দিগন্তজোড়া সোনালি ধান, চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর সবুজের মিতালি। তেরখাদা উপজেলার মাঠজুড়ে এখন এমনই চিত্র। কৃষকের স্বপ্নের সোনার ধান পেকেছে, কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এতে করে বোরো চাষিদের মাঝে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি ৮শ’ টাকা। সঙ্গে দু’বেলা খাবার। এতে গৃহস্থের খরচ পড়ছে এক হাজারের উপরে। বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর তেরখাদাতে ৮ হাজার ৯৪৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাত যেমন- হীরা ২, ৯ ধান, সুবর্ণ ৩, ১২ ও নতুন জাত গোল কাজল ধানের চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের কৃষকরা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ মেনে উন্নত জাতের ধান চাষ করেছেন। ফলে ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে আগাম ধান পাকা ও কাটা শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো ফসল প্রস্তুত হয়ে যাবে ঘরে তোলার জন্য। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে ধানকাটার শ্রমিক সংকটে। বর্ধিত মজুরির পরও মিলছে না পর্যাপ্ত শ্রমিক। দিনে ৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিলেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি অন্যান্য জেলা থেকেও এবার তেমনভাবে শ্রমিক আসেনি। ফলে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটতে শুরু করেছেন।
বারাসাত ইউনিয়নের ইখড়ি এলাকার কৃষক জলিল বলেন, এ বছর হীরা-২ জাতের ধান চাষ করেছি, ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু ধানকাটার শ্রমিক পাচ্ছি না। সদর ইউনিয়নের পানতিতা এলাকার কৃষক রুয়েল মোল্লা বলেন,পাকা ধান মাঠে পড়ে আছে, কিন্তু শ্রমিক নেই। তাপমাত্রা এত বেশি যে কাজ করা কঠিন। ঝড়-বৃষ্টির আগে ধান ঘরে তুলতে পারব কি না তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায় আছি। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শিউলি মজুমদার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে নতুন জাতের ধানের বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। শ্রমিক সংকট কিছু এলাকায় থাকলেও মেশিনের মাধ্যমে ধানকাটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত ধান কেটে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/এমএনএস
The post শ্রমিক সংকটের হতাশায় তেরখাদার বোরাে চাষিরা appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.