
ভারতবর্ষের মুসলমানদের জন্য একটি লজ্জার আয়না,গাজায় চলমান গণহত্যা ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে ভারতবর্ষের মুসলমানদের সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আবেগময় প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ছে। বারবার উচ্চারিত হচ্ছে একটি বাক্য:
“যদি আমাদের সামর্থ্য থাকতো, গাজার দিকে রওনা দিতাম।”কিন্তু সত্যিই কি সামর্থ্য নেই? নাকি আমাদের সামর্থ্য গিয়েছে ভুল খাতে?
আজকের মুসলমান সমাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মীয় আবেগের নামে পরিচালিত মেগা ইভেন্টগুলোতে। এইসব মাহফিল যেন একেকটি ‘ধর্মীয় বিনোদন অনুষ্ঠান’ হয়ে উঠেছে—যেখানে বড় মঞ্চ, আবেগপূর্ণ বক্তৃতা, ‘পুষ্পবৃষ্টি’ এবং বিশাল অঙ্কের অনুদান একধরনের আত্মতুষ্টির সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে। অথচ সেই একই মানুষ পরদিন ফেসবুকে এসে লিখছেন: “আমরা দায়ী, গাজার এই অবস্থার জন্য।”
এই দায় স্বীকারে যদি একটুও সততা থাকে, তাহলে আমাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে—গত একশো বছরে আমরা কী শিখেছি?
মুসলিম সাম্রাজ্যের পতনের পর বিশ্ব মুসলিম জাতির কর্তব্য ছিল—কোরআন ও সুন্নাহর পাশাপাশি শেখা, কিভাবে আত্মরক্ষার প্রযুক্তি তৈরি করতে হয়। কিভাবে রাষ্ট্র গঠন ও রক্ষা করতে হয়। কিন্তু আমরা শান্তির নামে আত্মসমর্পণ শিখেছি। আমাদের বোঝানো হয়েছে—ইসলাম মানেই প্রতিবাদহীনতা, মাথা নিচু করে থাকা।
হ্যাঁ, ইসলাম অবশ্যই শান্তির ধর্ম। কিন্তু সেই শান্তিকে টিকিয়ে রাখতে হলে দরকার শক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, প্রযুক্তি, কৌশল ও নেতৃত্ব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এসব কিছুতেই আমরা পিছিয়ে রয়েছি।
আজকের প্রজন্মের প্রয়োজন শুধু চোখের পানি নয়, দরকার প্রস্তুতি। যুদ্ধ করতে না পারলেও তৈরি করতে হবে এমন প্রজন্ম, যারা জানবে—কিভাবে মি/সাই/ল বানাতে হয়, কিভাবে আত্মরক্ষা করতে হয়। যারা বুঝবে, প্রার্থনার পাশাপাশি প্রস্তুতিও ফরজ।
ভারতবর্ষের মুসলমানদের আত্মসমালোচনার সময় এখন। শুধুমাত্র আবেগ নয়—প্রয়োজন কার্যকর প্রতিক্রিয়া। দায় স্বীকারের নাটক নয়, দরকার কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করা।
লেখক পরিচিতি: আইউব উদ্দীন শিহাব একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট। তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে লেখালেখি ও গণসচেতনতামূলক কাজ করে থাকেন।
The post শান্তির নামে আত্মসমর্পণ নয়, দরকার আত্মরক্ষা ও অগ্রগতির চেতনা appeared first on Ctg Times.