4:53 pm, Friday, 11 April 2025
Aniversary Banner Desktop

ব্যাংককে মোদির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইনে ড. ইউনূস

সোনালী ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ব্যাংককে সাংরি লা হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই নেতা ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা’ এবং ‘অভিন্ন উন্মুক্ত আলোচনা’র জন্য একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। তাদের মধ্যে ৪০ মিনিট ধরে আলোচনা হয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, তাদের বিনিময় ছিল ‘অকপট, ফলপ্রসূ এবং গঠনমূলক’।

প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্ব পরস্পর সম্পর্কের ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়ে ভারতের সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। প্রফেসর ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, গত আট মাস ধরে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রফেসর ইউনূস বলেন, আমাদের উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে সম্পর্ককে সঠিক পথে নিয়ে যেতে আমরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে চাই। বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণকারী প্রফেসর ইউনূস সংস্থাটির সাত সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির জন্য ভারতের সমর্থনও কামনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ও  তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে তিনি গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনে আলোচনার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করায় প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং তিনি তাকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছাও জানান। নয়াদিল্লি সবসময়ই ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দিয়ে আসছে উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস ওৎপ্রোতভাবে জড়িত এবং এটি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই।

প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রফেসর ইউনূসের আন্তর্জাতিক মর্যাদার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারত সব সময় প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করবে। ভারত বাংলাদেশের বিশেষ কোনও দলকে সমর্থন করে না উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক মানুষে-মানুষে’।

এসময় নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রফেসর ইউনূস। তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, যা ভারতের আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে আসছেন। আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি, তিনি যতদিন আপনার দেশে থাকবেন ততদিন তাকে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিন। প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্টের উদ্ধৃতিও দেন, যেখানে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে যে বিক্ষোভ-সম্পর্কিত ১ হাজার ৪০০ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু ছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে হত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার মতো যৌক্তিক ভিত্তিও প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং নির্দিষ্টভাবে তাদের চক্রের নেতাদের গ্রেপ্তার করা, তাদের হত্যা করা এবং তাদের লাশ লুকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর জবাবে শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে টানাপোড়েনের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ভারত শুধু দেশের সঙ্গে আছে, কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে নয়। প্রফেসর ইউনূস সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, প্রাণহানির সংখ্যা হ্রাসে একসঙ্গে কাজ করা কেবল অনেক পরিবারেরই বড় যন্ত্রণা রক্ষা করবে না, বরং আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতেও সহায়তা করবে। এসব হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে উপায় খুঁজে বের করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যখন এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে তখন আমি সবসময় কষ্ট পাই। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী শুধু আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

দুই নেতা এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রফেসর ইউনূস বিমসটেকে বাংলাদেশের সভাপতিত্ব নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমসটেকের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি করতে চায় এবং আশা করে যে সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য একটি দক্ষ পথ প্রদানের মাধ্যমে এই অঞ্চলের জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম একটি কার্যকর ও গতিশীল সত্তা হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্বেগের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনগুলো ব্যাপকভাবে ফুলে ফেঁপে করা হয়েছে এবং এর বেশিরভাগই ভুয়া খবর। তিনি ভারতের এই নেতাকে কথিত হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশে সাংবাদিক পাঠানোর আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গ সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তার সরকার এ ধরনের ঘটনা রোধে গুরুতর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

উভয় নেতা একে অপরের সুস্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত মঙ্গল কামনা করে তাদের ফলপ্রসূ ও সৎ সংলাপ শেষ করেন এবং উভয় দেশের জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

The post ব্যাংককে মোদির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইনে ড. ইউনূস appeared first on সোনালী সংবাদ.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

ব্যাংককে মোদির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইনে ড. ইউনূস

Update Time : 04:08:04 am, Saturday, 5 April 2025

সোনালী ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ব্যাংককে সাংরি লা হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই নেতা ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা’ এবং ‘অভিন্ন উন্মুক্ত আলোচনা’র জন্য একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। তাদের মধ্যে ৪০ মিনিট ধরে আলোচনা হয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, তাদের বিনিময় ছিল ‘অকপট, ফলপ্রসূ এবং গঠনমূলক’।

প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্ব পরস্পর সম্পর্কের ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়ে ভারতের সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। প্রফেসর ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, গত আট মাস ধরে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রফেসর ইউনূস বলেন, আমাদের উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে সম্পর্ককে সঠিক পথে নিয়ে যেতে আমরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে চাই। বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণকারী প্রফেসর ইউনূস সংস্থাটির সাত সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির জন্য ভারতের সমর্থনও কামনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ও  তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে তিনি গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনে আলোচনার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করায় প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং তিনি তাকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছাও জানান। নয়াদিল্লি সবসময়ই ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দিয়ে আসছে উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস ওৎপ্রোতভাবে জড়িত এবং এটি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই।

প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রফেসর ইউনূসের আন্তর্জাতিক মর্যাদার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারত সব সময় প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করবে। ভারত বাংলাদেশের বিশেষ কোনও দলকে সমর্থন করে না উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক মানুষে-মানুষে’।

এসময় নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রফেসর ইউনূস। তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, যা ভারতের আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে আসছেন। আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি, তিনি যতদিন আপনার দেশে থাকবেন ততদিন তাকে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিন। প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্টের উদ্ধৃতিও দেন, যেখানে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে যে বিক্ষোভ-সম্পর্কিত ১ হাজার ৪০০ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু ছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে হত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার মতো যৌক্তিক ভিত্তিও প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং নির্দিষ্টভাবে তাদের চক্রের নেতাদের গ্রেপ্তার করা, তাদের হত্যা করা এবং তাদের লাশ লুকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর জবাবে শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে টানাপোড়েনের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ভারত শুধু দেশের সঙ্গে আছে, কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে নয়। প্রফেসর ইউনূস সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, প্রাণহানির সংখ্যা হ্রাসে একসঙ্গে কাজ করা কেবল অনেক পরিবারেরই বড় যন্ত্রণা রক্ষা করবে না, বরং আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতেও সহায়তা করবে। এসব হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে উপায় খুঁজে বের করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যখন এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে তখন আমি সবসময় কষ্ট পাই। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী শুধু আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

দুই নেতা এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রফেসর ইউনূস বিমসটেকে বাংলাদেশের সভাপতিত্ব নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমসটেকের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি করতে চায় এবং আশা করে যে সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য একটি দক্ষ পথ প্রদানের মাধ্যমে এই অঞ্চলের জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম একটি কার্যকর ও গতিশীল সত্তা হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্বেগের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনগুলো ব্যাপকভাবে ফুলে ফেঁপে করা হয়েছে এবং এর বেশিরভাগই ভুয়া খবর। তিনি ভারতের এই নেতাকে কথিত হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশে সাংবাদিক পাঠানোর আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গ সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তার সরকার এ ধরনের ঘটনা রোধে গুরুতর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

উভয় নেতা একে অপরের সুস্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত মঙ্গল কামনা করে তাদের ফলপ্রসূ ও সৎ সংলাপ শেষ করেন এবং উভয় দেশের জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

The post ব্যাংককে মোদির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইনে ড. ইউনূস appeared first on সোনালী সংবাদ.