তেরখাদার বাসিন্দা চৌধুরী আবুল খায়ের সোমবার (২০ জানুয়ারি) কাটেংগা বাজারে বসে ছিলেন। সে সময় একটি কুকুর অতর্কিত তাকে কামড় দেয়। এতে তার পায়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর দু’দিন আগে নাহার মেডিকেলের সত্ত্বধিকারী ওসমান গনি (রিপন) কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত কয়েক মাসে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন নারী-শিশু সহ অর্ধশতাধিক মানুষ।
সম্প্রতি তেরখাদা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ কুকুরের আক্রমনের শিকার হচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দল বেঁধে কুকুরের অবাধ বিচরণের চিত্র। কেউকে একা পেলে এরা হয়ে উঠছে হিংস্র। বিশেষ করে রাতের বেলায় কুকুরের অবাধ বিচরণের ফলে পথচারিরা ভূগছেন আতঙ্কে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তেরখাদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি ভাবে কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়। পাশাপাশি আক্রান্ত অনেকে বেসরকারি ভাবে টিকা গ্রহণ করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ২ মাসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ৬১ জন ব্যক্তি টিকা গ্রহন করেছেন।
উপজেলার কাটেংগা এলাকার বাসীন্দা ফরিদ আহমেদ বলেন, পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পায়ে কুকুরে কামড় দেয়। এজন্য দুই ধরনের টিকা দিতে হয়েছে। কাটেংগা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী কামাল মোল্যা বলেন, মাংসের দোকানের সামনে সারাক্ষণ ১০-১২টি কুকুর আনাগোনা করে। যেকোনো সময় কামড়াতে পারে, এ আতঙ্কের মধ্যে আমাদের মাংস কেনাবেচা করতে হচ্ছে।
উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকার সাগরীকা জানান, তাঁর ছেলেকে নিয়ে প্রতিদিন চাইল্ড হ্যাভেন প্রি ক্যাডেট স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় সারা দিনই ৬ থেকে ৭টি বেওয়ারিশ কুকুর ছোটাছুটি করে। কুকুরের ভয়ে তিনি ছেলেকে নিয়ে ওই রাস্তা এড়িয়ে চলেন। কুকুরের উৎপাতে ছেলেও স্কুলে যেতে ভয় পায়।
উপজেলার কাটেংগা বাজারের ঔষুধ বিক্রেতা মোশারেফ হোসেন বলেন, গত কয়েকদিনে তার দোকানে ২-৩ জন কুকুরে কামড়ানো রোগী ইনজেকশন নিতে আসে। আমি তাদেরকে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত (আরএমও) ডা. অনিক কুন্ডু বলেন, প্রায়ই কুকুরে কামড়ানো আহত রোগী ভ্যাকসিনের জন্য হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে। তিনি বলেন, কুকুরের লালায় এক ধরনের জীবাণু থাকে বলে আহত ব্যক্তির জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটি একটি মরন ব্যাধি। কুকুরে কামড়ানো ব্যক্তিকে এ রোগ প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রিয়াংকর কুন্ডু জানান, স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কার্যক্রম চালায়। গত বছর এ উপজেলায় স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মীরা যৌথভাবে কুকুরকে টিকাদানের কাজ পরিচালনা হয়েছে। তবে এবার এখনো নির্দেশনা পায়নি।
খুলনা গেজেট/ টিএ
The post কুকুর আতঙ্কে তেরখাদা: দুই মাসে কামড়ের শিকার ৬১ জন appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.
ঠিকানা : গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশ || তথ্য, খবর ও বিজ্ঞাপন : +8809611719385 || ইমেইল : songbadpatra24@gmail.com
Visit : songbadpatra.com
All rights reserved © সংবাদপত্র-2024