10:20 pm, Wednesday, 2 April 2025
Aniversary Banner Desktop

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারগুলোয় নেই ঈদ আনন্দ

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারে এখনো শোকের ছায়া। নেই ঈদের আনন্দ।
এসব পরিবারে কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউ বা সন্তান। আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো স্বজন হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনেও।

ঈদ তাদের জন্য আর আগের মতো উৎসব নয়, বরং বেদনার আরেক নাম। কেউ সামর্থ্য থাকলেও কিনছেন না নতুন জামা, খাচ্ছেন না ভালো খাবার। আর কেউ বা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দু’চোখে দেখছেন অন্ধকার।

সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস’র প্রতিবেদকের সাথে ঈদ প্রস্তুতির বিষয়ে আলাপকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যরা এমন কথা জানান।

জুলাই অভ্যুত্থানে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ মেহেরুন নেছা তানহার মা আছমা আক্তার বাসসকে বলেন, ‘তানহা ছাড়া আমাদের ঘর অন্ধকার। ঈদের দিন সকালে উঠেই মেয়ে নিজ হাতে  পোলাও-মাংসসহ সব রান্না করত। আগের রাতেই সেমাই রান্না করে রাখত। কিন্তু এবার তো আমার মেয়েই নাই। আমাদের আর কিসের ঈদ? মেয়েটা আমার পোলাও-মাংস খেতে খুব পছন্দ করতো। তানহা শহীদ হওয়ার পর আমি বাসায় আর পোলাও-মাংস রান্না করিনি।’

রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ইমন হোসেন আকাশের মা বেবি আক্তার বলেন, ‘আমার জীবন থেকে সব হারিয়ে গেছে। আমার কোন ঈদ নাই। আমার জীবনের সব সুখ শেষ হয়ে গেছে। আকাশের বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি ছেলেকে নিয়েই ছিলাম। আমার আকাশ আমার কাছে নাই, সে আমাকে রেখে অনেক দূরে চলে গেছে। আমার বুকটা খালি হয়ে গেছে।’

রাজধানীর কাফরুলের ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের ছাত্র শহীদ ফয়জুল ইসলাম রাজনের বড় ভাই মো. রাজিব বলেন, ‘ভাইকে ছাড়া ঈদ কতটা কষ্টের সেটা বোঝানোর ক্ষমতা আমার নেই। কারণ ঈদের দিন সকাল হলেই ভাই আসতো আমার কাছে। দুই ভাই নাস্তা খেয়ে নতুন পাঞ্জাবী পরে এক সাথে নামাজ পড়তে যেতাম। দুই ভাই ঈদের দিন কতো আনন্দ করতাম। ঈদ আসছে আর সেই পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ছে। এ বছর আর ভাইয়ের সাথে নামাজ পড়তে যাওয়া হবে না।’

রাজধানীর বংশালে শহীদ সোহাগের স্ত্রী সাবিনা আক্তার রুনা বলেন, ‘গত বছর স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে ঈদ করেছি। ঈদে যা কিছু দরকার হতো সবকিছুই তিনিই ব্যবস্থা করতেন। একমাত্র ছেলেটার জন্য কত নতুন পোশাক কিনতাম। এবার স্বামী নেই। কারো জন্যই কিছু কেনা হয় নি। ঈদে কী করব বুঝতে পারছি না।’

শহীদ ইসমাইলের মা তাসলিমা আক্তার বলেন, ঈদ আসার কয়েকদিন আগে থেকেই নতুন জামার বাহানা ধরত সে। কখন মার্কেটে নিয়ে যাব, কিনে দেব। আমরা পারিবারিক ভাবে সচ্ছল ছিলাম না। ওর বাবা আমাদের সাথে থাকতো না। আমি বাসাবাড়িতে রান্নার কাজ করতাম। ওর চাহিদা অনুযায়ী ঈদের কেনাকাটা করে দিতে পারি নাই। ছেলেটার কথা মনে হলে বুকটা ফেটে যায়। ছোট মেয়েকেও এ বছর নতুন জামা কিনে দিতে পারিনি।

শহীদ মায়া ইসলামের স্বামী মাহবুব ইসলাম বলেন, নাতি আইসক্রিম খেতে চেয়েছিল। নাতিকে নিয়ে বের হলে বাসার নিচে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। মায়া ইসলাম মারা যান। আর নাতি এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। ছেলে ও বউমা নাতির কাছে। আমি এখন একা। কখন কোথায় থাকি ঠিক নেই। আমার ঈদও নেই।
জুলাই আন্দোলনে নিউমাকের্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। স্ত্রী শাহানাজ বলেন,  ‘আমার স্বামী যখন ছিলেন তখন প্রতি বছর কেনাকাটা ও ঈদের আনন্দ করতাম। এ বছর তো উনিই নাই। উনার অনুপস্থিতিতে ঈদ করব, এটা ভাবতেই পারছি না। এক মাত্র ছেলেটার জন্যও কোন নতুন পোশাক কিনতে যাইনি।’

সূত্র: বাসস

The post জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারগুলোয় নেই ঈদ আনন্দ appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :

‘দেশ স্বাধীন করে আপনাদের মাফ করছি বলেই তো বেঁচে আছেন’

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারগুলোয় নেই ঈদ আনন্দ

Update Time : 04:13:03 pm, Saturday, 29 March 2025

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারে এখনো শোকের ছায়া। নেই ঈদের আনন্দ।
এসব পরিবারে কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউ বা সন্তান। আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো স্বজন হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনেও।

ঈদ তাদের জন্য আর আগের মতো উৎসব নয়, বরং বেদনার আরেক নাম। কেউ সামর্থ্য থাকলেও কিনছেন না নতুন জামা, খাচ্ছেন না ভালো খাবার। আর কেউ বা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দু’চোখে দেখছেন অন্ধকার।

সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস’র প্রতিবেদকের সাথে ঈদ প্রস্তুতির বিষয়ে আলাপকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যরা এমন কথা জানান।

জুলাই অভ্যুত্থানে রাজধানীর মিরপুরের শহীদ মেহেরুন নেছা তানহার মা আছমা আক্তার বাসসকে বলেন, ‘তানহা ছাড়া আমাদের ঘর অন্ধকার। ঈদের দিন সকালে উঠেই মেয়ে নিজ হাতে  পোলাও-মাংসসহ সব রান্না করত। আগের রাতেই সেমাই রান্না করে রাখত। কিন্তু এবার তো আমার মেয়েই নাই। আমাদের আর কিসের ঈদ? মেয়েটা আমার পোলাও-মাংস খেতে খুব পছন্দ করতো। তানহা শহীদ হওয়ার পর আমি বাসায় আর পোলাও-মাংস রান্না করিনি।’

রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ইমন হোসেন আকাশের মা বেবি আক্তার বলেন, ‘আমার জীবন থেকে সব হারিয়ে গেছে। আমার কোন ঈদ নাই। আমার জীবনের সব সুখ শেষ হয়ে গেছে। আকাশের বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি ছেলেকে নিয়েই ছিলাম। আমার আকাশ আমার কাছে নাই, সে আমাকে রেখে অনেক দূরে চলে গেছে। আমার বুকটা খালি হয়ে গেছে।’

রাজধানীর কাফরুলের ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের ছাত্র শহীদ ফয়জুল ইসলাম রাজনের বড় ভাই মো. রাজিব বলেন, ‘ভাইকে ছাড়া ঈদ কতটা কষ্টের সেটা বোঝানোর ক্ষমতা আমার নেই। কারণ ঈদের দিন সকাল হলেই ভাই আসতো আমার কাছে। দুই ভাই নাস্তা খেয়ে নতুন পাঞ্জাবী পরে এক সাথে নামাজ পড়তে যেতাম। দুই ভাই ঈদের দিন কতো আনন্দ করতাম। ঈদ আসছে আর সেই পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ছে। এ বছর আর ভাইয়ের সাথে নামাজ পড়তে যাওয়া হবে না।’

রাজধানীর বংশালে শহীদ সোহাগের স্ত্রী সাবিনা আক্তার রুনা বলেন, ‘গত বছর স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে ঈদ করেছি। ঈদে যা কিছু দরকার হতো সবকিছুই তিনিই ব্যবস্থা করতেন। একমাত্র ছেলেটার জন্য কত নতুন পোশাক কিনতাম। এবার স্বামী নেই। কারো জন্যই কিছু কেনা হয় নি। ঈদে কী করব বুঝতে পারছি না।’

শহীদ ইসমাইলের মা তাসলিমা আক্তার বলেন, ঈদ আসার কয়েকদিন আগে থেকেই নতুন জামার বাহানা ধরত সে। কখন মার্কেটে নিয়ে যাব, কিনে দেব। আমরা পারিবারিক ভাবে সচ্ছল ছিলাম না। ওর বাবা আমাদের সাথে থাকতো না। আমি বাসাবাড়িতে রান্নার কাজ করতাম। ওর চাহিদা অনুযায়ী ঈদের কেনাকাটা করে দিতে পারি নাই। ছেলেটার কথা মনে হলে বুকটা ফেটে যায়। ছোট মেয়েকেও এ বছর নতুন জামা কিনে দিতে পারিনি।

শহীদ মায়া ইসলামের স্বামী মাহবুব ইসলাম বলেন, নাতি আইসক্রিম খেতে চেয়েছিল। নাতিকে নিয়ে বের হলে বাসার নিচে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। মায়া ইসলাম মারা যান। আর নাতি এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। ছেলে ও বউমা নাতির কাছে। আমি এখন একা। কখন কোথায় থাকি ঠিক নেই। আমার ঈদও নেই।
জুলাই আন্দোলনে নিউমাকের্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। স্ত্রী শাহানাজ বলেন,  ‘আমার স্বামী যখন ছিলেন তখন প্রতি বছর কেনাকাটা ও ঈদের আনন্দ করতাম। এ বছর তো উনিই নাই। উনার অনুপস্থিতিতে ঈদ করব, এটা ভাবতেই পারছি না। এক মাত্র ছেলেটার জন্যও কোন নতুন পোশাক কিনতে যাইনি।’

সূত্র: বাসস

The post জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারগুলোয় নেই ঈদ আনন্দ appeared first on সোনালী সংবাদ.