5:31 am, Thursday, 27 March 2025
Aniversary Banner Desktop

এপ্রিলেই প্রাথমিকের ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আসছে

অনলাইন ডেস্ক: এপ্রিলেই চালু হচ্ছে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফিডিং কর্মসূচি। দেশের ২০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচির আওতায় আসছে। শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং ঝরে পড়া রোধে সপ্তাহের পাঁচ দিন দুপুরের খাবার দিতে সরকার এ কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসে। অন্যদিকে অবস্থাপন্ন শিশুদের অভিভাবকরা সন্তানদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিন্ডারগার্টেনে পড়িয়ে থাকেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা প্রান্তিক এসব শিশু দারিদ্র্য কিংবা অসচেতনতায় অনেকেই ঠিকমতো বাড়ি থেকে না খেয়ে আসে। অনেক ক্ষেত্রে তারা যে সব খাবার গ্রহণ করে তা পুষ্টিসমৃদ্ধও হয় না। আবার শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত দ্বিতীয় ধাপের শ্রেণিতে থাকা  শিক্ষার্থীরা খাবার গ্রহণ না করার কারণে খিদে পেট নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকে, ফলে লেখাপড়ায় তারা মনোযোগী হতে পারে না। অন্যদিকে হয়ত তাদের পরিবারের পুষ্টিকর খাবার কেনারও সামর্থ্য থাকে না।

তিনি বলেন, সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্চাদের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রান্তিক পর্যায়ের সকল উপজেলার স্কুলগুলোকে পর্যায়ক্রমে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব শিশুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব দেশের সব উপজেলার শিক্ষার্থীদের এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর পাঠদান ও গ্রহণ যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য বিকল্প পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর মেয়াদী  প্রকল্পটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। দেশের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চলবে। এ উপজেলার মধ্যে ৯১ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩৫ উপজেলা অতি উচ্চ এবং উচ্চ দারিদ্র্য প্রবণ। বাকি ১৪টি, অর্থাৎ ৯ শতাংশ উপজেলা নিম্ন দারিদ্র্য প্রবণ এলাকা। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে থাকবে দুধ, ডিম, রুটি (বন) এবং মৌসুমি ফল। তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে শুকনো পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিতরণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বিবিএস এর দারিদ্র্য ম্যাপ দেখে ১৫০ টি উপজেলার প্রায় ১৮ থেকে ১৯ হাজার স্কুলকে নির্বাচন করা হয়েছে। উপজেলার সব স্কুলের বাচ্চারাই খাবার পাবে। খাবার এমনভাবে পরিবেশন করা হবে যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিডারশিপ তৈরি হয়। তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে পুষ্টিসমৃদ্ধ এ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এরমধ্যে স্কুল খোলার প্রথম তিনদিন শিক্ষার্থীরা একটি করে ডিম ও বনরুটি (ছোট গোল পাউরুটি), পরের দুইদিন পর্যায়ক্রমে ইউএসটি দুধ ও বনরুটি এবং অন্যদিন পাবে পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও যে কোন মৌসুমি ফল। খাবারের পেছনে শিক্ষার্থী প্রতি খরচ হবে গড়ে ৩৯ থেকে ৪০ টাকা। কার্যক্রমের শৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে স্থানীয়দের নিয়ে একটি কমিটি কাজ করবে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়ে এ প্রকল্প চলবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। চলতি অর্থবছর  প্রকল্পে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে যা ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা হতে পারে। ২০২৬-২৭ অর্থবছর ২ হাজার ১৬১ কোটি টাকা, ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ১৯০ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ডিপিপিতে।

‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’র খরচ কোনো বিদেশি ঋণ কিংবা অনুদান ছাড়াই নিজস্ব জোগান থেকে বহন করবে সরকার। প্রকল্পের ব্যয়ভার ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা।  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এ প্রসঙ্গে বলেন, মিড ডে মিল প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিশুরা লম্বা সময় স্কুলে থাকে, তারা দুপুরে কিছু খাবে, ক্ষুধা দূর হবে। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অপুষ্টিতে ভোগে। এ প্রজেক্টে হেলথের কম্পোনেন্ট রয়েছে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার এবং ভাসানচরে অবস্থানরত মিয়ানমারের শিশুরাও এ প্রকল্পে যুক্ত হবে। ১ হাজার ৯৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ হাজার ৯৯ জন শিক্ষক এ প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ পাবেন।

বাগেরহাট জেলার ৪১ নং কদমতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী হালিমা আক্তারের মা শিরিন আক্তার বাসসকে বলেন, ‘মোর সোয়ামী বাজারে চায়ের দোকানদার। মোরা গরীব, ঠিকমতো মাইয়্যারে খাইতে দিতে পারি না। টিফিন পামু কোম্মে। দুপুর ১২ টা থেইক্যা বিকাল ৪ টা পর্যন্ত স্কুলে থাহে। এই প্রকল্প চালু হইলে মোর মাইয়্যার জন্য ভাল অইবে। সব ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ থাকবে।’

একই জেলার উত্তর মালিয়া রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন মুক্তা বলেন, স্কুল ফিডিং প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে প্রায় প্রত্যেক প্রান্তিক মানুষের পরিবারে সকালের খাবার জোটে আধপেটা পানতা ভাত। জোটে না কোন পুষ্টিকর খাবার। এতে তারা শ্রেণিকক্ষে নির্জীব থাকে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী থাকে।

শিক্ষক নেতা মিজানুর রহমান বলেন, দারিদ্র্যপীড়িত এসব এলাকায় মুচি, মেথর, চাষা, শ্রমিক, দিনমজুর আর কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা লোকজন বসবাস করে। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমি আশা করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বাড়বে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রকল্পটি খুবই জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষক প্রফেসর মো. আবদুস সালাম বলেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত। একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের পুষ্টির দিকটি বিবেচনায় রেখে এ ধরনের উদ্যোগে সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন পরিলক্ষিত হবে।

সূত্র: বাসস

The post এপ্রিলেই প্রাথমিকের ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আসছে appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :
জনপ্রিয়

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

এপ্রিলেই প্রাথমিকের ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আসছে

Update Time : 07:09:21 pm, Tuesday, 25 March 2025

অনলাইন ডেস্ক: এপ্রিলেই চালু হচ্ছে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফিডিং কর্মসূচি। দেশের ২০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচির আওতায় আসছে। শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং ঝরে পড়া রোধে সপ্তাহের পাঁচ দিন দুপুরের খাবার দিতে সরকার এ কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসে। অন্যদিকে অবস্থাপন্ন শিশুদের অভিভাবকরা সন্তানদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিন্ডারগার্টেনে পড়িয়ে থাকেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা প্রান্তিক এসব শিশু দারিদ্র্য কিংবা অসচেতনতায় অনেকেই ঠিকমতো বাড়ি থেকে না খেয়ে আসে। অনেক ক্ষেত্রে তারা যে সব খাবার গ্রহণ করে তা পুষ্টিসমৃদ্ধও হয় না। আবার শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত দ্বিতীয় ধাপের শ্রেণিতে থাকা  শিক্ষার্থীরা খাবার গ্রহণ না করার কারণে খিদে পেট নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকে, ফলে লেখাপড়ায় তারা মনোযোগী হতে পারে না। অন্যদিকে হয়ত তাদের পরিবারের পুষ্টিকর খাবার কেনারও সামর্থ্য থাকে না।

তিনি বলেন, সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্চাদের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রান্তিক পর্যায়ের সকল উপজেলার স্কুলগুলোকে পর্যায়ক্রমে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব শিশুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব দেশের সব উপজেলার শিক্ষার্থীদের এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর পাঠদান ও গ্রহণ যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য বিকল্প পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর মেয়াদী  প্রকল্পটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। দেশের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চলবে। এ উপজেলার মধ্যে ৯১ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩৫ উপজেলা অতি উচ্চ এবং উচ্চ দারিদ্র্য প্রবণ। বাকি ১৪টি, অর্থাৎ ৯ শতাংশ উপজেলা নিম্ন দারিদ্র্য প্রবণ এলাকা। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে থাকবে দুধ, ডিম, রুটি (বন) এবং মৌসুমি ফল। তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে শুকনো পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিতরণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বিবিএস এর দারিদ্র্য ম্যাপ দেখে ১৫০ টি উপজেলার প্রায় ১৮ থেকে ১৯ হাজার স্কুলকে নির্বাচন করা হয়েছে। উপজেলার সব স্কুলের বাচ্চারাই খাবার পাবে। খাবার এমনভাবে পরিবেশন করা হবে যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিডারশিপ তৈরি হয়। তিন ধাপে পর্যায়ক্রমে পুষ্টিসমৃদ্ধ এ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এরমধ্যে স্কুল খোলার প্রথম তিনদিন শিক্ষার্থীরা একটি করে ডিম ও বনরুটি (ছোট গোল পাউরুটি), পরের দুইদিন পর্যায়ক্রমে ইউএসটি দুধ ও বনরুটি এবং অন্যদিন পাবে পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও যে কোন মৌসুমি ফল। খাবারের পেছনে শিক্ষার্থী প্রতি খরচ হবে গড়ে ৩৯ থেকে ৪০ টাকা। কার্যক্রমের শৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে স্থানীয়দের নিয়ে একটি কমিটি কাজ করবে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়ে এ প্রকল্প চলবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। চলতি অর্থবছর  প্রকল্পে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে যা ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা হতে পারে। ২০২৬-২৭ অর্থবছর ২ হাজার ১৬১ কোটি টাকা, ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ১৯০ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ডিপিপিতে।

‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’র খরচ কোনো বিদেশি ঋণ কিংবা অনুদান ছাড়াই নিজস্ব জোগান থেকে বহন করবে সরকার। প্রকল্পের ব্যয়ভার ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা।  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এ প্রসঙ্গে বলেন, মিড ডে মিল প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিশুরা লম্বা সময় স্কুলে থাকে, তারা দুপুরে কিছু খাবে, ক্ষুধা দূর হবে। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অপুষ্টিতে ভোগে। এ প্রজেক্টে হেলথের কম্পোনেন্ট রয়েছে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার এবং ভাসানচরে অবস্থানরত মিয়ানমারের শিশুরাও এ প্রকল্পে যুক্ত হবে। ১ হাজার ৯৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ হাজার ৯৯ জন শিক্ষক এ প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ পাবেন।

বাগেরহাট জেলার ৪১ নং কদমতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী হালিমা আক্তারের মা শিরিন আক্তার বাসসকে বলেন, ‘মোর সোয়ামী বাজারে চায়ের দোকানদার। মোরা গরীব, ঠিকমতো মাইয়্যারে খাইতে দিতে পারি না। টিফিন পামু কোম্মে। দুপুর ১২ টা থেইক্যা বিকাল ৪ টা পর্যন্ত স্কুলে থাহে। এই প্রকল্প চালু হইলে মোর মাইয়্যার জন্য ভাল অইবে। সব ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ থাকবে।’

একই জেলার উত্তর মালিয়া রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন মুক্তা বলেন, স্কুল ফিডিং প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে প্রায় প্রত্যেক প্রান্তিক মানুষের পরিবারে সকালের খাবার জোটে আধপেটা পানতা ভাত। জোটে না কোন পুষ্টিকর খাবার। এতে তারা শ্রেণিকক্ষে নির্জীব থাকে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী থাকে।

শিক্ষক নেতা মিজানুর রহমান বলেন, দারিদ্র্যপীড়িত এসব এলাকায় মুচি, মেথর, চাষা, শ্রমিক, দিনমজুর আর কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা লোকজন বসবাস করে। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমি আশা করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বাড়বে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রকল্পটি খুবই জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষক প্রফেসর মো. আবদুস সালাম বলেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত। একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের পুষ্টির দিকটি বিবেচনায় রেখে এ ধরনের উদ্যোগে সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন পরিলক্ষিত হবে।

সূত্র: বাসস

The post এপ্রিলেই প্রাথমিকের ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আসছে appeared first on সোনালী সংবাদ.