ডানপন্থী সরকারগুলো পিতামাতার ভূমিকা প্রত্যাখ্যানকে জন্মহার কমে যাওয়ার জন্য দায়ী করছে। তবে জাতিসংঘের একটি নতুন রিপোর্ট মতে, মানুষ সন্তান চায়, কিন্তু বাধ্য হয়ে পরিবার ছোট রাখছে।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) ২০২৫ সালের; ‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা ও লিঙ্গবৈষম্যের কারণে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সন্তান নিতে পারছে না।

রিপোর্ট অনুযায়ী, উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, চাকরি নিরাপত্তাহীনতা, বাসস্থান খরচ, বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, এবং উপযুক্ত সঙ্গীর অভাব—এসবই মানুষকে তাদের কাঙ্ক্ষিত পরিবার গঠনে বাধা দিচ্ছে।

ইউএনএফপিএ’র নির্বাহী পরিচালক ড. নাটালিয়া ক্যানেম বলেন, ‘এখানে ইচ্ছার ঘাটতি নয়, বরং পছন্দের অভাবই মূল সমস্যা। সেটাই প্রকৃত জন্মহার সংকট।’

ইউগভ পরিচালিত ১৪টি দেশের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি ৫ জনে ১ জন বলেছে তারা চাইলেও কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক সন্তান নিতে পারেনি।

প্রধান প্রতিবন্ধক হলো অর্থনৈতিক চাপ

৩৯% অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, আর্থিক সমস্যার কারণে তারা কম সন্তান নিয়েছেন বা নিতে বাধ্য হবেন।

এছাড়া নারী-পুরুষ উভয়ই বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও যুদ্ধসহ ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তাদের পরিবার ছোট রাখতে বাধ্য করেছে।

ড. ক্যানেম বলেন, ‘অনেক দেশ এখন অতিরিক্ত জনসংখ্যা, শ্রমঘাটতি ও পেনশন খরচ নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু তার সমাধান সন্তান নিতে চাপ দেওয়া নয়।’

চাপ নয়, প্রয়োজন সঠিক সহায়তার

রিপোর্টে আরও বলা হয়, গর্ভপাত বা গর্ভনিরোধের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কিংবা আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা—এগুলো দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হয় না, বরং বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, ‘যখন মানুষ মনে করে তাদের প্রজনন সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তখন তারা আরও অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে।’

ড. ক্যানেম জোর দিয়ে বলেন, ‘সমাধান হলো সবাইকে প্রকৃত ও সমান পছন্দের সুযোগ দেওয়া—সন্তান নেওয়া বাধ্যতামূলক করে তোলা নয়।’

খবর: দ্য গার্ডিয়ানের।

The post মানুষের চাওয়া অনুযায়ী সন্তান নিতে না পারার প্রকৃত কারণ প্রকাশ পেলো নতুন রিপোর্টে appeared first on Ctg Times.