ইব্রাহীম মিঞা,বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুরে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, বারান্দায় পরে থাকা চাল কুরে নিচ্ছেন পৌরশহরের ২ নং ওয়ার্ডের অসহায় গরীব খদেজা(৬৮)। সে বর্তমানে উপজেলার মৌ পুকুর গুচ্ছ গ্রামে অকর্মহীন স্বামীকে নিয়ে ১১৯ নং ঘরে বাস করছেন। এর আগে পৌরশহরের নতুন সার গোডাউন এলাকায় সে বসবাস করতো। সে জানায় ৫ টাকা দিয়ে ভোটার আইডি ফটোকপি করে ৪০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে এই ভিজিএফ এর চাল নিতে এসেছেন। দীর্ঘ লাইন ধরে থাকার পর তাঁকে দেওয়া হয়েছে ৪ কেজি চাল।
এই চাল পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সে। পরবর্তীতে পাশের মসজিদের গেটে বসে সাহায্য চান মুসল্লিদের কাছে। সাহায্য নিয়ে আবার আসেন ভিজিএফ এর চাল বিতরণ কেন্দ্রে বারান্দায় পরে থাকা চাল কুরে নিতে।এই পরে থাকা চাল কুরে নেওয়ার অনুমতি পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে ঝাড়ু চেয়ে নিয়ে তা সংগ্রহ করেন।
শনিবার (২২ মার্চ) সকাল ১০ ঘটিকায় বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় পৌরশহরের ৪ হাজার ৬ শত ২১ জনকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দূঃস্থ, অসহায় ও গরীব পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়।
এই কর্মসূচীর শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিরামপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর পৌরসভার পৌর সচিব (ভারপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন,ট্যাগ অফিসার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
বিনামূল্যে ভিজিএফ এর চাল সংগ্রহ করতে আসেন নির্ধারিত পরিবারের চেয়ে অনেক বেশি লোকজন। একারণে কার্ড (স্লীপধারী)অনেককেই ৮ কেজি করে চাল দেওয়া হয় এবং কার্ড (স্লীপ) যাঁদের ছিল না তাদের অনেককেই ৪ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।
এবিষয়ে ট্যাগ অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন সকলেই যেন পায় এজন্য এভাবেই দেওয়া হচ্ছে।
ভিজিএফ চাল বিতরণের সময় পৌরসভার বেতনভুক্ত কর্মচারীকে ৩০ কেজি চাল দেওয়ায় গরীব অসহায় দুস্থ দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এসময় উপস্থিত দূস্থঃ অসহায় গরীবদের মাঝে চাল বিতরণ শেষে বেঁচে যায় প্রায় ৬৫ বস্তা চাল। পরবর্তীতে এই চাল সমূহ উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় দেওয়া হয়। এরমধ্যে পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের একটি এতিমখানা মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১২ বস্তা চাল দেওয়া হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে পরবর্তীতে ঐ মাদ্রাসা থেকে ৬ বস্তা চাল ফেরত নিয়ে এসে বিরামপুর উপজেলার অন্যান্য ৩ টি মাদ্রাসায় ২ বস্তা করে দেওয়া হয় বলে জানান দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়াও পৌরশহরের একটি মাদ্রাসার নামে দেওয়া ভিজিএফ এর চাল হতে এক বস্তা চাল সাবেক মোয়াজ্জেমকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পৌরসভার গরীব অসহায় দুস্থদের মাঝে ভিজিএফ এর চাল বিতরণের সময় অন্য ইউনিয়ন থেকে আসা কয়েকজনকে চাল নিতে দেখা যায়। এতে করে পৌরসভার ভিজিএফ এর চাল নিতে আসা অনেকেই চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেন।
এবিষয়ে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন,আমি অসুস্থ থাকায় সবদিকে সঠিকভাবে নজর দিতে না পারায়
ছোট খাটো ভুলত্রুটি হতে পারে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার পরিবর্তে ৮ কেজি করে দেওয়া হয় যেন উপস্থিত সকলে পায়। চাল বিতরণ শেষে অতিরিক্ত প্রায় ৬৫ বস্তা চাল বেঁচে যায়। এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারকে উক্ত বেঁচে যাওয়া চাল গুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন। ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি বাহিরে আছি বিষয়টি পরে দেখবো।