10:24 pm, Wednesday, 26 March 2025
Aniversary Banner Desktop

হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিতে হলে আসতে হবে পুঁজিবাজারে

টাস্কফোর্সের সুপারিশ:

অনলাইন ডেস্ক:

কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনে প্রাথমিক ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) এই সুপারিশ বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয়। অবশ্য এটি খসড়া সুপারিশ। আগামী ২৭ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে এই খসড়া সুপারিশের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে বিএসইসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অপরদিকে পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি আইপিও’র জন্য আবেদন করলে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করবে স্টক এক্সচেঞ্জ। স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দিলে সেসব কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার বিক্রি করতে পারবে। স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো কোম্পানির আইপিও বাতিল করলে বিএসইসি ওই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিতে পারবে না।

এ বিষয়ে টাস্কফোর্স সুপারিশ করেছে- শেয়ারবাজারে আইপিওর মাধ্যমে কোন কোম্পানি বাজারে আসবে এবং কোন কোম্পানি অনুমোদন পাবে না, এর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেবে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো। স্টক এক্সচেঞ্জ যদি কোনো কোম্পানির আইপিও প্রস্তাব বাতিল করে দেয় তাহলে বিএসইসি সেই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিতে পারবে না। আইপিও সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে এ বিধান যুক্ত করতে হবে।

স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে আইপিও অনুমোদনের প্রাথমিক ক্ষমতা দেওয়ার পাশাপাশি ফিক্সড প্রাইজ বা স্থির মূল্য পদ্ধতিতে আইপিও’র আবেদন করতে গেলে কোম্পানির পরিশোধ মূলধন কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা এবং বুক বিল্ডিংয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা থাকার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।

টাস্কফোর্সের সুপারিশে বলা হয়েছে, স্থির মূল্য পদ্ধতিতে ৩০ কোটি টাকার কম মূলধনের কোনো কোম্পানিকে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত করা যাবে না এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৫০ কোটি টাকার কম মূলধনের কোনো কোম্পানিকে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত না যাবে না।

একই সঙ্গে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বাকি ৫০ শতাংশ শেয়ার সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এবং বাকি ৪৫ শতাংশ স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে পুঁজিবাজারের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ৭ অক্টোবর এই টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি।

টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি
শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করার এই টাস্কফোর্স যে কার্যক্রম পরিচালনা করবে তার মধ্যে রয়েছে-

>> বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের আকার তথা ‘জিডিপি ও বাজার মূলধন’-এর অনুপাত কম হওয়ার প্রধান কারণগুলো চিহ্নিত করে উত্তরণের জন্য সরকারের আর্থিক খাতের নীতি প্রণয়নের প্রস্তাবনা।

>> দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজার থেকে অর্থায়নের জন্য সরকারের আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন করা।

>> আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শেয়ারবাজারের সুশাসন উন্নীতকরণের লক্ষ্যে শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করা ও সমাধানের সুপারিশমালা প্রণয়ন।

>> বিএসইসির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ, অভ্যন্তরীণ সুশাসন, অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে প্রযুক্তি ও অটোমেশনের প্রয়োগ, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশাসনিক কাঠামোর সুপারিশ, মানব সম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কমিশনের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, সেমিনার, কর্মশালায় অংশগ্রহণ-সহ অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।

>> ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, সিসিবিএলের তদারকি কার্যক্রম বিশ্বমানে উন্নীতকরণসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> প্রাইভেট প্লেসমেন্ট/অফারের মাধ্যমে ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইস্যু অফ ক্যাপিটাল) রুলস, ২০০১ যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, করপোরেট ডিজক্লোজার, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের সঠিকতা নিশ্চিতকরণসহ করপোরেট গভর্ন্যান্স, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং বাজারের গভীরতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন।

>> ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যুর আবেদনের ক্ষেত্রে দাখিল করা তথ্য-উপাত্ত, দলিল-দস্তাবেজ, সম্পদ পুনঃমূল্যায়ন প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে প্রস্তুতকারী পক্ষসমূহ যেমন: ইস্যুয়ার কোম্পানি, ইস্যু ম্যানেজার ও আন্ডার রাইটার (মার্চেন্ট ব্যাংকার), ভেল্যুয়ার এবং অডিটরসহ অন্যান্য পক্ষগুলোর দায়দায়িত্ব ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এতদসংশ্লিষ্ট বিধিমালা যেমন- সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফলিও ম্যানেজার) বিধিমালা, ১৯৯৬, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক- ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১-সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত বিধি-বিধানের যেমন- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (রাইট ইস্যু) রুলস, ২০০৬, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ডেট সিকিউরিটিজ), রুলস ২০২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইনভেস্টমেন্ট সুকুক), বুলস ২০১৯, বিএসইসি (সম্পদ ভিত্তিক সিকিউরিটি ইস্যু) বিধিমালা, ২০০৪-সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ ও সমন্বয়ের গাইডলাইন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বাজারে কারসাজি, সুবিধাভোগী ব্যবসায় লেনদেন ও অন্যান্য অনিয়মের বিচার ও জরিমানায় সমতা আনয়নের জন্য বিদ্যমান আইনের শাস্তির ধারার অধীনে একটি সুনির্দিষ্ট পেনাল কোড বা শান্তির বিধিমালা প্রণয়ন করা।

>> মার্কিন রুলস, ১৯৯৯ যুগোপযোগীকরণসহ, বিদ্যমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও বিজনেস ইন্টেলিজেন্স মডিউল সমৃদ্ধ বিশ্বমানের অনলাইন ও অফলাইন সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বা বাজার তদারকি ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিরূপণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বর্তমান বাজার কাঠামোর মূল্যায়ন, বাজারের গভীরতা ও পণ্য বৈচিত্র্যকে বিবেচনা করে দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কীভাবে আরও আকৃষ্ট করা যায় সেই কৌশল প্রণয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ।

>> শেয়ারবাজারের কার্যক্রমে অটোমেশন বৃদ্ধির মাধ্যমে শেয়ারবাজারের সুশাসন এবং বিনিযোগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নয়ন এবং শেয়ারবাজার উপযোগী ফিনটেক টেকনোলজি প্রচলন এবং শেয়ারবাজারের প্রযুক্তিগত সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন।

>> নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর (বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইডিআরএ, এমআরএ, এনবিআর, আরজেএসসি ইত্যাদি) সাথে সমন্বয় সাধনের উপায় নির্ধারণে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি বা নির্দেশিকা প্রণয়ন।

>> তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি বা তালিকাভুক্ত কোম্পানির মার্জার, আমালগামেশন, একুইজেশনের মাধ্যমে কোনো শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে এতদসংক্রান্ত স্কিম অনুমোদনের আগে বিএসইসি হতে অনাপত্তিপত্র গ্রহণ বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন।

The post হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিতে হলে আসতে হবে পুঁজিবাজারে appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :
জনপ্রিয়

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিতে হলে আসতে হবে পুঁজিবাজারে

Update Time : 12:09:30 pm, Tuesday, 25 March 2025

টাস্কফোর্সের সুপারিশ:

অনলাইন ডেস্ক:

কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনে প্রাথমিক ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) এই সুপারিশ বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয়। অবশ্য এটি খসড়া সুপারিশ। আগামী ২৭ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে এই খসড়া সুপারিশের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে বিএসইসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অপরদিকে পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি আইপিও’র জন্য আবেদন করলে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করবে স্টক এক্সচেঞ্জ। স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দিলে সেসব কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার বিক্রি করতে পারবে। স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো কোম্পানির আইপিও বাতিল করলে বিএসইসি ওই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিতে পারবে না।

এ বিষয়ে টাস্কফোর্স সুপারিশ করেছে- শেয়ারবাজারে আইপিওর মাধ্যমে কোন কোম্পানি বাজারে আসবে এবং কোন কোম্পানি অনুমোদন পাবে না, এর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেবে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো। স্টক এক্সচেঞ্জ যদি কোনো কোম্পানির আইপিও প্রস্তাব বাতিল করে দেয় তাহলে বিএসইসি সেই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিতে পারবে না। আইপিও সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে এ বিধান যুক্ত করতে হবে।

স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে আইপিও অনুমোদনের প্রাথমিক ক্ষমতা দেওয়ার পাশাপাশি ফিক্সড প্রাইজ বা স্থির মূল্য পদ্ধতিতে আইপিও’র আবেদন করতে গেলে কোম্পানির পরিশোধ মূলধন কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা এবং বুক বিল্ডিংয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা থাকার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।

টাস্কফোর্সের সুপারিশে বলা হয়েছে, স্থির মূল্য পদ্ধতিতে ৩০ কোটি টাকার কম মূলধনের কোনো কোম্পানিকে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত করা যাবে না এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৫০ কোটি টাকার কম মূলধনের কোনো কোম্পানিকে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত না যাবে না।

একই সঙ্গে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বাকি ৫০ শতাংশ শেয়ার সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এবং বাকি ৪৫ শতাংশ স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে পুঁজিবাজারের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ৭ অক্টোবর এই টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি।

টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি
শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করার এই টাস্কফোর্স যে কার্যক্রম পরিচালনা করবে তার মধ্যে রয়েছে-

>> বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের আকার তথা ‘জিডিপি ও বাজার মূলধন’-এর অনুপাত কম হওয়ার প্রধান কারণগুলো চিহ্নিত করে উত্তরণের জন্য সরকারের আর্থিক খাতের নীতি প্রণয়নের প্রস্তাবনা।

>> দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজার থেকে অর্থায়নের জন্য সরকারের আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন করা।

>> আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শেয়ারবাজারের সুশাসন উন্নীতকরণের লক্ষ্যে শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করা ও সমাধানের সুপারিশমালা প্রণয়ন।

>> বিএসইসির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ, অভ্যন্তরীণ সুশাসন, অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে প্রযুক্তি ও অটোমেশনের প্রয়োগ, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশাসনিক কাঠামোর সুপারিশ, মানব সম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কমিশনের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, সেমিনার, কর্মশালায় অংশগ্রহণ-সহ অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।

>> ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, সিসিবিএলের তদারকি কার্যক্রম বিশ্বমানে উন্নীতকরণসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> প্রাইভেট প্লেসমেন্ট/অফারের মাধ্যমে ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইস্যু অফ ক্যাপিটাল) রুলস, ২০০১ যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, করপোরেট ডিজক্লোজার, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের সঠিকতা নিশ্চিতকরণসহ করপোরেট গভর্ন্যান্স, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং বাজারের গভীরতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন।

>> ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যুর আবেদনের ক্ষেত্রে দাখিল করা তথ্য-উপাত্ত, দলিল-দস্তাবেজ, সম্পদ পুনঃমূল্যায়ন প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে প্রস্তুতকারী পক্ষসমূহ যেমন: ইস্যুয়ার কোম্পানি, ইস্যু ম্যানেজার ও আন্ডার রাইটার (মার্চেন্ট ব্যাংকার), ভেল্যুয়ার এবং অডিটরসহ অন্যান্য পক্ষগুলোর দায়দায়িত্ব ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এতদসংশ্লিষ্ট বিধিমালা যেমন- সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফলিও ম্যানেজার) বিধিমালা, ১৯৯৬, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক- ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১-সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> ডেট ও ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যু সংক্রান্ত বিধি-বিধানের যেমন- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (রাইট ইস্যু) রুলস, ২০০৬, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ডেট সিকিউরিটিজ), রুলস ২০২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইনভেস্টমেন্ট সুকুক), বুলস ২০১৯, বিএসইসি (সম্পদ ভিত্তিক সিকিউরিটি ইস্যু) বিধিমালা, ২০০৪-সহ সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যুগোপযোগীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ ও সমন্বয়ের গাইডলাইন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বাজারে কারসাজি, সুবিধাভোগী ব্যবসায় লেনদেন ও অন্যান্য অনিয়মের বিচার ও জরিমানায় সমতা আনয়নের জন্য বিদ্যমান আইনের শাস্তির ধারার অধীনে একটি সুনির্দিষ্ট পেনাল কোড বা শান্তির বিধিমালা প্রণয়ন করা।

>> মার্কিন রুলস, ১৯৯৯ যুগোপযোগীকরণসহ, বিদ্যমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও বিজনেস ইন্টেলিজেন্স মডিউল সমৃদ্ধ বিশ্বমানের অনলাইন ও অফলাইন সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বা বাজার তদারকি ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিরূপণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়ন।

>> বর্তমান বাজার কাঠামোর মূল্যায়ন, বাজারের গভীরতা ও পণ্য বৈচিত্র্যকে বিবেচনা করে দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কীভাবে আরও আকৃষ্ট করা যায় সেই কৌশল প্রণয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ।

>> শেয়ারবাজারের কার্যক্রমে অটোমেশন বৃদ্ধির মাধ্যমে শেয়ারবাজারের সুশাসন এবং বিনিযোগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নয়ন এবং শেয়ারবাজার উপযোগী ফিনটেক টেকনোলজি প্রচলন এবং শেয়ারবাজারের প্রযুক্তিগত সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন।

>> নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর (বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইডিআরএ, এমআরএ, এনবিআর, আরজেএসসি ইত্যাদি) সাথে সমন্বয় সাধনের উপায় নির্ধারণে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি বা নির্দেশিকা প্রণয়ন।

>> তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি বা তালিকাভুক্ত কোম্পানির মার্জার, আমালগামেশন, একুইজেশনের মাধ্যমে কোনো শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে এতদসংক্রান্ত স্কিম অনুমোদনের আগে বিএসইসি হতে অনাপত্তিপত্র গ্রহণ বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন।

The post হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিতে হলে আসতে হবে পুঁজিবাজারে appeared first on সোনালী সংবাদ.