নগর প্রতিনিধি:

বরিশাল মহানগর বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক প্লাস নেতাকর্মী ছাত্রদলের এক কর্মীর বাপ-দাদার ১৪৮ শতাংশ জমি দখল করতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু ফেলেছে। স্থানীয়দের তোপের মুখে পালিয়ে যায় দখল চেষ্টাকারীরা। এমন তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের কর্মী মো. মেহেদি হাসান।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১১ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনকারী মেহেদি হাসান ছাত্রদল কর্মী কিনা ? মুঠোফোনে জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাব্বির হোসেন বলেন, হ্যাঁ মেহেদি ছাত্রদলের একজন কর্মী। বিগত বছরগুলোতে বরিশালে ছাত্রদলের সকল প্রোগ্রামসহ বিএনপির সিংহভাগ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল কর্মী মেহেদি হাসান বলেন, বরিশাল মহানগর কলেজ রোড সংলগ্ন নগরীর ২৮নং ওয়ার্ডস্থ হরিপাশা মৌজায় ১ একর ৪৮ শতাংশ জমি আমি সহ আমার বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তি।

এই জমি নিয়ে আমার পরিবারের ১১ সদস্য বাদি হয়ে গত ২২/০৫/২০১৭ তারিখে ১৮ জনকে বিবাদি করে বরিশাল বিজ্ঞ সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি মোকাদ্দমা দায়ের করেন। বিবাদি পক্ষে ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা (বর্তমানে পলাতক) মাহমুদুল হক খান মামুন ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে আমার পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে নেয়। গত ৫ আগস্টের পর খান মামুন দেশ থেকে পলাতক থাকলেও উক্ত মামলা চলমান রয়েছে।

হঠাৎ চলতি মাসের ৯ মে শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম খান ও মাহফুজুর রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা মশিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে ১০০ থেকে ১২০ জন লোক পাইপ সহ ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আদালতে বিচারাধীন ওই মামলার জমিতে বালি ফেলতে শুরু করে। ঘটনা শুনতে পেয়ে আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু ফেলার কারণ জানতে চাইলে- ওয়ান বিল্ডার্স এর মালিক আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও ভূমিদুস্য মাসুম বিল্লাহ জানায়,

এই জমি এখন মঞ্জু, জসিম ও মাহফুজের। তারাই এই জমির মালিক। তারা এই জমি ভরাট করবে। পরে আমি সহ পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ জানাই। কিছুক্ষণ পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে আমাদের পক্ষে অবস্থান নিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি তিন ব্যক্তিকে চিনতে পারি। যাদের সাথে আমার কথা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসেন একাধিক সাংবাদিক। তাদের কাছে আমি চলমান ঘটনার বক্তব্য দেই। এই ঘটনার পর থেকে ঐ তিন বিএনপি নেতা বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমি বরিশাল এয়ারপোর্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট সহ অন্যায় অত্যাচারের বিচারের পাশাপাশি আমি সহ আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেহেদি ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, খান মামুনের পক্ষ হয়ে তারা জমি দখল করতে এসেছিল। জমির এসএ ও আরএস পরচা আমাদের নামে। কিন্তু কূটকৌশলে খান মামুন বিএস পরচায় তার নাম উঠিয়েছে। যে কারণেই ওই মামলা।

মুঠোফোনে মশিউর রহমান মঞ্জুর বলেন, ঘটনাস্থলে যাওয়া তো দূরের কথা এ ঘটনার পক্ষে বিপক্ষের কারো সাথেই আমার সম্পৃক্ততা নেই। যদি কেউ ১% প্রমাণ করতে পারে তাহলে সকল অপরাধ মেনে নিবো। মূলত, বিএনপির এক নেত্রীর ছত্রছায়ায় পরিকল্পিতভাবে আমার নাম জড়িয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সাথে আমি বিন্দু মাত্র জড়িত নই। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে যে শাস্তি হয় তা মাথা পেতে নিবো।

The post যুবলীগ নেতার পক্ষ হয়ে জমি দখলের চেষ্টায় বরিশালের তিন বিএনপি নেতা appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.