রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাসুকা বেগম নিপু’র (৩৭) জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে পাশের বেডে থাকা আরেক শিক্ষককে বলে যাওয়া শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ দাফন করা হয় বড় বোনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।

গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় মাসুকা বেগম স্কুলে ক্লাস নিচ্ছিলেন। তিনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাইমারি শাখার বাংলা মাধ্যমের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন।

দগ্ধ অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ওই ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।

নিহতের সহকর্মী সাফায়েত ঢালী জানান, দুর্ঘটনার পর মাসুকার কোনো স্বজন পাশে ছিলেন না। পরে তিনিই দায়িত্ব নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালে ভর্তির পর সোমবার রাতে মাসুকা তাকে কলেমা পড়াতে বলেন। সেই সময়ই তিনি দাফনের বিষয়ে তার ইচ্ছার কথা জানান।

আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে মাসুকার মরদেহ তার বড় বোন পাপড়ি রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিহতের স্বজনরা জানান, হাসপাতালে পাশের বেডে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষককে মাসুকা তার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মৃত্যুর পর যেন তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে দাফন করা হয়। সেই অনুযায়ী তার মরদেহ সোহাগপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে দাফন করা হয়।

নিহত মাসুকা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলোকুট গ্রামের সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর ঈদগাহ মাঠে মাসুকার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে ওই গ্রামের খাঁ বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়।

The post মৃত্যুর আগে আরেক শিক্ষককে কালেমা পড়াতে বলেছিলেন শিক্ষিকা appeared first on Ctg Times.