বরগুনা প্রতিনিধি:

গণহত্যার বিচার, নিরপেক্ষ ও গণমুখী রাষ্ট্রীয় সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা সংস্কার চাই—সংস্কার ছাড়া আমরা নতুন বাংলাদেশ পাব না। আমরা চাই উচ্চকক্ষ (দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ), চাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নিরপেক্ষভাবে গঠিত হোক। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হোক এবং আর যেন কোনো স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে ফিরে না আসে।’

আজ সোমবার বিকেলে বরগুনা শহরের সদর রোডে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আয়োজিত পথসভায় এ কথা বলেন তিনি। সভায় তিনি বরগুনায় পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, নদী ও সমুদ্র রক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সংকট নিরসন এবং অবহেলিত জনগোষ্ঠীর অধিকারে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

পথসভায় নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করি। ভারত কিংবা পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির আর কোনো জায়গা বাংলাদেশে হবে না। একটি রাজনৈতিক দল একসময় পাকিস্তানপন্থীদের পুনর্বাসন করেছিল, এখন আবার মুজিববাদীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। মুজিববাদের পাহারায় রয়েছে চাঁদাবাজ ও দখলদার চক্র।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশের মানুষ একটি নতুন স্বাধীনতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘তারপরও আমরা দেখছি—চাঁদাবাজদের আধিপত্য, দুর্নীতির বিস্তার এবং আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি। এরই মধ্যে আপনাদের এলাকার একটি সন্তানকে ঢাকায় পাথর মেরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর পেছনে সরকারের ব্যর্থতা এবং একটি দলের চাঁদাবাজ চক্রের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে।’

বরগুনাবাসীর উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই উপকূলীয় জেলা নদী, সমুদ্র, দুর্যোগ আর সংগ্রামের প্রতীক। এখানকার মৎস্যজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন বাঁচার জন্য। কিন্তু রাষ্ট্র তাঁদের দিকে ফিরে তাকায় না। শুধু উন্নয়নের স্লোগান ঝুলিয়ে রাখা হয়, বাস্তবে সেই উন্নয়ন বরগুনায় কতটা পৌঁছায়, তা বরগুনাবাসী ভালোই জানেন।

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম প্রমুখ।

সোমবার বিকেলে এনসিপি নেতারা বরগুনা যাওয়ার পথে আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তা এলাকায় পথসভার জন্য ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। এ উপলক্ষে দুপুর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি ও কর্মী-সমর্থকেরা সভাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে যাত্রাবিরতি না করায় নেতা-কর্মীরা আশাহত হন। এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ বলেন, জেলার কর্মসূচি থাকায় কেন্দ্রীয় নেতারা উপজেলার পথসভায় যোগ দিতে পারেননি।

The post একটি দল একসময় পাকিস্তানপন্থীদের পুনর্বাসন করেছিল, এখন মুজিববাদীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.