6:52 pm, Tuesday, 8 April 2025
Aniversary Banner Desktop

মার্কিন শুল্ক, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটুকু প্রভাব পড়বে

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, এর প্রভাব নিয়ে ঢাকায় চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। অর্থনীতিবিদদের অনেকে বলছেন, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে।

যুক্তরাষ্ট্র এটাকে রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, যেসব দেশ এতদিন মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক নির্ধারণ করে রেখেছিলো, সেইসব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউজের প্রকাশিত তালিকায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ নতুন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

আগামী নয়ই এপ্রিল থেকে এই উচ্চতর শুল্ক আরোপ শুরু হবে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ।

অর্থাৎ, নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে এখন থেকে গড়ে ৫২ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে, বলছেন ঢাকায় অর্থনীতিবিদদের অনেকে।

এছাড়া, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ শুল্ক রয়েছে বলে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদেরা।

তাদের মতে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর গড়ে সাত থেকে আট শতাংশ শুল্ক আরোপ করে থাকে।

এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র কী কারণে বা কিসের ভিত্তিতে ৭৪ শতাংশ শুল্কের কথা বলছে, সে বিষয়টি দ্রুত স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্কহার পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক নিয়ে প্রশ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ, যা ইউএসটিআর নামে পরিচিত, তাতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক এক হাজার ৬০ কোটি ডলার।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের মত।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে– কৃষিপণ্য যেমন, খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম এবং ভুট্টা। এছাড়া যন্ত্রপাতি এবং লোহা ও ইস্পাত পণ্যওআসে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে, তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী ও কৃষিপণ্য।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর খুবই কম শুল্ক আরোপ করে।

“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে অতিরিক্ত শুল্ক বসালো, তার যৌক্তিকতা কী? কিভাবে তারা এই ৭৪ শতাংশের হিসাবটা করলো?” প্রশ্ন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখ করা ৭৪ শতাংশ “শুল্কটা আমাদের নাই” এবং মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশে শুল্ক “খুবই কম” বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলছে যে তারা এখানে শুধু শুল্ক বিবেচনায় নেয়নি। এক্সচেঞ্জ রেট পলিসি, ট্রেড পলিসি এগুলোও বিবেচনায় নিয়েছে।”

“ওগুলো বিবেচনায় নিলেও” ৭৪ শতাংশ শুল্ক হারের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়ে যায় বলে মত তার।

এই অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২৪ সালে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, এর বড় অংশই ছিল তুলা। বাংলাদেশে তুলার ওপর আমদানি শুল্ক ছিল শূন্য।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে লোহা ও পেট্রোলিয়াম আমদানি করা হয়েছে, যেগুলোর আমদানি শুল্ক যথাক্রমে শূন্য ও ৩১ শতাংশ।

“সব মিলিয়ে গড়ে আমদানি শুল্ক হয় সাত-আট শতাংশ হবে,” যোগ করেন তিনি।

আরেকজন অর্থনীতিবিদ সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসিকে বলেন, “৭৪ শতাংশের বিপরীতে ৩৭ শতাংশ কীভাবে এলো” বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেলও একইভাবে ব্যাখ্যা করছেন।

তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন এই ৭৪ শতাংশ শুল্কের বিষয়টি কিভাবে নির্ধারণ করেছে, তা জানি না। এটি বাংলাদেশ সরকারের হিসাব নয়। যুক্তরাষ্ট্র ওখানে অনেককিছু যোগ করেছে।”

যদিও গত বুধবার শুল্ক ঘোষণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যারা আমেরিকান পণ্যের ওপর অসম শুল্ক আরোপ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের ওপর এই পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে।

তবে, মি. ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক অন্যদের আরোপিত শুল্কের ‘প্রায় অর্ধেক’।

“সুতরাং, সেই হিসাবে পুরোপুরি পাল্টা শুল্ক হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, আমি তা করতে পারতাম। কিন্তু এটি করলে অনেক দেশের জন্য কঠিন হয়ে যেত। আমি তা করতে চাইনি,” বলেন মি. ট্রাম্প।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে?

অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্ক বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে আঘাত হানবে। এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে যাবে।

যুযক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের কাছে দাম বেশি হলে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে । ফলে, তখন সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

তবে শুল্ক আরোপের কারণে শুধু বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে না। এতে করে “যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বেড়ে গেছে, এই কারণে তাদের জিডিপি কমে যাবে” বলে বিবিসিকে বলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

“একদিকে তাদের আয় কমবে, অন্যদিকে দাম বাড়বে। মার্কিন ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাবে। এর একটি প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়বে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপেও চাহিদা কমে যাবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

জাহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে তৈরি পোশাকই রপ্তানি হয়েছে ৭৪০ কোটি ডলারের।

এর বাইরে ব্যাগ, প্লাস্টিক, জুতা, কৃষিপণ্যও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে।

সাধারণত বাংলাদেশ থেকে যে ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করে, “তা কম দামী। কারণ এখানে শ্রমিক খরচ কম। কিন্তু এই নতুন আরোপ করা শুল্কের কারণে তখন একই পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়ে যাবে,” বলেউল্লেখ করেন খান্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যের সিংহভাগ জায়গা দখল করে আছে তৈরি পোশাক খাত। ফলে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করায়এর প্রভাব বেশি পড়বে পোশাক খাতে।

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরাও পরিস্থিতিটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে এসেছেই সস্তা শ্রম ও মূল্যের জন্য। যেখানে সস্তা পাবে, সেখানেই তারা যাবে। এটাই তাদের ব্যবসা। ব্র্যান্ডগুলো কখনোই চাইবে না যে বেশি টাকায় পণ্য কিনুক। সুতরাং, বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে গেলে মার্কিন “বায়াররা বিকল্প খুঁজবে।”

এক্ষেত্রে, তাদের জন্য সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে কেনিয়া, মিশর কিংবা হন্ডুরাসের মতো দেশ। কারণ ওই দেশগুলোতে শুল্কের হার ১০ শতাংশ এবং ওগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাছেও। এতে তৈরি পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এই খাত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল, মনে করেন মহিউদ্দিন রুবেল।

“আমাদের ইউরোপের কথাও মাথায় রাখতে হবে। দুই মার্কেটেই একই ঘটনা ঘটলে আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না,” যোগ করেন মি. রুবেল।

যা বলছে সরকার, সমাধান কোথায়

যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের পর বাংলাদেশে আমদানি করা মার্কিন পণ্যের শুল্কহার পর্যালোচনা করার কথা বলেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ইস্যু সমাধানে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে দূঢ় আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’

আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকক থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে বাসসকে এ কথা বলেন।

এছাড়া শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্কহার পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ।

শফিকুল আলম এ-ও লিখেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্রুততম সময়ে শুল্ক যৌক্তিককরণের বিকল্পগুলো খুঁজে বের করবে, যা এ বিষয়ে কার্যকর সমাধানের জন্য জরুরি।”

এদিকে, অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, বাংলাদেশের এখন স্বল্পমেয়াদী আর দীর্ঘমেয়াদী, দুই ধরনের করণীয় আছে। দীর্ঘমেয়াদী’র মাঝে একটি করণীয় হলো – নির্দিষ্ট কোনও দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।

তবে আপাতত দ্রুত দর কষাকষিতে যেতে হবে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক নিয়ে।

কারণ যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে তুলা আমদানিতে শূন্য এবং তুলার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম বৃহৎ আমদানিকারক দেশ হলো বাংলাদেশ।

“তাই, আমরা তাদেরকে বলতে পারি যে এই তুলা ব্যবহার করেই তৈরি পোশাক প্রস্তুত করে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করছি, আমাদের তৈরি পোশাকের মাঝে মার্কিন পণ্য নিহিত আছে,” বলেন সিপিডি’র মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি উল্লেখ করেন, “মার্কিন পণ্য ব্যবহার করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে, তাদের সাথে কিছুটা শৈথিল্য দেখানোর কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই, এ ব্যাপারে আমরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতে পারি।”

তবে যেহেতু শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিভিন্ন দেশের প্রতি এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, অন্যান্য দেশ কোন ধরনের কৌশল নেয়, সেটাও দেখার বিষয় রয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “একেক দেশ একেকভাবে কৌশল অবলম্বন করবে। চীন এই অতিরিক্ত শুল্কের উত্তর হিসাবে অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক বসাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও হয়তো একই পথে যাবে। বাংলাদেশকেও চিন্তা-ভাবনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত এই শুল্ক নীতি টিকে থাকলে বাংলাদেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জানিয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “এই পলিসি না-ও টিকতে পারে। কারণ যাদের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তারা বলছে যে আমরাও ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

কিন্তু এই নীতির পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি। কারণ এই নতুন আরোপিত শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর হতে যাচ্ছে।

“তাই, যে পণ্যগুলো এখনও জাহাজে আছে, বন্দরে পৌঁছায়নি বা বন্দরে পৌঁছালেও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স হয়নি, ওগুলোর ওপরও এই নতুন শুল্ক আরোপ হবে। আর যেগুলো উৎপাদনে আছে, সেগুলোর ওপরও নতুন শুল্ক প্রযোজ্য হবে,” বলেন জাহিদ হোসেন।

এক্ষেত্রে বায়ারদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ওপর দাম কমানোর চাপ আসবে বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।

জাহিদ হোসেন বলেন, “এখানে অন্য দেশগুলোর কৌশল পর্যবেক্ষণ করে আমাদের যৌথভাবে সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে, যেন আমাদের ওপর এই বোঝা না চাপানো হয়।”

সূত্র: বিবিসি বাংলা

খুলনা গেজেট/ টিএ

The post মার্কিন শুল্ক, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটুকু প্রভাব পড়বে appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

মার্কিন শুল্ক, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটুকু প্রভাব পড়বে

Update Time : 02:06:36 am, Friday, 4 April 2025

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, এর প্রভাব নিয়ে ঢাকায় চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। অর্থনীতিবিদদের অনেকে বলছেন, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে।

যুক্তরাষ্ট্র এটাকে রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, যেসব দেশ এতদিন মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক নির্ধারণ করে রেখেছিলো, সেইসব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউজের প্রকাশিত তালিকায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ নতুন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

আগামী নয়ই এপ্রিল থেকে এই উচ্চতর শুল্ক আরোপ শুরু হবে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ।

অর্থাৎ, নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে এখন থেকে গড়ে ৫২ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে, বলছেন ঢাকায় অর্থনীতিবিদদের অনেকে।

এছাড়া, বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ শুল্ক রয়েছে বলে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদেরা।

তাদের মতে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর গড়ে সাত থেকে আট শতাংশ শুল্ক আরোপ করে থাকে।

এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র কী কারণে বা কিসের ভিত্তিতে ৭৪ শতাংশ শুল্কের কথা বলছে, সে বিষয়টি দ্রুত স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্কহার পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক নিয়ে প্রশ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ, যা ইউএসটিআর নামে পরিচিত, তাতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক এক হাজার ৬০ কোটি ডলার।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের মত।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে– কৃষিপণ্য যেমন, খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম এবং ভুট্টা। এছাড়া যন্ত্রপাতি এবং লোহা ও ইস্পাত পণ্যওআসে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে, তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী ও কৃষিপণ্য।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর খুবই কম শুল্ক আরোপ করে।

“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে অতিরিক্ত শুল্ক বসালো, তার যৌক্তিকতা কী? কিভাবে তারা এই ৭৪ শতাংশের হিসাবটা করলো?” প্রশ্ন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখ করা ৭৪ শতাংশ “শুল্কটা আমাদের নাই” এবং মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশে শুল্ক “খুবই কম” বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলছে যে তারা এখানে শুধু শুল্ক বিবেচনায় নেয়নি। এক্সচেঞ্জ রেট পলিসি, ট্রেড পলিসি এগুলোও বিবেচনায় নিয়েছে।”

“ওগুলো বিবেচনায় নিলেও” ৭৪ শতাংশ শুল্ক হারের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়ে যায় বলে মত তার।

এই অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২৪ সালে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, এর বড় অংশই ছিল তুলা। বাংলাদেশে তুলার ওপর আমদানি শুল্ক ছিল শূন্য।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে লোহা ও পেট্রোলিয়াম আমদানি করা হয়েছে, যেগুলোর আমদানি শুল্ক যথাক্রমে শূন্য ও ৩১ শতাংশ।

“সব মিলিয়ে গড়ে আমদানি শুল্ক হয় সাত-আট শতাংশ হবে,” যোগ করেন তিনি।

আরেকজন অর্থনীতিবিদ সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসিকে বলেন, “৭৪ শতাংশের বিপরীতে ৩৭ শতাংশ কীভাবে এলো” বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেলও একইভাবে ব্যাখ্যা করছেন।

তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন এই ৭৪ শতাংশ শুল্কের বিষয়টি কিভাবে নির্ধারণ করেছে, তা জানি না। এটি বাংলাদেশ সরকারের হিসাব নয়। যুক্তরাষ্ট্র ওখানে অনেককিছু যোগ করেছে।”

যদিও গত বুধবার শুল্ক ঘোষণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যারা আমেরিকান পণ্যের ওপর অসম শুল্ক আরোপ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের ওপর এই পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে।

তবে, মি. ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক অন্যদের আরোপিত শুল্কের ‘প্রায় অর্ধেক’।

“সুতরাং, সেই হিসাবে পুরোপুরি পাল্টা শুল্ক হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, আমি তা করতে পারতাম। কিন্তু এটি করলে অনেক দেশের জন্য কঠিন হয়ে যেত। আমি তা করতে চাইনি,” বলেন মি. ট্রাম্প।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে?

অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্ক বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে আঘাত হানবে। এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে যাবে।

যুযক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের কাছে দাম বেশি হলে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে । ফলে, তখন সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

তবে শুল্ক আরোপের কারণে শুধু বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে না। এতে করে “যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বেড়ে গেছে, এই কারণে তাদের জিডিপি কমে যাবে” বলে বিবিসিকে বলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

“একদিকে তাদের আয় কমবে, অন্যদিকে দাম বাড়বে। মার্কিন ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাবে। এর একটি প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়বে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপেও চাহিদা কমে যাবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

জাহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে তৈরি পোশাকই রপ্তানি হয়েছে ৭৪০ কোটি ডলারের।

এর বাইরে ব্যাগ, প্লাস্টিক, জুতা, কৃষিপণ্যও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে।

সাধারণত বাংলাদেশ থেকে যে ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করে, “তা কম দামী। কারণ এখানে শ্রমিক খরচ কম। কিন্তু এই নতুন আরোপ করা শুল্কের কারণে তখন একই পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়ে যাবে,” বলেউল্লেখ করেন খান্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যের সিংহভাগ জায়গা দখল করে আছে তৈরি পোশাক খাত। ফলে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করায়এর প্রভাব বেশি পড়বে পোশাক খাতে।

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরাও পরিস্থিতিটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে এসেছেই সস্তা শ্রম ও মূল্যের জন্য। যেখানে সস্তা পাবে, সেখানেই তারা যাবে। এটাই তাদের ব্যবসা। ব্র্যান্ডগুলো কখনোই চাইবে না যে বেশি টাকায় পণ্য কিনুক। সুতরাং, বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে গেলে মার্কিন “বায়াররা বিকল্প খুঁজবে।”

এক্ষেত্রে, তাদের জন্য সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে কেনিয়া, মিশর কিংবা হন্ডুরাসের মতো দেশ। কারণ ওই দেশগুলোতে শুল্কের হার ১০ শতাংশ এবং ওগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাছেও। এতে তৈরি পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এই খাত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল, মনে করেন মহিউদ্দিন রুবেল।

“আমাদের ইউরোপের কথাও মাথায় রাখতে হবে। দুই মার্কেটেই একই ঘটনা ঘটলে আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না,” যোগ করেন মি. রুবেল।

যা বলছে সরকার, সমাধান কোথায়

যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের পর বাংলাদেশে আমদানি করা মার্কিন পণ্যের শুল্কহার পর্যালোচনা করার কথা বলেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ইস্যু সমাধানে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে দূঢ় আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’

আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকক থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে বাসসকে এ কথা বলেন।

এছাড়া শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্কহার পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ।

শফিকুল আলম এ-ও লিখেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্রুততম সময়ে শুল্ক যৌক্তিককরণের বিকল্পগুলো খুঁজে বের করবে, যা এ বিষয়ে কার্যকর সমাধানের জন্য জরুরি।”

এদিকে, অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, বাংলাদেশের এখন স্বল্পমেয়াদী আর দীর্ঘমেয়াদী, দুই ধরনের করণীয় আছে। দীর্ঘমেয়াদী’র মাঝে একটি করণীয় হলো – নির্দিষ্ট কোনও দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।

তবে আপাতত দ্রুত দর কষাকষিতে যেতে হবে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক নিয়ে।

কারণ যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে তুলা আমদানিতে শূন্য এবং তুলার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম বৃহৎ আমদানিকারক দেশ হলো বাংলাদেশ।

“তাই, আমরা তাদেরকে বলতে পারি যে এই তুলা ব্যবহার করেই তৈরি পোশাক প্রস্তুত করে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করছি, আমাদের তৈরি পোশাকের মাঝে মার্কিন পণ্য নিহিত আছে,” বলেন সিপিডি’র মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি উল্লেখ করেন, “মার্কিন পণ্য ব্যবহার করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে, তাদের সাথে কিছুটা শৈথিল্য দেখানোর কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই, এ ব্যাপারে আমরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতে পারি।”

তবে যেহেতু শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিভিন্ন দেশের প্রতি এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, অন্যান্য দেশ কোন ধরনের কৌশল নেয়, সেটাও দেখার বিষয় রয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “একেক দেশ একেকভাবে কৌশল অবলম্বন করবে। চীন এই অতিরিক্ত শুল্কের উত্তর হিসাবে অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক বসাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও হয়তো একই পথে যাবে। বাংলাদেশকেও চিন্তা-ভাবনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত এই শুল্ক নীতি টিকে থাকলে বাংলাদেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জানিয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “এই পলিসি না-ও টিকতে পারে। কারণ যাদের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তারা বলছে যে আমরাও ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

কিন্তু এই নীতির পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি। কারণ এই নতুন আরোপিত শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর হতে যাচ্ছে।

“তাই, যে পণ্যগুলো এখনও জাহাজে আছে, বন্দরে পৌঁছায়নি বা বন্দরে পৌঁছালেও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স হয়নি, ওগুলোর ওপরও এই নতুন শুল্ক আরোপ হবে। আর যেগুলো উৎপাদনে আছে, সেগুলোর ওপরও নতুন শুল্ক প্রযোজ্য হবে,” বলেন জাহিদ হোসেন।

এক্ষেত্রে বায়ারদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ওপর দাম কমানোর চাপ আসবে বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।

জাহিদ হোসেন বলেন, “এখানে অন্য দেশগুলোর কৌশল পর্যবেক্ষণ করে আমাদের যৌথভাবে সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে, যেন আমাদের ওপর এই বোঝা না চাপানো হয়।”

সূত্র: বিবিসি বাংলা

খুলনা গেজেট/ টিএ

The post মার্কিন শুল্ক, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটুকু প্রভাব পড়বে appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.