স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে পদ্মার চরে বিষটোপ ও কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি নিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও জনগণকে সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফোরামের আয়োজনে শুক্রবার সকালে পদ্মার তীরবর্তী ‘টি-বাঁধ’ ও পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর এলাকায় এসব কর্মসূচী পালন করা হয়।

এতে রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের স্বেচ্ছাসেবীরা অংশ নেন। এর আগে বাঁধের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে পাখি শিকার রোধে সচেতনতামূলক ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়।

প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ এর পরিচালনায় কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহাদ ইকবাল, কোষাধ্যক্ষ রমজান আলী সরকার, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলী এবং সদস্য এএইচএম আসাদুজ্জামান, জয়ন্ত কুমার সরকার ও ইসতিয়াক শাহরিয়ারসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীরা। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. বিকে দাম।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব তুলে ধরে তা সংরক্ষণে সকলের করণীয় বিষয়ে বক্তারা বলেন, পাখি পরিবেশের খাদ্য শৃঙ্খল ও খাদ্যজাল রক্ষা তথা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ইঁদুর ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তার পাশাপাশি পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ সূচক বা বায়োলজিক্যাল ইন্ডিকেটর হিসেবে কাজ করে। ফুলের পরাগায়নে পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। পাখি উদ্ভিদের বীজ বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, কিছু গাছের (বট, পাকুড়, ডুমুর ইত্যাদি) বীজ সহজেই পাখির পরিপাকতন্ত্রের সহায়তায় জন্মায়।

পাখিরা প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করে। এরা নোংরা-আবর্জনা খেয়ে পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করে। এছাড়া পাখিদের নান্দনিক সৌন্দর্য অপরিসীম, এদের দর্শনে যেকোন দর্শনার্থীর মন ভাল হয়ে যায়। এসব থেকে বোঝা যায়, পাখি প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। এদের সংরক্ষণ করা আপনার-আমার সকলের নৈতিক দায়িত্ব। সেইসাথে সামাজিকভাবে পাখি শিকারীদের প্রতিহত করার আহবান জানানো হয় কর্মসূচী থেকে।

উল্লেখ্য, শীতের আগমনে রাজশাহীর পদ্মার চরে আসে অনেক অতিথি পাখি। সেইসাথে রয়েছে অনেক দেশীয় পাখি। একশ্রেণীর অসাধু মানুষ বিষটোপ ও কারেন্ট জাল দিয়ে শিকার করছে এসব পাখি। পরবর্তীতে তা হাঁসের মাংস বলে রাজশাহীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সরবরাহ করা হয়। এতে একদিকে যেমন জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, অপরদিকে এসব মৃত পাখির বিষাক্ত মাংস খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বার্ড-ফ্লু সহ অন্যান্য বিভিন্ন জটিল রোগে। প্রশাসন দোষিদের সামান্য কিছু অর্থদন্ড ও কারাদন্ড প্রদান করলেও থামছে না এসব কর্মকান্ড। এর প্রতিবাদে এবং জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টির লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয় এসব কর্মসূচীর।

The post রাজশাহীতে পাখির প্রাণ রক্ষায় প্রচারাভিযান appeared first on সোনালী সংবাদ.

Leave a Reply