সৌদি আরবে কর্মরত ফুলবাড়িয়ার কালাদহ ইউনিয়নের এক নারী প্রবাসী (পাসপোর্ট নম্বর: অ০৫০৩৫৫১৭) নির্যাতন ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বর্তমানে তার পরিবার দেশে ফিরে আসার বিষয়টি নিয়ে গভীর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার ঐ নারী প্রবাসীর স্বামী শামসুল হক রনি জানান, একটি দালালচক্র আমার স্ত্রীর ভাইকে মধ্যপ্রাচ্যে উন্নত চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এতে পরিবারের কাছ থেকে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রের ৩ দালাল। দালালরা হলো কিশোরগঞ্জ জেলার মাইরা গ্রামের আব্দুল কদ্দুছের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার আঃ কালামের ছেলে জাহাঙ্গির আলম ও টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের গিংগা নগরের শুক্কুর মাহমুদের ছেলে মোক্তার হোসেন।
নারী প্রবাসীর স্বামী শামসুল হক রনি প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্ম সংস্থান মন্ত্রনালয়ে এ ষংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, ওই স্থানে আমার সৌদী প্রবাসী স্ত্রীর পাশাপাশি থাকতেন তোফাজ্জল হোসেন। অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেন ও তার সাংগপাঙ্গ তাকে আটকে রেখে তার হাত-মুখ বেঁধে অশালীন প্রস্তাব দেয়। রাজি না হওয়ায় তাকে নির্মমভাবে মারধর করে অচেতন করা হয় এবং অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। তার আর্তচিৎকারে কিছু বাংলাদেশি নাগরিক ও সৌদি পুলিশের সহায়তায় আমার স্ত্রী উদ্ধার হন এবং স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে হুমকি দেওয়া হয়”ঘটনা ফাঁস করলে ভাইকে হত্যা করা হবে।”
এছাড়াও একই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছে আরো দু’জন। ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মোঃ মফিজ উদ্দিন ও নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার হাসেন আলীর ছেলে মোঃ জসিম উদ্দিন রাজিব। এরা দুজনেই আইনী সহায়তার জন্য প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্ম সংস্থান মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছেন।
অভিযোগে মফিজ উদ্দিন (পাসপোর্ট নম্বর: অ০৩০৩৮৪১৩) নামে এক ভুক্তভোগী জানান, তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নাম করে মোক্তার হোসেন ও তার সহযোগীরা ৩ লাখ টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে টাকা দেয়ার কথা বলে প্রতারক তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে হত্যাচেষ্টা চালায় এবং অচেতন অবস্থায় রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন, এবং পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অপর ভুক্তভোগী মো. জসিম উদ্দিন রাজিব জানান, প্রতারক চক্রের মোক্তার হোসেনের এক সহযোগী ময়মনসিংহের মাসকান্দার পিন্টু মিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পরিচয়কালে মোক্তার হোসেন বলেন পিন্টু মিয়াও আমাদের এজেন্সির লোক। এভাবে সম্পর্ক গড়ে উঠলে বিদেশে নেয়র নামে আমার কাছ থেকেও এই প্রতারক চক্র ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে লিগ্যাল এইড অফিসের সিনিয়র সহকারী জজ ময়মনসিংহের সুদীপ্ত তালুকদার-এর স্বাক্ষরিত সুপারিশ অনুযায়ী জসিম ও মফিজকে প্যানেল আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে প্রতারক চক্রের সদস্য নুরুল ইসলাম পিন্টুর তিনটি মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে দুটি নামার বন্ধ দেখায়। অপর এই ০১৮২০০১০৫৩৯ নাম্বারটি সচল পাওয়া গেলেও সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া মাত্রই ফোন বন্ধ করে দেয়।
ভুক্তভোগী শামসুল হক রনি ও তার স্ত্রী, মফিজ উদ্দিন এবং জসিম উদ্দিন রাজিব প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা এবং প্রতারিত অর্থ উদ্ধারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
The post বিদেশে নেয়ার নামে প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিয়েছে ১৩ লাখ টাকা appeared first on দৈনিক ময়মনসিংহের খবর.