নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রজনন নিরাপদ করতে ইলিশ আহরণ, কেনাবেচা ও পরিবহনের ওপর টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান থাকায় ইতোমধ্যে বরিশাল নগরসহ বিভিন্ন বাজারে ইলিশ বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে র্যাব, পুলিশ, কোস্ট গার্ডের সদস্যদের নিয়ে নৌ-মহড়া দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য দপ্তর।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের টাস্কফোর্স উপজেলা প্রশাসনসহ সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করবে। এ সময় আইন ভেঙে ইলিশ শিকার করলে জেল-জরিমানা করা হবে।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে, যাতে নদীতে কেউ জাল না ফেলে। এজন্য ইতোমধ্যে প্রকৃত জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে।সেইসাথে বরিশাল জেলায় জেলেদের সংখ্যা বেশি থাকায় যারা এই প্রণোদনা কর্মসূচির বাইরে রয়েছেন, তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল জেলা মৎস্য অফিসের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল কুমার দাস বলেন, নিষেধাজ্ঞা সফল করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মাইকিং করা হয়েছে, আবার মসজিদ ও মন্দির থেকেও এই বিষয়ে প্রচার চালানোর কথা বলা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ৫৬ হাজার ৭০০ জেলেকে চাল দেওয়া হবে ২৫ কেজি করে মোট ১৪১৭.৫ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ৫৭৪ জনকে ৪১৪.৩৫ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই চারদিনের মধ্যে বাকিদের দেওয়া হবে।
তিনি জানান, জেলায় ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে অভিযানে মৎস্য, নৌ-পুলিশ নদী ও খালে প্রশাসনের ৪৮টি টিম ও ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে, বরিশাল নগরের পোর্ট রোডস্থ একমাত্র মৎস্য পাইকারি বাজারে রোববার সকালে প্রকাশ্যে ইলিশের দেখা মেলেনি বা বিকিকিনি হয়নি। অন্যান্য মাছের সংখ্যাও কম ছিল বাজারে। তবে গত মধ্যরাত পর্যন্ত বাজারটিতে ইলিশের বিকিকিনি হয়েছে।
জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে সস্তায় ইলিশ পাওয়ার আসায় পোর্ট রোড বাজারে রাতে ক্রেতা সমাগম থাকলেও শেষ দিনেও দাম ছিল আগের মতোই। ক্রেতারা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে বাজারে অন্যান্য ধরনের মাছের বিকিকিনি চললেও ইলিশের দেখা নেই বাজারে। তবে আগের দিন শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত এ বাজারেও ইলিশ বিক্রির ধুম পড়েছিল। যদিও দাম আগের মতোই চড়া ছিল।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার জন্য সাগর থেকে আসা ট্রলারগুলো বাজার সংলগ্ন খালের ঘাটে বাধা রয়েছে। আবার বাজারের শ্রমিকদেরও অনেকেই অলস সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, এই বাজারের শ্রমিকদের নিষেধাজ্ঞার এই বাইশ দিন অনেকটাই বেকার বসে থাকতে হবে।
The post বাজারে নেই ইলিশ, নদীতে প্রশাসনের মহড়া appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.