10:07 am, Monday, 31 March 2025
Aniversary Banner Desktop

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক: ঐতিহাসিক দলিল

অনলাইন ডেস্ক : পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর সামরিক অভিযান চালিয়ে যখন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে নিমর্মভাবে হত্যা করছিল, তখনই মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল থেকে এ প্রমাণ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর এ অভিযানে সারাদেশে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা স্মরণ করে বলেন, তাঁর এমন ঘোষণা আকস্মিকভাবে হতবিহ্বল জাতিকে উজ্জীবিত এবং পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে জর্জরিত জনমনে আশার সঞ্চার করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ, বীর উত্তম তার লেখা ‘বাংলাদেশ অ্যাট ওয়ার’ গ্রন্থে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তিনি লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ রাতে নিজের কমান্ডিং অফিসারের সঙ্গে হিসাব চুকিয়ে নিয়ে জিয়া সিদ্ধান্ত নেন তার ব্যাটালিয়নকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পুনর্গঠন করবেন, শক্তি সঞ্চয় করবেন এবং চট্টগ্রামে এক চূড়ান্ত আঘাত হানবেন। সেই অনুযায়ী সব সৈন্যকে পটিয়ার অদূরে এক স্থানে জড়ো করা হয়েছিল।’

তিনি লিখেছেন, ‘সব সৈন্য তখন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যের শপথ নেন। জিয়া ২৬ মার্চ বিকেল ৪টায় এই শপথ বাক্য পাঠ করান। এরপর তিনি ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো রেডিওতে ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় তিনি শুধু পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেননি, বরং নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও ঘোষণা করেন।’

শফিউল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘ব্যাটালিয়ন শক্তিশালী হতে শুরু করলে, ২৭ মার্চ বিকেলে জিয়া কালুরঘাটে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আরেকটি ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘আমি, মেজর জিয়া, বাংলাদেশ মুক্তি বাহিনীর অস্থায়ী প্রধান সেনাপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।’

জিয়াউর রহমান নিজেও তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর লেখা ‘বার্থ অব অ্যা নেশন’ নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ রাতে আমরা স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ করি।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেনাবাহিনীর একজন মেজর ছিলেন।

এই নিবন্ধ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক বাংলা পত্রিকায় এবং পরে ১৯৭৪ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রার  স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় পুনঃপ্রকাশিত হয়।

মেজর জিয়া নিবন্ধে লিখেছেন, ‘যখন আমি ব্যাটালিয়নে ফিরে আসি তখন দেখি সব পাকিস্তানি অফিসারকে গ্রেফতার করে একটি ঘরে রাখা হয়েছে। আমি অফিসে যাই। আমি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম আর চৌধুরী ও মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনি। পরে, বেসামরিক বিভাগের টেলিফোন অপারেটরকে ডেকে ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপার, কমিশনার, ডিআইজি এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানোর অনুরোধ করি যে ৮ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ করেছে এবং তারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবে।’

এ তথ্য সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজ উল্লাহর বই ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: অ্যা পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি’-তে উল্লেখ করা হয়েছে।

জিয়া আরও লিখেছেন, ‘আমি টেলিফোনে সবার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ধরতে পারিনি, তাই টেলিফোন অপারেটরের মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করি। সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি ব্যাটালিয়নের অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এবং সৈন্যদের ডাকি। আমি তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেই। তারা সবকিছু জানত। সংক্ষেপে আমি সবকিছু বলি এবং যুদ্ধের নির্দেশ দেই। তারা সবাই সর্বসম্মতভাবে আমার আদেশ পালন করতে রাজি হয়। আমি একটি সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করি।’

‘এটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ, রাত ২:১৫ মিনিট। বাঙালির হৃদয়ে রক্তাক্ষরে লেখা একটি দিন। বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন এই দিনকে স্মরণ করবে। তারা ভালোবেসে এই দিনটিকে মনে রাখবে। তারা কখনো দিনটিকে ভুলবে না। ক-খ-ন-ও না।’ জিয়াউর রহমানের বরাত দিয়ে নিবন্ধটি শেষ করা হয়।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে তার প্রতিবেদনে বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামে অস্ত্র হাতে লড়াইরত মেজর জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগ নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের গণহত্যা বন্ধে সাহায্যের আবেদন জানান।’

ভারতীয় সাংবাদিক জ্যোতি সেন গুপ্ত তার বই ‘হিস্ট্রি অব ফ্রিডম মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’-এ লিখেছেন, ‘মেজর জিয়া ও তাঁর বাহিনী ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বিদ্রোহ করে এবং ওইদিন সন্ধ্যায় তাঁর নিজের নামে রেডিওতে প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বিশেষ সহকারী মঈদুল হাসান তার বই ‘মূলধারা ৭১’-এ লিখেছেন, ‘৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী নেতা মেজর জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করেন।’

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার তার বই ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’-এ লিখেছেন, ‘মেজর জিয়া তাঁর প্রথম ঘোষণায় নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে উপস্থাপন করেন। পরে তিনি এটি সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এটি টেপে রেকর্ড করা হয়। এটি ২৭ মার্চ সন্ধ্যার আগেই পুনঃপ্রচার করা হয়।’

মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুটের জন্যে গঠিত যুব শিবিরের মহাপরিচালক এস আর মির্জা তার বই ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন’-এ লিখেছেন যে তিনি ২৫ মার্চের পর থেকে সবসময় একটি রেডিও সঙ্গে রাখতেন এবং বারবার সেটি চালাতেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ২৭ মার্চ দুপুরে স্পষ্ট শুনেছিলাম, মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিচ্ছেন।’

ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সুখান্ত সিং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল তার বই ‘ইন্ডিয়াস ওয়ারস সিন্স ইন্ডিপেনডেন্স: দ্য লিবারেশন অব বাংলাদেশ’-এ লিখেছেন, ‘২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতারে বাঙালি অফিসার মেজর জিয়ার কণ্ঠস্বর ইতিমধ্যে গর্জে উঠেছিল।’

সূত্র: বাসস

The post জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক: ঐতিহাসিক দলিল appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :
জনপ্রিয়

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক: ঐতিহাসিক দলিল

Update Time : 01:08:46 pm, Thursday, 27 March 2025

অনলাইন ডেস্ক : পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর সামরিক অভিযান চালিয়ে যখন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে নিমর্মভাবে হত্যা করছিল, তখনই মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল থেকে এ প্রমাণ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর এ অভিযানে সারাদেশে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা স্মরণ করে বলেন, তাঁর এমন ঘোষণা আকস্মিকভাবে হতবিহ্বল জাতিকে উজ্জীবিত এবং পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে জর্জরিত জনমনে আশার সঞ্চার করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ, বীর উত্তম তার লেখা ‘বাংলাদেশ অ্যাট ওয়ার’ গ্রন্থে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তিনি লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ রাতে নিজের কমান্ডিং অফিসারের সঙ্গে হিসাব চুকিয়ে নিয়ে জিয়া সিদ্ধান্ত নেন তার ব্যাটালিয়নকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পুনর্গঠন করবেন, শক্তি সঞ্চয় করবেন এবং চট্টগ্রামে এক চূড়ান্ত আঘাত হানবেন। সেই অনুযায়ী সব সৈন্যকে পটিয়ার অদূরে এক স্থানে জড়ো করা হয়েছিল।’

তিনি লিখেছেন, ‘সব সৈন্য তখন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যের শপথ নেন। জিয়া ২৬ মার্চ বিকেল ৪টায় এই শপথ বাক্য পাঠ করান। এরপর তিনি ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো রেডিওতে ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় তিনি শুধু পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেননি, বরং নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও ঘোষণা করেন।’

শফিউল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘ব্যাটালিয়ন শক্তিশালী হতে শুরু করলে, ২৭ মার্চ বিকেলে জিয়া কালুরঘাটে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আরেকটি ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘আমি, মেজর জিয়া, বাংলাদেশ মুক্তি বাহিনীর অস্থায়ী প্রধান সেনাপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।’

জিয়াউর রহমান নিজেও তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর লেখা ‘বার্থ অব অ্যা নেশন’ নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ রাতে আমরা স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ করি।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেনাবাহিনীর একজন মেজর ছিলেন।

এই নিবন্ধ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক বাংলা পত্রিকায় এবং পরে ১৯৭৪ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রার  স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় পুনঃপ্রকাশিত হয়।

মেজর জিয়া নিবন্ধে লিখেছেন, ‘যখন আমি ব্যাটালিয়নে ফিরে আসি তখন দেখি সব পাকিস্তানি অফিসারকে গ্রেফতার করে একটি ঘরে রাখা হয়েছে। আমি অফিসে যাই। আমি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম আর চৌধুরী ও মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনি। পরে, বেসামরিক বিভাগের টেলিফোন অপারেটরকে ডেকে ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপার, কমিশনার, ডিআইজি এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানোর অনুরোধ করি যে ৮ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ করেছে এবং তারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবে।’

এ তথ্য সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজ উল্লাহর বই ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া অব বাংলাদেশ: অ্যা পলিটিক্যাল বায়োগ্রাফি’-তে উল্লেখ করা হয়েছে।

জিয়া আরও লিখেছেন, ‘আমি টেলিফোনে সবার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ধরতে পারিনি, তাই টেলিফোন অপারেটরের মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করি। সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি ব্যাটালিয়নের অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এবং সৈন্যদের ডাকি। আমি তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেই। তারা সবকিছু জানত। সংক্ষেপে আমি সবকিছু বলি এবং যুদ্ধের নির্দেশ দেই। তারা সবাই সর্বসম্মতভাবে আমার আদেশ পালন করতে রাজি হয়। আমি একটি সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করি।’

‘এটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ, রাত ২:১৫ মিনিট। বাঙালির হৃদয়ে রক্তাক্ষরে লেখা একটি দিন। বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন এই দিনকে স্মরণ করবে। তারা ভালোবেসে এই দিনটিকে মনে রাখবে। তারা কখনো দিনটিকে ভুলবে না। ক-খ-ন-ও না।’ জিয়াউর রহমানের বরাত দিয়ে নিবন্ধটি শেষ করা হয়।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে তার প্রতিবেদনে বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামে অস্ত্র হাতে লড়াইরত মেজর জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগ নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের গণহত্যা বন্ধে সাহায্যের আবেদন জানান।’

ভারতীয় সাংবাদিক জ্যোতি সেন গুপ্ত তার বই ‘হিস্ট্রি অব ফ্রিডম মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’-এ লিখেছেন, ‘মেজর জিয়া ও তাঁর বাহিনী ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বিদ্রোহ করে এবং ওইদিন সন্ধ্যায় তাঁর নিজের নামে রেডিওতে প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বিশেষ সহকারী মঈদুল হাসান তার বই ‘মূলধারা ৭১’-এ লিখেছেন, ‘৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী নেতা মেজর জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করেন।’

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার তার বই ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’-এ লিখেছেন, ‘মেজর জিয়া তাঁর প্রথম ঘোষণায় নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে উপস্থাপন করেন। পরে তিনি এটি সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এটি টেপে রেকর্ড করা হয়। এটি ২৭ মার্চ সন্ধ্যার আগেই পুনঃপ্রচার করা হয়।’

মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুটের জন্যে গঠিত যুব শিবিরের মহাপরিচালক এস আর মির্জা তার বই ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর: কথোপকথন’-এ লিখেছেন যে তিনি ২৫ মার্চের পর থেকে সবসময় একটি রেডিও সঙ্গে রাখতেন এবং বারবার সেটি চালাতেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ২৭ মার্চ দুপুরে স্পষ্ট শুনেছিলাম, মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিচ্ছেন।’

ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সুখান্ত সিং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল তার বই ‘ইন্ডিয়াস ওয়ারস সিন্স ইন্ডিপেনডেন্স: দ্য লিবারেশন অব বাংলাদেশ’-এ লিখেছেন, ‘২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতারে বাঙালি অফিসার মেজর জিয়ার কণ্ঠস্বর ইতিমধ্যে গর্জে উঠেছিল।’

সূত্র: বাসস

The post জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক: ঐতিহাসিক দলিল appeared first on সোনালী সংবাদ.