ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠি পৌরসভার খেয়াঘাটের সামনে ভোরবেলা ময়লা ফেলেছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এতে খেয়া পারাপার বন্ধ করে দেন ঘাটের মাঝিরা। এতে চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ঝালকাঠি পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পৌর খেয়াঘাটে এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বাসিন্দা নাবিলা ইসলাম নূপুরের সঙ্গে মাঝিদের জমি সংক্রান্ত ঝামেলা চলে আসছিল।
তিনি যে স্থানটিতে বসবাস করেন সেখানে ময়লা ফেলার জন্য ট্রান্সপোর্ট স্টেশন নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন মেয়র আফজাল হোসেন রানা।
কিন্তু নূপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে সেই জায়গাটি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়, যা ছিল খাস জমি।
পরে মাঝিদের সঙ্গে ওই জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান নূপুর। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হতে থাকে। বর্তমান পৌর কর্তৃপক্ষ বারবার তাঁকে ময়লা ফেলার জন্য নির্মিত জায়গাটি ছেড়ে দিতে বললেও উল্টো জমির মালিকানা দাবি করে জজ কোর্টে মামলা করেন।
তাই পৌরসভার লোকজন ভোরে ময়লা ফেলতে এসে জায়গা না পেয়ে রাস্তার পাশেই ফেলে চলে যান। এখন দুর্গন্ধে সেখানে টেকা যাচ্ছে না। একপর্যায়ে মাঝিরা খেয়া পারাপারই বন্ধ করে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য ট্রান্সপোর্ট স্টেশন দখল করা নাবিলা ইসলাম নূপুর ‘জয় বাংলা ঐক্য পরিষদ’, ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলা নৌকা মাঝি ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, নূপুর বেগম মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদারের বিতর্কিত সম্পদ কিনে তা নিয়ে প্রায় সময় নৌকার মাঝিদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করে আসছেন।
আমি বারবার দরখাস্ত করি পৌরসভায় কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পক্ষান্তরে আমি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করি। কিন্তু তাতেও কোনো ফল আসেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিয়েছি। প্রশাসন এর সঠিক মীমাংসা না দেওয়া পর্যন্ত খেয়া চলাচল বন্ধ থাকবে।
সুগন্ধা নদীর দুই পাড়ের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ পারাপার করে। খেয়া পারাপার বন্ধ থাকার কারণে তাঁদের পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট থেকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জমির মালিক দাবি করা নূপুর বেগম বলেন, তৎকালীন মেয়র লিয়াকত আলীর তালুকদারের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ জমি কিনে বসবাস করে আসছি। কিন্তু সম্প্রীতি পৌরসভার লোকজন আমাকে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চায়।
যার ফলে আমি সিনিয়র জজ আদালতে উচ্ছেদ করার বিরুদ্ধে একটি মামলা করি এবং এডিসির কাছে গেলে তিনি আমার কাগজপত্র না দেখেই আমাকে জমি থেকে সরে যেতে বলেন। আমি জমি কিনেছি, আমার অনেক কষ্টে উপার্জিত টাকা দিয়ে। আমি আমার জমি থেকে সরে যাব না।
খেয়া পারাপার বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন তারা খেয়া বন্ধ করেছে তা আমি জানি না। খেয়া চলাচলের বিষয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি আমার সন্তান ও পরিবার নিয়ে নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারি প্রশাসনের কাছে সে দাবি জানাই।’
খেয়া পারাপার বন্ধ ও ময়লা ফেলার বিষয়ে ঝালকাঠি পৌর প্রশাসনের কাছে জানতে চাইলে (দায়িত্বে থাকা) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কাওসার হোসেন বলেন, খেয়াঘাটের পাশেই ময়লা ফেলার জন্য একটি ট্রান্সপোর্ট স্টেশন ছিল কিন্তু একজন নারী তা দখল করে বসবাস করে আসছেন।
এ কারণে অস্থায়ীভাবে পাশেই ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে তা সরিয়ে নেওয়া হবে। খেয়া পারাপার বন্ধের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
The post ঝালকাঠিতে ঘাটে আবর্জনা ফেলেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা: খেয়া বন্ধে দুর্ভোগে এলাকাবাসী appeared first on Amader Barisal - First online Newspaper of Greater Barisal - Stay with Barisal 24x7.
ঠিকানা : গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশ || তথ্য, খবর ও বিজ্ঞাপন : +8809611719385 || ইমেইল : songbadpatra24@gmail.com
Visit : songbadpatra.com
All rights reserved © সংবাদপত্র-2024