গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর শহরের খালের ওপর স্মুইসগেট নির্মাণে শহরের প্রধান সড়কটি দেড় বছর ধরে কেটে রাখা হয়েছে। এতে দ্বিগুণ পথ ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দাদের। স্মুইসগেটটির নির্মাণ কাজে ধীরগতিতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মাসেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। গত দেড় বছরে অর্ধেক কাজও হয়নি। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। স্মুইসগেটটি এখন শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গলাচিপা পৌর শহরের মধ্য দিয়ে পাঁচশ বছরের পুরোনো একটি খাল প্রবাহিত হচ্ছে। খালটি ‘গলাচিপা বন্দর খাল’ নামে পরিচিত। একসময় রামনাবাদ নদী এবং বুড়াগৌরঙ্গ নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল খালটির। সে সময়ে এ খালে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা চলাচল করত। গত শতকের সত্তরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর গলাচিপা শহর ও উলানিয়ার অংশ দিয়ে পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। তখন খালটির গলাচিপা ও উলানিয়া অংশের নদীর মুখে বাঁধ দেওয়া হয়। এরপর খালটি বধ্য খালে পরিণত হয়। একসময়ে খালটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়।
খালের পুরোনো স্মুইস গেট অপসারণ করে নতুন একটি স্মুইস গেট এবং খালের দেড় কিলোমিটার এলাকা খনন করে খালের দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সে অনুযায়ী ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ‘ন্যাচারাল’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়।তবে কাজটি করছেন আল-আমিন নামের এক উপ-ঠিকাদার। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা।
এ বিষয়টি নিয়ে গলাচিপা উপজেলার আইন শৃঙ্খলা সভা সহ বিভিন্ন সভায় উত্তাপন করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জোয়ার-ভাটার স্বচ্ছ পানি ওঠা নামার জন্য খালের ডাকুয়া এলাকায় একটি স্মুইসগেট রয়েছে। স্মুইসগেটটির বাইরের অংশে চর পড়ায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে পাউবো শহরের প্রাণকেন্দ্রে নতুন স্মুইসগেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়ার পরপরই পৌর শহরের প্রধান ও ব্যস্ততম সড়কটি কেটে ফেলে। এ সময় বিভিন্ন স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়, যা গত দেড় বছর একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে।গলাচিপার বাসিন্দা ও জেনাটারের ফিটার মোঃ হারুন গাজী বলেন,এই সড়কটি সংস্কারের জন্য আমাদের সাধারন মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। গলাচিপা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুশীল চন্দ্র সাহা জানান, ধীরগতিতে কাজ করায় দেড় বছর ধরে ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণের ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। শুধু গলাচিপাাসী নয়, প্রধান সড়কটি কেটে রাখায় পার্শ্ববর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলা মানুষের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ হচ্ছে।
উপ-ঠিকাদার মো. আল-আমিন জানান, কাজটি চলমান আছে। দ্রুত কাজটি শেষ করা হবে।
পটুয়াখালী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব জানান, স্মুইসগেটটির নির্মাণকাজে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি হয়নি। জনগণের ভোগান্তি কমাতে কাজটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিচ্ছেন তারা।
The post গলাচিপায় খাল খননে ধীর গতি, স্মুইসগেট এখন গলার কাঁটা appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.