ক্যাম্পাস প্রতিনিধি:
চতুর্থ বর্ষের মিডটার্ম পরীক্ষায় দূষণীয় কাগজ (নকল) ধরা মাত্রই গিলে খেয়ে ফেলেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে তার সংশ্লিষ্ট থাকা কোর্সটি বাতিল করে পরবর্তী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কথা জানানো হয়।
বুধবার (১৯ মার্চ) পরীক্ষা সংক্রান্ত শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী।
এছাড়া বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে সুপারিশ করে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। তবে অনেকের থেকে দূষণীয় কাগজ ধরা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ অস্বীকার করলে তাদের কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি বলেও জানা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৪৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাগজ গিলে ফেলা ওই শিক্ষার্থীর অবহিতকরণ নোটিশে বলা হয়, পরিদর্শকের (শিক্ষক) বক্তব্য অনুযায়ী পরীক্ষার্থীর নিকট দূষণীয় কাগজ ব্যবহারের দায় স্বীকার করে নেন। শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর নিকট দূষণীয় কাগজ (নকল) চাওয়া মাত্রই তিনি ভয়ে গিলে ফেলেন, যা পরবর্তীতে প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলকরণ করা সম্ভব হয়নি। তদনুযায়ী ৫(বি) ২(বি) ধারায় বর্ণিত শাস্তি মোতাবেক তার সংশ্লিষ্ট কোর্সটি বাতিল এবং পরীক্ষা বিধি অনুযায়ী পরবর্তী সব কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে মর্মে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সুপারিশ করেন।
এদিকে নকল ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ দিলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শাস্তি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। কেউ কেউ দূষিত কাগজ রাখা ও বেঞ্চে লিখেছে বলে পরিদর্শক হাতেনাতে ধরা পড়লেও ছাড় পেয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। আবার কারণ দর্শানোর নোটিশে অসদুপায় অবলম্বন করেনি উল্লেখ করলেও শাস্তি পেয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মো. আলিমউদ্দিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, আমি কোনোভাবেই অসাধু উপায় অবলম্বন করিনি। আমার বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং আমাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে হাইবেঞ্চের লেখার সঙ্গে আমার খাতায় লেখার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে এবং বলা হয়েছে আমি লিখিত জবাবে স্বীকার করেছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আমি লিখিত জবাবে স্বীকার করিনি। আমার বাবা নেই। অন্যায়ভাবে শাস্তি দিলে আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষার্থী জানান, অনেকের দূষণীয় কাগজ হাতেনাতে ধরলেও শাস্তি পায়নি। এদিকে অভিযোগ স্বীকার না করেও শাস্তি পায়। শিক্ষকদের অন্তর্কোন্দলে এমনটা হতে পারে। কারণ, শিক্ষার্থীরা তো একেকজন শিক্ষকের আস্থাভাজন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, দূষণীয় কাগজ বা নকল ধরা পড়লে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি দোষীদের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক শাস্তির জন্য সুপারিশ করে থাকে। পরে সেটি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপন করলে তারাও সেটি সুপারিশ করে থাকে। পরে সিন্ডিকেটে পাশ হয়।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, যেসব শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ৪৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ করলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের গতকাল বুধবার অবহিত করা হয়।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুমি রানী সাহা জানান, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার সময়ে এক শিক্ষার্থীর থেকে দূষণীয় কাগজ বারবার চাওয়া হয়। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা সেই কাগজ গিলে ফেলে। অন্যান্য শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
The post মিডটার্ম পরীক্ষায় নকল ধরা মাত্রই কাগজ গিলে ফেললেন ববি শিক্ষার্থী appeared first on Amader Barisal - First online Newspaper of Greater Barisal - Stay with Barisal 24x7.
ঠিকানা : গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশ || তথ্য, খবর ও বিজ্ঞাপন : +8809611719385 || ইমেইল : songbadpatra24@gmail.com
Visit : songbadpatra.com
All rights reserved © সংবাদপত্র-2024