নেছারাবাদ ((পিরোজপুর) প্রতিনিধি:

পিরোজপুর নেছারাবাদের বলদিয়া-মলুহার খালের উপর নির্মিত সংযোগ কাঠেরপুল দুর্বৃত্তদের হাতে ভাঙ্গার প্রতিবাদে ও পূর্ণনির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের চামী বাইতুস সালাম জামে মসজিদ ও চামী মোসলেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, গত (৩ মার্চ) সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় একতা বাজারে মো. কালাম মুন্সি নামে এক ব্যক্তি ঘুরতে আসলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দোকানদার মো. ইয়াকুব আলী কবিরাজ ও তার ছেলে মো. খোকন কবিরাজের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এক পর্যায়ে মো. ইয়াকুব আলী কবিরাজ ও তার ছেলে মো. খোকন কবিরাজ মিলে ঘুরতে আসা মো. কালাম মুন্সিকে বেদম মারধর করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মো. কালাম মুন্সির ভাই মো. কাইয়ুম এর নেতৃত্বে তার সহযোগী মো. হারুন, মো. মোস্তফা, মো. হাসান ও মো. খলিল খালের উপর নির্মিত কাঠেরপুল ভেঙে ফেলে। পরবর্তীতে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বিচারের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা কাঠেরপুল পুনঃনির্মাণের জন্য ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানাকৃত টাকা দিয়ে কাঠেরপুল পুনঃনির্মাণ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে এলাকাবাসীরা জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসীরা জানান, গ্রামবাসীদের উদ্যোগে নির্মিত কাঠেরপুলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নেছারাবাদ ও বানারীপাড়া উপজেলার সংযোগের অন্যতম সংযোগ সাঁকো এটি। এখান থেকে শত শত লোক প্রতিদিন চলাচল করে। পাশেই স্থানীয় চামী ও একতা বাজার অবস্থিত, এছাড়াও কাঠেরপুলটির পাস ঘেঁষে মসজিদ ও মাদ্রাসা থাকায় চার শতাধিক ছাত্রছাত্রীরা এই কাঠেরপুল থেকে যাতায়াত করে। একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম এই কাঠেরপুলটির পুনঃনির্মাণের জন্য স্থানীয় লোকজন ও সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করছেন তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত চামী মোসলেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির একপর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে কাঠেরপুলটি ভেঙে ফেলেছে প্রতিপক্ষরা। এনিয়ে স্থানীয় দোকানদার মো. খোকন কবিরাজ পুলটি পুনঃনির্মাণের জন্য বিশ হাজার টাকা জরিমানা দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুলের কাজ শুরু করেনি। আমাদের মাদ্রাসার প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীরা এখান থেকে চলাচল করে। দুর্ঘটনার ভয়ে তারা এখন নিয়মিত স্কুলে আসে না। কাঠেরপুলটি পুনঃনির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. কাইয়ুম মুন্সীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে তার ভাই মো. কালাম মুন্সির সাথে বাজারে দেখা হলে তিনি জানান, গত ৩ মার্চ রোজার দ্বিতীয় দিন আমাকে মো. ইয়াকুব আলী কবিরাজ ও তার ছেলে মো. খোকন কবিরাজ বাজারে বসে বেদম পিটিয়েছে। এর আমি বিচার চাই। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনগুরুত্বপূর্ণ কাঠেরপুলটি ভেঙে ফেলা ঠিক হয়নি। আমি মার খেয়েছি তাতে আমার দুঃখ নেই কিন্তু কাঠেরপুলটি পুনঃনির্মাণের জন্য তাদেরকে বলেছি। তারা কথা শুনছে না।
এ বিষয়ে বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুল ইসলাম সাইদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কাঠেরপুলটি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী থাকায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা আদায়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় কোন ঘটনা ঘটনার আগে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে এক করার উদ্যোগ গ্রহণ করব।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা গণস্বাক্ষর দিয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। মারামারির বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এবং কাঠেরপুলটি পুনঃনির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
The post নেছারাবাদে দুর্বৃত্তদের হাতে কাঠেরপুল ভাঙ্গার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.