নগর প্রতিনিধি:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশালের সাবেক সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহ, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীরসহ নামধারী ৫০৪ জনের নামে থানায় নতুন করে এজাহার দিয়েছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। আর নতুন এ এজাহারে আরও ৩/৪শ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, বরিশাল নগরের রুপাতলী সিকদার টাওয়ারের বাসিন্দা মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়ার দেওয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজুর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। অনেক বড় এজাহার হওয়ায় এতে সময় লাগছে।
সোমবারে (১৪ অক্টোবর) থানায় দাখিল করা ১২ পৃষ্ঠার ওই এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই দুপুরে বিএনপির ঘোষিত শান্তি সমাবেশ (শোক র্যালি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বাদীসহ ছাত্র-জনতা বিকেলে নগরের সিঅ্যান্ডবি রোড বিএডিসি অফিসের সামনে অবস্থান করছিল। সেসময় মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার হুকুমে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২ থেকে ২৫ নম্বর আসামিরা সশস্ত্র অবস্থায় ককটেল বোমাসহ হিংস হায়েনার মতো বাদীসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায়। শুরুতে আসামিরা ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ককটেল ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।যাতে মামলার বাদী তার সাথে উপস্থিতিদের মোটরসাইকেল ও রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আসামিরা পিস্তল, শর্টগান ও রিভলবার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলি করে ছাত্র-জনতা ও মামলার সাক্ষীদের রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া মামলার আসামিরা বাদীসহ অন্য সাক্ষীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে-পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সেইসাথে মামলার একমাত্র নারী সাক্ষী আফরোজা খানম নাসরিনকে পেটানোসহ শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়াও আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীর লাইসেন্সকৃত পিস্তল, আইফোন ছিনতাই এবং অন্য সাক্ষীদের স্বর্ণের চেইন, মোবাইল, টাকা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহর ভাই মঈন আব্দুল্লাহ ও আশিক আব্দুল্লাহ, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন হাসান মাহামুদ বাবু, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল, সাবেক সদস্য তারিক বিন ইসলাম, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম ও তার ছেলে তামিম হাসান, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ওবায়েদুল হক সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, আতিকু উল্লাহ মুনিম, মহানগর শ্রমিকলীগের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাশ, সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না, বাকসুর সাবেক ভিপি মঈন তুষার, সাবেক পরিবহন সম্পাদক নুরুল আম্বিয়া বাবু।
নামধারী আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. হাদীস মীর ও মাহিদুর রহমান মাহাদ, প্রতিমন্ত্রীর সহকারী বাবু, ফরচুন সুজ কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, পরিচালক আল আমিন হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমানুর রহমান, সিটির সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, আউয়াল মোল্লা, সামজেদুল কবির বাবু ও তার ভাই সাজেদুল কবির শিপলু, সামছুদ্দোহা আবিদ, রাজিব হোসেন খান, কেফায়েত হোসেন রনি, মুন্না হাওলাদার, জয়নাল আবেদীন, এনামূল হক বাহার, ইমরান মোল্লা, সুলতান মাহমুদ, সাবিদ, সাইদুর রহমান জাকির মোল্লা, আনিস শরীফ, শাকিল হোসেন পলাশ তার ভাই জাকির আলম ডলার ও সজিব, কালাম মোল্লাসহ হেভিওয়েট অনেকে। এছাড়া মামলায় বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা আসামি হয়েছেন।
তবে বিগত মামলাগুলোতে যেমন আসামি হননি তেমনি এখানেও নাম নেই লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মহড়া দেওয়া যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুনসহ অনেকে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) একই ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার জমা দিয়েছিলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। সেই এজাহারে নামধারী ৫৫৭ জনের বাহিরে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১ হাজার জনকে আসামি করার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, সেই এজাহারই সংশোধন করে ১৪ অক্টোবর আবার জমা দিয়েছেন তিনি।
The post বরিশালে শেখ হাসিনাসহ ৯শ জনের নামে এজাহার appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.