2:57 am, Tuesday, 21 January 2025

বেড়েছে আলুচাষ, বাম্পার ফলনের আশা

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই কম

বগুড়া প্রতিনিধি: গত কয়েক বছর ধরে আলুর বাজার চড়া। সেজন্য বগুড়ার কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন আলু চাষে।

একদিকে এবার গত বছরের চেয়ে অধিক জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে, অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় রোগবালাইও তেমন নেই। ফলে অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

এরই মধ্যে আগাম চাষ করা আলু বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে, যদিও দাম গত বছরের চেয়ে কম।

তবে দাম কম হলেও কৃষকের লোকসান হচ্ছে না। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ৬০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।

গত বছর এই জেলায় আলু চাষ করা হয়েছিল ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। গত বছর বগুড়ায় আলু উৎপাদন হয়েছিল ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন। জেলায় চাহিদা রয়েছে বীজ আলুসহ দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন।

মাঠ পর্যায়ের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম ছিল চড়া। এ কারণে অধিক লাভের আশায় এ বছর অধিকাংশ কৃষক ফসল পরিবর্তন করে আলু চাষ করেছেন। এবার আলু বীজের দাম বেশি হলেও ঘন কুশায়া না থাকা এবং শীত কম থাকায় আলু ক্ষেতে রোগ বালাই কম। বগুড়ার মহাস্থান পাইকারি হাটে আগাম জাতের লাল পাকড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ। সাদা ডায়মন্ড জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ।

শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। আগাম জাতের লাল পাকড়ি আলু উৎপাদন হচ্ছে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ। সাদা ডায়মন্ড আলু চাষে খরচ বিঘা প্রতি ২৫ হাজার টাকা। উৎপাদন হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ মণ।

তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম চড়া থাকায় এ বছর চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আমিনুল বলেন, বাজারে দাম কম হলেও আলু চাষে কৃষকের লোকসান হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রোগ বালাই না থাকায় এবার গত বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশি হবে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এখন বাজারে আগাম জাতের আলু পাওয়া যাচ্ছে। আগাম চাষ করা আলুর উৎপাদন কম হয়। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মৌসুমী আলু জমি থেকে উঠতে শুরু করবে। তখন আলুর উৎপাদন আরও বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাজারে দাম আরও কমতে শুরু করবে।

বগুড়া সদরের ঘোলাগাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, এবার আলুর বাম্পার ফলন আশা করছেন তারা। তিনি বলেন, আগাম আলু চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। যারা দেরিতে আলু চাষ করেছেন তারা দাম কম পেলেও ফলন বেশি পাবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বগুড়ায় আলু চাষ বেড়েছে। আগামী এক মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলু ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হবে না। কৃষক ভালো ফলন পাবেন।

 

The post বেড়েছে আলুচাষ, বাম্পার ফলনের আশা appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :

বেড়েছে আলুচাষ, বাম্পার ফলনের আশা

Update Time : 11:09:32 pm, Monday, 20 January 2025

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই কম

বগুড়া প্রতিনিধি: গত কয়েক বছর ধরে আলুর বাজার চড়া। সেজন্য বগুড়ার কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন আলু চাষে।

একদিকে এবার গত বছরের চেয়ে অধিক জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে, অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় রোগবালাইও তেমন নেই। ফলে অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

এরই মধ্যে আগাম চাষ করা আলু বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে, যদিও দাম গত বছরের চেয়ে কম।

তবে দাম কম হলেও কৃষকের লোকসান হচ্ছে না। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ৬০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।

গত বছর এই জেলায় আলু চাষ করা হয়েছিল ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। গত বছর বগুড়ায় আলু উৎপাদন হয়েছিল ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন। জেলায় চাহিদা রয়েছে বীজ আলুসহ দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন।

মাঠ পর্যায়ের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম ছিল চড়া। এ কারণে অধিক লাভের আশায় এ বছর অধিকাংশ কৃষক ফসল পরিবর্তন করে আলু চাষ করেছেন। এবার আলু বীজের দাম বেশি হলেও ঘন কুশায়া না থাকা এবং শীত কম থাকায় আলু ক্ষেতে রোগ বালাই কম। বগুড়ার মহাস্থান পাইকারি হাটে আগাম জাতের লাল পাকড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ। সাদা ডায়মন্ড জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ।

শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। আগাম জাতের লাল পাকড়ি আলু উৎপাদন হচ্ছে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ। সাদা ডায়মন্ড আলু চাষে খরচ বিঘা প্রতি ২৫ হাজার টাকা। উৎপাদন হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ মণ।

তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম চড়া থাকায় এ বছর চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আমিনুল বলেন, বাজারে দাম কম হলেও আলু চাষে কৃষকের লোকসান হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রোগ বালাই না থাকায় এবার গত বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশি হবে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এখন বাজারে আগাম জাতের আলু পাওয়া যাচ্ছে। আগাম চাষ করা আলুর উৎপাদন কম হয়। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মৌসুমী আলু জমি থেকে উঠতে শুরু করবে। তখন আলুর উৎপাদন আরও বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাজারে দাম আরও কমতে শুরু করবে।

বগুড়া সদরের ঘোলাগাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, এবার আলুর বাম্পার ফলন আশা করছেন তারা। তিনি বলেন, আগাম আলু চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। যারা দেরিতে আলু চাষ করেছেন তারা দাম কম পেলেও ফলন বেশি পাবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বগুড়ায় আলু চাষ বেড়েছে। আগামী এক মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলু ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হবে না। কৃষক ভালো ফলন পাবেন।

 

The post বেড়েছে আলুচাষ, বাম্পার ফলনের আশা appeared first on সোনালী সংবাদ.