
অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ঘুষের বিনিময়ে অদক্ষ ব্যক্তিবর্গকে পাইলট ও অন্যান্য লাইসেন্স প্রদানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে আজ একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য ও প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এফোর এরো লি. কর্তৃক তৈরিকৃত সিবিসি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ২০১৭ সাল থেকে পাইলট লাইসেন্সিং পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তবে ওই সফটওয়্যার ব্যবহার ও পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে বেবিচকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কতিপয় কনসালটেন্টকে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হলেও সফটওয়্যারটির সম্পূর্ণ ওয়ারশিপ এন্ড কন্ট্রোল রয়েছে এর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এ-ফোর এরো লি. এর কাছে।
ফলে ওই সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে পাইলট লাইসেন্সিং প্রদান করার সুযোগ রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
এছাড়া উক্ত সফটওয়্যারটি প্রচলিত বিধি বা আইন অনুযায়ী তৈরি বা ব্যবহৃত হয়ে আসছে সে সংক্রান্ত কোন রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি। এমনকি পিপিআর ২০০৮ এর কোন বিধিবিধান প্রতিপালনপূর্বক উক্ত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বা ক্রয় সংক্রান্ত কোনরূপ কোন চুক্তি সম্পাদন হয়নি মর্মে টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়।
এছাড়াও অভিযানকালে একজন ফার্স্ট অফিসার কর্তৃক জাল সনদ ব্যবহার করে পাইলট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক টিম। অভিযানকালে প্রাপ্ত অনিয়ম, অসংগতি সংক্রান্ত বিস্তারিত এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে অভিযানকারী টিম।
এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সরকারি খাদ্য গুদামে পুরাতন বস্তায় ধান-চাল সংগ্রহপূর্বক নতুন বস্তা ক্রয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালনো হয়।
অভিযানকালে টিম চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদামে সংরক্ষিত বস্তা যাচাই করে সরবরাহকারীর নিকট হতে পুরাতন বস্তা গ্রহণ করে নতুন বস্তা হিসেবে দেখানো হয়েছে, এমন প্রাথমিক প্রমাণ পায়। এছাড়াও টিম বস্তার ওজন এবং আর্দ্রতা পরিমাপ করে গ্রহণযোগ্য মাত্রার সাথে তারতম্য পায়।
প্রাথমিক হিসাবে প্রায় ২০ হাজার বস্তা ক্রয়ে এরূপ অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়। বিস্তারিত যাচাইয়ের নিমিত্ত টিম চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট হতে নতুন বস্তা ক্রয় সম্পর্কিত নীতিমালাসহ বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
এদিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ আত্মসাতসহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, গোপালগঞ্জ থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়। টিম গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট হতে মধ্যপাড়া গাজিবাড়ি জামে মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ, সোলার প্যানেল ইত্যাদির রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
অভিযানকালে দেখা যায়, তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজ বাড়ীতে সরকারি ৪টি স্ট্রিট লাইট রয়েছে যার মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা। এছাড়া পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ অফিস হতে উপজেলা পরিষদের তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার ব্যক্তিগত বাড়িতে ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫১৯ টাকা ব্যয়ে রিভার্স অসমোসিস (অরও) প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হয়েছে বলে প্রমাণ পায় দুদক টিম, যার দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে মর্মে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
সরকারী টাকায় ব্যক্তিগত বাড়ীতে আরও প্ল্যান্ট স্থাপন ও স্ট্রিট লাইট স্থাপনের ঘটনার সাথে উপজেলা পরিষদের উপজেলা চেয়ারম্যান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, গোপালগঞ্জের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও পিআইও দপ্তরের প্রকৌশলীগণ জড়িত কি না তা যাচাই ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণপূর্বক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন প্রেরণ করবে অভিযানকারী টিম।
সূত্র: বাসস
The post পাইলট ও অন্যান্য লাইসেন্স প্রদানের অভিযোগে বেবিচকে দুদকের অভিযান appeared first on সোনালী সংবাদ.