
দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।

পটুয়াখালীর দশমিনায় মৃত ব্যক্তি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কার্ডের চাল তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কার্ডধারী ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তার চাল কি ভাবে তোলা হচ্ছে তা নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। তবে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জীবিতরা। অপরদিকে আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুরা স্লুলিজ বাজার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ডিলার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত মাসের ২ তারিখ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গনি হাওলাদার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ডিলার নিয়োগ সার্কুলারকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুরা স্লুলিজ বাজারে সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত ডিলার রবিউল ইসলামের নিজস্ব বা ভাড়াটিয়া কোন দোকান না থাকার পরেও কি ভাবে তিনি নিয়োগ পেলেন। ডিলার নিয়োগ আবেদনে ভাড়াটিয়া দোকান দেখানো হয়েছে কালমিয়ার বাজারে। অথচ সেখানে তার কোন দোকান নাই। তিনি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ করেন অস্থায়ী ভাবে স্লুলিজ বাজারের এক দোকানে।তবে স্থানীয়দের দাবী গোপনে উৎকোচের মাধ্যমে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার পেয়েছেন রবিউল ইসলাম। ডিলার রবিউল মৃত্যু ব্যক্তিদের কার্ডের চাল বিতরণ করেন। আমরা জীবিতরা চাল পাইনা আর মৃত্যুদের নামে চাল বিতরন করা হয়। ডিলার রবিউল ইসলামের বিচারের দাবী জানাই।
এদিকে দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের পুর্ব চাঁদপুরা গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক দেওয়ানের ছেলে হানিফ দেওয়ান ৭ মাস আগে মারা গেছেন। অথচ তার কার্ডের চাল মাস্টার রুলে স্বাক্ষর করে তোলা তুলে নিচ্ছেন। একই ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মেলকারের ছেলে ইব্রাহিম চৌকিদার, চাঁদপুরা গ্রামের ১ নম্বর আলতাব হোসেনের সহধর্মিণী ছকিনা বেগম, চাঁদপুরা গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আহম্মেদ হাওলাদারের ছেলে নুরুল হক হাওলাদার ও পুর্ব চাঁদপুরা গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আরশেদ মাতুব্বরের ছেলে খালেক মাতুব্বরের নামের ১৫ টাকা কেজি ধরের চাল বিতরন করা হয়।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের মোট কার্ডের সংখ্যা ১হাজার ৮শ’ ৯৯জন । এর মধ্যে আলীপুর সুলিজ বাজার ৩শ’ ১৬ জন সুবিধাভোগীর নামে তালিকা রয়েছে। এই ডিলারের আওতায় প্রায় ৭জন মৃত্যু ব্যক্তির কার্ড তালিকা ভুক্ত রয়েছে।
৭ মাস পুর্বে নিহত হানিফ দেওয়ানের সহধর্মিণী মোসা. মরিয়ম বেগম জানান, আমার স্বামীর নামের ১৫ টাকার কার্ডের চাল স্লুলিজ বাজার ডিলার রবিউল ইসলামের কাছ থেকে৷ সাড়ে ৪শ’ টাকায় আনছি। আমার স্বামী ৭ মাস আগে মারা যান।
এবিষয়ে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেডলাইসেন্সে দোকান ঘর দেখানো হয়েছে কালমিয়ার বাজারে। অথচ সেখানে তার কোন দোকান নাই। সে চাল বিতরণ করেন অস্থায়ী ভাবে স্লুলিজ বাজারে এক আওয়ামী লীগ নেতার। আমরা পরিষদের সদস্য আমরা জানিনা কিভাবে রবিউল ডিলার নিয়োগ পেলো। সব কিছুর জন্য দায় নিতে হবে ডিলার রবিউল ইসলামকে।
এবিষয়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির স্লুলিজ বাজারের সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত ডিলার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মৃত্যু ব্যক্তিদের বিষয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাকে ফোন করেছিলাম তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দিয়েছেন। আমি মৃত্যু ব্যক্তিদের পরিবারকে কার্ডের চাল দিয়েছি।
এবিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো মাহামুদুল হাসান সিকদার বলেন, সরকারি ভাবে মৃত্যু ব্যাক্তিদের নাম পরিবর্তনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে অনেক আগেই চিঠি দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইরতিজা হাসান জানান, খোঁজ খবর নিয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
The post মৃতব্যক্তি চাল নিচ্ছে, জীবিতরা ফিরে যাচ্ছে appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.