
কবীর তুহিন : ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র এক দিন। শেষ মুহূর্তে জামা-কাপড়ের দোকানে যেমন উপচে পড়া ভিড়, তেমনি ঈদকেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্য কিনতে বাজারগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। আর্থিক অবস্থা যেমনই হোক, ঈদ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই ক্রেতাদের।
সেই সঙ্গে রোজার আগে থেকেই এবার অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামে রয়েছে স্বস্তি। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা ও সরবরাহের ওপর দাম বাড়া-কমা নির্ভর করছে।
শনিবার নগরীর সাহেববাজার, নিউ মার্কেট বাজার, লক্ষ্মীপুর বাজার, বিনোদপুর ও কোর্ট বাজার ঘুরে ঈদের আগে মানুষের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার এমন চিত্র দেখা গেছে। ঈদ এলেই বাজারে সেমাইয়ের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
এবারের ঈদেও বাজারে বেড়েছে সেমাই বিক্রি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে লাচ্ছা ও চিকন সেমাই, যা প্যাকেটজাত ও খোলা আকারে বিক্রি হচ্ছে। সামর্থ্য অনুযায়ী প্যাকেটজাত কিংবা খোলা সেমাই কিনছেন ক্রেতারা।
সাহেব বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায়। আর চিকন সেমাই কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম সেমাই ব্র্যান্ডভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রেশমি লাচ্ছা ১৮০ টাকা, ডালডায় তৈরি সেমাই বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, ঘিয়ে ভাজা সেমাই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মুঘল লাচ্ছা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ফ্রুট লাচ্ছা ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যান্ডের ঘি ও কিশমিশযুক্ত সেমাই বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি দরে। ব্রান্ডের এসব সেমাই পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ ও ৪০০ গ্রাম ওজনের প্যাকেটেও। সেক্ষেত্রে প্রতি প্যাকেটের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
এদিকে বড় বড় কোম্পানি সেমাইয়ের বাজারে আসার পর ছোট ছোট কোম্পানির সংখ্যা কমছে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, বনফুল, কিষোয়ানসহ অনেক শিল্পগোষ্ঠী বর্তমানে সেমাই বাজারজাত করছে।
ঈদ ঘিরে সেমাইয়ের দাম কমলেও তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে বাজারে। গত বছরের তুলনায় চীনাবাদাম, কাজুবাদাম ও কাঠবাদামের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে প্রায় ৩০০ টাকা কমেছে পেস্তাবাদামের দাম। তবে দামে পরিবর্তন হয়নি কিশমিশের।
সাহেববাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাস আগে প্রতি কেজি চীনাবাদামের দাম ছিল ১২০ টাকা। বর্তমানে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এ ছাড়া কাজুবাদাম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। এক মাস আগে দাম ছিল ১ হাজার ৩০০ টাকার আশেপাশে। ভালো মানের পেস্তাবাদাম বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪৫০ টাকা কেজি দরে। গত বছরের তুলনায় দাম কমেছে ৩০০ টাকা। অন্যদিকে কাঠবাদাম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ১৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। এক মাস আগেও দাম প্রায় একই ছিল। ঈদে আরেকটি প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাওয়ের চাল।
রমজান মাসের শুরু থেকে ১-২ টাকা করে বেড়ে এখন খোলা চিনিগুঁড়া ১২৫ থেকে মানভেদে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি মিল্ক ভিটা ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা; যা এক মাস আগেও ৬০ টাকা কম ছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি প্রাণ ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা ও আড়ং ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। তা ছাড়া ডিপ্লোমা দুধ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৯০ টাকায়।
প্রতি কেজি ডানো ও মার্কস বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ ও ৮৬০ টাকা। এদিকে খোলা চিনি ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়।
The post বাজারে শেষ সময়ে ভিড় সেমাই চিনি মসলার দোকানে appeared first on সোনালী সংবাদ.