
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কলেজে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ৩ প্রশিক্ষক ও ২ কর্মচারী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকারি বাসভবন ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আগামী শনিবার তাঁদের বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার কথা।
আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীর গতকাল বুধবার সরকারি বাসভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সংযোগ চালু করা হয় এবং আগামী শনিবার ওই পাঁচজনের সরকারি বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, হবিগঞ্জ নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কলেজের তিন প্রশিক্ষক কল্পনা রাণী ঘরামী, সালমা বেগম ও সম্পা রাণী দাশ, উচ্চমান সহকারি মতিউর রহমান এবং অফিস সহকারি সিরাজুল হক সুজন।
তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে গত ১৮ আগস্ট শুরু হওয়া ২০ দফা দাবির ছাত্রআন্দোলন গত বুধবার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। নার্সিং ও মিডওয়াইফারীর শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে কলেজ অভ্যন্তরের মূল ফটকে বসে আন্দোলন করছেন।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী গতকাল দুপুর দেড়টায় কলেজের অভ্যন্তরে সরকারি বাসভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রদের বক্তব্য শোনে। সেখানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ আমিনুল হক সরকার ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোমেন উদ্দিন চৌধুরীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডাঃ মোমেন উদ্দিন চৌধুরী খোয়াইকে জানান, ছাত্র আন্দোলনের মুখে অভিযুক্ত প্রশিক্ষক ও কর্মচারীরা আগামী শনিবার সরকারি কোয়ার্টার ছেড়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে আন্দোলনকারীরা তাঁদের সংযোগগুলো স্বাভাবিক করতে দেয়।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রছাত্রীরা জানায়, নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তর ৪ হাজার ৪১০ টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করেছে। কিন্তু হবিগঞ্জ নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কলেজে অন্যায়ভাবে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি নেওয়া হয়। দুই/তিনশ’ টাকা খরচের মেডিকেল টেস্ট বাবদ টাকা নেওয়া হচ্ছে দেড় হাজার। টাকা দিলেও অনেকের টেস্ট হয়নি। শিক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা উচ্চমান সহকারি মতিউর রহমান ও অফিস সহকারি সিরাজুল হক সুজন একত্রিত করে রাখেন। পরে পাঁচ বন্টন হয়।
এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অকথ্য ভাষার ব্যবহার, পরীক্ষায় অকৃতকার্য করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রতারণা, অন্যায়ের ব্যাপারে মুখ খুললেই ডেকে নিয়ে ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি, মানবিক পরিস্থিতিতে ছুটি চাইলে রূঢ় ব্যবহার এবং আরও নানা ব্যাপারে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে।
এবিএম আফফান খোয়াইকে বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেখে একবার এক প্রশিক্ষক মুসলমান ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে অশান্তি করতে চেয়েছিলেন। হিন্দু শিক্ষার্থীরা প্রার্থনার স্থান চাইলে তিনি এ অপকর্ম করেন। কিন্তু আমরা ছাত্রছাত্রীরা তাঁর ফাঁদে পা দিইনি।’
The post সরকারি বাসা ছাড়তে বাধ্য প্রশিক্ষক ও কর্মচারীরা appeared first on দৈনিক খোয়াই । The Daily Khowai.