যেতে হয়। কিন্তু এ ঘাটে মোটরসাইকেল নিয়ে ট্রলারে পার হই, আর ফেরিতে পারাপার হই, খেয়াঘাট ইজারাদারকে ১২০ টাকা করে দিতে হয়। এজন্য কোনো স্লিপও দেয় না তারা। যে কারণে অফিসে বিলের ভাউচারও দিতে পারি না।

এ বিষয়ে খেয়াঘাটের ইজারাদার আব্বাস বলেন, আমরা বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ঘাট ইজারা নিয়েছি। আমাদের সাথে ফেরি বিভাগের কোনো সম্পর্ক নেই। এই ঘাটে যাত্রীদের পারাপারের জন্য ট্রলার রয়েছে, যাত্রীরা ট্রলারে পারাপার হোক বা ফেরিতে পারাপার হোক ঘাটের টোল দিতে হবে।

অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে অনেক রাত হয়ে গেলে বকশিশ হিসেবে ট্রলার চালকরা ৫-১০ টাকা বেশি নিতে পারে।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. সোহরাব হোসেন (অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, সার্বিক) জাগো নিউজকে বলেন, খেয়াঘাট ইজারাদার দেওয়া হয়েছে, তার মানে যারা খেয়ায় পারাপার হবে তারা টাকা দেবে। কিন্তু ফেরির যাত্রীদের কাছ থেকে কেন টাকা তুলবে। ফেরির যাত্রীদের কাছে থেকে টাকা আদায়ের কোনো নিয়ম নেই। যদি তারা এরকম করে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

The post ইজারা নিয়েছে খেয়াঘাটের, টাকা নিচ্ছে ফেরির যাত্রীদের appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

ইজারা নিয়েছে খেয়াঘাটের, টাকা নিচ্ছে ফেরির যাত্রীদের

Update Time : 02:06:33 pm, Thursday, 26 September 2024

বিশেষ প্রতিনিধি:

নিয়মের তোয়াক্কা না করে বরিশালের বাবুগঞ্জ এবং মুলাদী উপজেলার সংযোগস্থল মীরগঞ্জ নদীতে চালু হওয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ফেরি পার হওয়া যাত্রীদের থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে খেয়াঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এতে চরম ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হচ্ছে দুই উপজেলাসহ আশপাশের কয়েক উপজেলার মানুষ।

জানা গেছে, খেয়া পারাপারের জন্য সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা করে আদায়ের নিয়ম থাকলেও তারা ফেরিতে পারাপার করা যাত্রীদের কাছ থেকেও জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে। সময়কাল ভেদে যাত্রী প্রতি ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে খেয়াঘাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে দেখা যায়, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলা ছাড়াও হিজলা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মানুষ জীবন-জীবিকার তাগিদে এই নদী পার হন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খেয়াঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ মুলাদী প্রান্তে টেবিল-চেয়ার বসিয়ে ফেরি ব্যবহার করে পারাপার হওয়া যানবাহন নিয়ে আসা যাত্রী ও সাধারণ যাত্রীদের থেকে টাকা আদায় করছে। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে।

ফেরির যাত্রী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ফেরিতে আমার কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। কিন্তু ঘাটে আমাকে ১০ টাকা দিতে হয়েছে। ইজারাদারের লোকজন ফেরিঘাটের পথে চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ দিয়ে আটকে রেখেছে। টাকা না দিয়ে কেউ যেতে পারছে না। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।

 তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছে, এর আগে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা আদায় করেছে তারা।

মুলাদী উপজেলার আরেক যাত্রী দেলোয়ার হোসেন বলেন, একটা ব্যাটারি নিয়ে ফেরি পার হয়েছি। কিন্তু ফেরি কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা না চাইলেও খেয়াঘাট ইজারাদাররা ঘাটে থামিয়ে ৫০ টাকা আদায় করেছে। এভাবে তারা হাতে কোনো বস্তা থাকলেও তার জন্য টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে নাজেহাল হতে হয়।

ওষুধ কোম্পানির এক প্রতিনিধি বলেন, অফিসের কাজে প্রায় মুলাদী থেকে হিজলা যেতে হয়। কিন্তু এ ঘাটে মোটরসাইকেল নিয়ে ট্রলারে পার হই, আর ফেরিতে পারাপার হই, খেয়াঘাট ইজারাদারকে ১২০ টাকা করে দিতে হয়। এজন্য কোনো স্লিপও দেয় না তারা। যে কারণে অফিসে বিলের ভাউচারও দিতে পারি না।

এ বিষয়ে খেয়াঘাটের ইজারাদার আব্বাস বলেন, আমরা বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ঘাট ইজারা নিয়েছি। আমাদের সাথে ফেরি বিভাগের কোনো সম্পর্ক নেই। এই ঘাটে যাত্রীদের পারাপারের জন্য ট্রলার রয়েছে, যাত্রীরা ট্রলারে পারাপার হোক বা ফেরিতে পারাপার হোক ঘাটের টোল দিতে হবে।

অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে অনেক রাত হয়ে গেলে বকশিশ হিসেবে ট্রলার চালকরা ৫-১০ টাকা বেশি নিতে পারে।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. সোহরাব হোসেন (অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, সার্বিক) জাগো নিউজকে বলেন, খেয়াঘাট ইজারাদার দেওয়া হয়েছে, তার মানে যারা খেয়ায় পারাপার হবে তারা টাকা দেবে। কিন্তু ফেরির যাত্রীদের কাছ থেকে কেন টাকা তুলবে। ফেরির যাত্রীদের কাছে থেকে টাকা আদায়ের কোনো নিয়ম নেই। যদি তারা এরকম করে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

The post ইজারা নিয়েছে খেয়াঘাটের, টাকা নিচ্ছে ফেরির যাত্রীদের appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.