11:44 am, Tuesday, 15 April 2025
Aniversary Banner Desktop

মুক্তিযুদ্ধে যশোরে গণহত্যা দিবস আজ, শহীদ হন ৫১ জন

যশোরের ইতিহাসে আজ ৪ এপ্রিল এক বেদনাবিধুর দিন, গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা যশোর শহর জুড়ে চালায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। টার্গেট করা হয় রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, ছাত্র, পেশাজীবী এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে। শহীদ হন ৫১ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, যশোরে ৪ এপ্রিলের হত্যাযজ্ঞে শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা ৫১ জনের চেয়ে অনেক বেশি। যদিও ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ মাত্র কয়েকজনকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাকিদের এখনো মেলেনি কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ বা স্মারকও।

১৯৭১ সালের মার্চ থেকেই যশোরে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি তুঙ্গে ওঠে। এপ্রিলের শুরুতে সেই প্রস্তুতিকে দমন করতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শুরু করে নৃশংস হত্যার অভিযান। ৪ এপ্রিল যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাক সেনারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায়। সবচেয়ে নির্মম ঘটনা ঘটে যশোর রেলস্টেশন মাদরাসা প্রাঙ্গণে, যা ‘মাদরাসা ট্র্যাজেডি’ নামে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শেখ আব্দুর রহিম জানান, ফজরের নামাজ শেষে কোরআন পাঠরত মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ওপর হঠাৎই পাক সেনারা এবং স্থানীয় বিহারিরা আক্রমণ চালায়। মাদরাসার বড় হুজুর আবুল হাসান যশোরী বাধা দিতে গেলে তাকে পাকিস্তানের শত্রু আখ্যা দিয়ে গুলি চালানো হয়। এখানে নিহত হন অন্তত ২৩ জন, যাদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় জানা গেলেও ৭ জন আজও অজ্ঞাত।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাহের উদ্দিন, এবিএম আব্দুল হামিদ, এবিএম কামরুজ্জামান, কাজী আব্দুল গণি ও তার ছেলে, শিক্ষক আইয়ুব হোসেন, মাওলানা হাবিবুর রহমান (কাঠি হুজুর), শিক্ষক আব্দুর রউফ, ছাত্র আতিয়ার রহমান, লিয়াকত আলী, মাস্টার আব্দুর রফিক এবং আরো অনেকে।

একইদিনে শহরের গুরুদাসবাবু লেনে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আমীর আলী ও তার তিন ছেলেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। শহরের ক্যাথলিক গির্জায় হামলা চালিয়ে ইতালিয়ান ফাদার মারলো ভারনেসিসহ ৬ জনকে হত্যা করে পাক হানাদাররা।

এদের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি পেয়েছেন শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান, আব্দুর রউফ ও অ্যাড. সৈয়দ আমীর আলী। তবে শহীদদের বেশিরভাগই এখনো রয়ে গেছেন স্বীকৃতির বাইরে।

এছাড়া, একই দিনে শহরের বিভিন্ন স্থানে নিহত হন ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মোছাদ্দেদ আলী, ওমর ফারুক, নিখিল রায়, নাসিরুল আজিজ, অধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলী, ম্যাজিস্ট্রেট রহমতউল্লাহ, ইপিআর সদস্য আব্দুল মান্নান, ডা. নাসির উদ্দিন ও তার স্ত্রী, চিত্রশিল্পী আমিনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

শহীদ অ্যাডভোকেট আমীর আলীর ছেলে সাংবাদিক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন আলম জানান, তার বাবার নাম বার কাউন্সিল ও জেলা আইনজীবী সমিতির তালিকায় রয়েছে শহীদ আইনজীবী হিসেবে এবং তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবেও স্বীকৃত।

যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই যশোর গণহত্যার শহীদদের স্বীকৃতি ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আজো বাস্তবায়ন হয়নি। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

নৃশংস এ দিবসটি উপলক্ষে বাম গণতান্ত্রিক জোট এদিন বেলা ১১টায় কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ ও শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে ৬ এপ্রিল যশোর প্রেসক্লাবে বিকেল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।

খুলনা গেজেট/এনএম

The post মুক্তিযুদ্ধে যশোরে গণহত্যা দিবস আজ, শহীদ হন ৫১ জন appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

মুক্তিযুদ্ধে যশোরে গণহত্যা দিবস আজ, শহীদ হন ৫১ জন

Update Time : 03:08:46 pm, Friday, 4 April 2025

যশোরের ইতিহাসে আজ ৪ এপ্রিল এক বেদনাবিধুর দিন, গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা যশোর শহর জুড়ে চালায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। টার্গেট করা হয় রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, ছাত্র, পেশাজীবী এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে। শহীদ হন ৫১ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, যশোরে ৪ এপ্রিলের হত্যাযজ্ঞে শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা ৫১ জনের চেয়ে অনেক বেশি। যদিও ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ মাত্র কয়েকজনকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাকিদের এখনো মেলেনি কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ বা স্মারকও।

১৯৭১ সালের মার্চ থেকেই যশোরে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি তুঙ্গে ওঠে। এপ্রিলের শুরুতে সেই প্রস্তুতিকে দমন করতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শুরু করে নৃশংস হত্যার অভিযান। ৪ এপ্রিল যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাক সেনারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায়। সবচেয়ে নির্মম ঘটনা ঘটে যশোর রেলস্টেশন মাদরাসা প্রাঙ্গণে, যা ‘মাদরাসা ট্র্যাজেডি’ নামে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শেখ আব্দুর রহিম জানান, ফজরের নামাজ শেষে কোরআন পাঠরত মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ওপর হঠাৎই পাক সেনারা এবং স্থানীয় বিহারিরা আক্রমণ চালায়। মাদরাসার বড় হুজুর আবুল হাসান যশোরী বাধা দিতে গেলে তাকে পাকিস্তানের শত্রু আখ্যা দিয়ে গুলি চালানো হয়। এখানে নিহত হন অন্তত ২৩ জন, যাদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় জানা গেলেও ৭ জন আজও অজ্ঞাত।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাহের উদ্দিন, এবিএম আব্দুল হামিদ, এবিএম কামরুজ্জামান, কাজী আব্দুল গণি ও তার ছেলে, শিক্ষক আইয়ুব হোসেন, মাওলানা হাবিবুর রহমান (কাঠি হুজুর), শিক্ষক আব্দুর রউফ, ছাত্র আতিয়ার রহমান, লিয়াকত আলী, মাস্টার আব্দুর রফিক এবং আরো অনেকে।

একইদিনে শহরের গুরুদাসবাবু লেনে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আমীর আলী ও তার তিন ছেলেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। শহরের ক্যাথলিক গির্জায় হামলা চালিয়ে ইতালিয়ান ফাদার মারলো ভারনেসিসহ ৬ জনকে হত্যা করে পাক হানাদাররা।

এদের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি পেয়েছেন শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান, আব্দুর রউফ ও অ্যাড. সৈয়দ আমীর আলী। তবে শহীদদের বেশিরভাগই এখনো রয়ে গেছেন স্বীকৃতির বাইরে।

এছাড়া, একই দিনে শহরের বিভিন্ন স্থানে নিহত হন ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মোছাদ্দেদ আলী, ওমর ফারুক, নিখিল রায়, নাসিরুল আজিজ, অধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলী, ম্যাজিস্ট্রেট রহমতউল্লাহ, ইপিআর সদস্য আব্দুল মান্নান, ডা. নাসির উদ্দিন ও তার স্ত্রী, চিত্রশিল্পী আমিনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

শহীদ অ্যাডভোকেট আমীর আলীর ছেলে সাংবাদিক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন আলম জানান, তার বাবার নাম বার কাউন্সিল ও জেলা আইনজীবী সমিতির তালিকায় রয়েছে শহীদ আইনজীবী হিসেবে এবং তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবেও স্বীকৃত।

যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই যশোর গণহত্যার শহীদদের স্বীকৃতি ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আজো বাস্তবায়ন হয়নি। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

নৃশংস এ দিবসটি উপলক্ষে বাম গণতান্ত্রিক জোট এদিন বেলা ১১টায় কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ ও শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে ৬ এপ্রিল যশোর প্রেসক্লাবে বিকেল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।

খুলনা গেজেট/এনএম

The post মুক্তিযুদ্ধে যশোরে গণহত্যা দিবস আজ, শহীদ হন ৫১ জন appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.