পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলতেন রশিদ খান। তবে এবার আইপিএল ও পিএসএল একই সময়ে বলে আফগানিস্তানের এই তারকা লেগস্পিনার বেছে নিয়েছেন আইপিএলকে। তবে লাহোর পেয়েছে রশিদের মতোই আরেকজন লেগস্পিনারকে- রিশাদ হোসেন। শুধু নামই কাছাকাছি নয়, কাজেও দুজনের ব্যাপক মিল রয়েছে। রিশাদকে দেখে তাই রশিদের কথাই মনে হচ্ছে ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংসের।
পিএসএলেআর দশম আসরে লাহোর কালান্দার্সে রিশাদের সতীর্থ ৩৩ বছর বয়সী স্যাম বিলিংস। শাহীন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন দলে রিশাদের মতো তিনিও হয়ে উঠেছেন গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য। রিশাদের সাথে পিএসএলে প্রথম দেখা হলেও এমন একজন সতীর্থ পেয়ে বিলিংস যে কতটা উচ্ছ্বসিত, তা সংবাদ সম্মেলনেই স্পষ্ট। করাচি কিংসকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসেই রিশাদকে প্রশংসায় ভাসান বিলিংস।
লাহোরের একাদশে মূল ভরসা ছিলেন ডেভিড ভিসা। তবে এই অলরাউন্ডারের ইনজুরিতে দ্বিতীয় ম্যাচে পরখ করা হয় রিশাদকে। লাহোরকে জয়ের কক্ষপথেও ফিরিয়েছেন তিনিই। স্যাম বিলিংসের মুখে তাই মুগ্ধতা, ‘রিশাদের কথা অবশ্যই বলতেই হবে, তার বয়সের একটা ছেলে যেভাবে বোলিং করছে… তার বোলিং আমি সরাসরি এবারই প্রথম দেখছি, তার সঙ্গে খেলছি প্রথমবার… সে সত্যিই অবিশ্বাস্যরকমের অসাধারণ।’
এখন পর্যন্ত যে দুটি ম্যাচ খেলেছেন, দুই ম্যাচেই পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পর বল তুলে দেওয়া হয়েছে রিশাদকে। দুটি ম্যাচেই শিকার করেছেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি করে উইকেট। ৬ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত আছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায়। হয়ে উঠেছেন দলের স্বীকৃত শিকারি, যিনি পূরণ করছেন গেল মৌসুমের রশিদ খানের অভাব। বিলিংস নিজেই রিশাদকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তুলে আনলেন রশিদের প্রসঙ্গ।
ইংল্যান্ডের হয়ে ৬৮ ম্যাচ খেলা বিলিংস বলেন, ‘এই ফরম্যাটে এমন একজন রিস্ট স্পিনার খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে আমাদের জন্য মিডল ওভারে উইকেট টেকিং অপশন। দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছে। গত বছর আমাদের দলে মিডল ওভারে রশিদ খান ছিল। এবং এমন একজন পেস বোলারদের খুবই সহায়তা করে। রিশাদ আমাদের পেস বোলারদের সহায়তা করছে, নিজেও দারুণ ভূমিকা পালন করছে। এবং ভালো লাগছে যে, পেসাররাও তাদের সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগাচ্ছে।’
প্রথম ম্যাচে একাদশে সুযোগ হয়নি রিশাদের। সেই ম্যাচে লাহোর পাত্তাই পায়নি ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কাছে। তবে রিশাদ একাদশে ফেরার পরের দুই ম্যাচে পেয়েছে যথাক্রমে ৭৯ রান ও ৬৫ রানের বিশাল দুই জয়, তাও কোয়েট্টা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও করাচি কিংসের মতো দলের বিপক্ষে। সব মিলে রিশাদ যেন শাহীন-বিলিংসদের জন্য হয়ে উঠেছেন আশীর্বাদ।
ড্রেসিংরুমেও রিশাদ দারুণ জনপ্রিয়, সেটাও বোঝা গেল লাহোর কালান্দার্সের অফিসিয়াল ফেসবুক থেকেই। লাহোর কালান্দার্সের মালিকানায় থাকা সামিন রানা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বাংলাদেশি এই তারকাকে। ম্যাচশেষে ড্রেসিংরুমে রিশাদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমার বাংলাদেশি ভাই কই? আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি এই মুহূর্তে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। আর আমি আশাকরি টুর্নামেন্ট যখন শেষ হয়ে আসবে তুমি সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি থাকবে।’
দলকে জয় এনে দেয়া এমন বোলিং পারফরম্যান্সের পর রিশাদকে নিয়ে স্তুতি ঝরল লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহীন আফ্রিদির কণ্ঠেও। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বাংলাদেশি স্পিনারকে নিয়ে বলেন, ‘রিশাদ বাংলাদেশের হয়ে ভালো পারফর্ম করে এসেছে। সে ওদের ভবিষ্যতের তারকা। মাঝের ওভারগুলোতে দারুণ বোলিং করছে। তাদের (করাচি কিংস) মিডল অর্ডারকে কোনো সুযোগ দেয়নি।’
The post রিশাদকে রশিদের সাথে তুলনা ইংলিশ তারকার appeared first on Bangladesher Khela.