পিরোজপুর প্রতিনিধি:

লিফট না থাকায় পিরোজপুরের ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের বেশি সময় পার হলেও ভবনটি এখনো চালু করতে পারেনি গণপূর্ত বিভাগ। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার প্রায় ১৬ লাখ মানুষ।

বর্তমানে পিরোজপুরের ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। অতিরিক্ত রোগীর কারণে অনেককে থাকতে হচ্ছে মেঝে ও বারান্দায়। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

পিরোজপুর মহাকুমা থেকে জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১৯৮৬ সালে। তখন ৩১ শয্যার হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলেও ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয় ৫০ শয্যার নতুন ভবন। ২০০৫ সালে সেটি ১০০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে ঘোষিত হয়।

যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এখানে আসতে চাইতেন না। ফলে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও খুলনা বা বরিশালে যেতে হতো। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এই চাহিদা বিবেচনায় ২০১৭ সালে এটি ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হয়।

নতুন সাততলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় দরপত্রের মাধ্যমে, পরে আরও দুইতলা সম্প্রসারণ করা হয়। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তিন দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ শেষ হয়।

তবে লিফট না থাকায় ভবনটি এখনো হস্তান্তর করা যায়নি। এতে ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকায় বাড়ছে ভোগান্তি।

পিরোজপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবুল খান বলেন, ‘জেলা হাসপাতালটি বছরের পর বছর পরে থাকলেও চালু হয়নি। কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের বরিশাল, খুলনা কিংবা ঢাকায় পাঠানো হয়। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি অর্থেরও অপচয় হয়। দ্রুত হাসপাতালটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ভবন হস্তান্তরে কিছু জটিলতা হয়েছে। তবে অচিরেই সমাধান হবে। লিফটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’

সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ রোগী প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভবনটি দ্রুত হস্তান্তর হলে সেবার মান বাড়বে এবং রোগীদের দুর্ভোগ কমবে।’

প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেসার্স খান বিল্ডার্স ও বঙ্গ বিল্ডার্স লিমিটেড নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করেছে। এটি চালু হলে পিরোজপুরসহ আশপাশের দুটি জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ আধুনিক চিকিৎসাসেবার আওতায় আসবে।

The post লিফটের অভাবে চালু হচ্ছে না পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.