1:19 am, Saturday, 12 April 2025
Aniversary Banner Desktop

খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক

খানজাহানআলী থানার তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অবকাঠামোগত সমস্যা দীর্ঘদিনের। ৫৪ বছর পূর্বে ১৯৭০ সালে নির্মিত একাডেমিক ভবনটি অনেকটা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের নিচতলার কক্ষগুলোতে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লাস রুম নেই। যেগুলোতে ক্লাস নেওয়া হয় সেগুলোও মানসম্মত নয়।

জানা যায়, শুরুতেই অত্যন্ত নিচু জায়গায় প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবন নির্মিত হয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের চারপাশে রাস্তাঘাট উঁচু করা হয়। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটির উত্তর পাশের সীমানা বরাবর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে ৫/৬ ফুট উঁচু করে বালু ভরাট করে। ফলশ্রুতিতে প্রতি বর্ষা মৌসুমী প্রতিষ্ঠানটি পানিতে তলিয়ে যায়।

বৃষ্টি হলেই টিচার্স ট্রেনিং কলেজের নিচ তলায় দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যহত হয়। ভবনের নিচে পানি জমে থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনটি অপসারণ করে নতুনভাবে নির্মিত না হলে অদুর ভবিষ্যতে এই ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

প্রতিষ্ঠানের মহিলা, পুরুষ, বিজ্ঞান হোস্টেল এবং অতিথি ভবনের অবস্থা একই। বৃষ্টি হলেই এ সকল হোস্টেল এবং ভবনের ভেতর পানি জমে যায়। ৬ মাস পূর্বে কুয়েট এপ্রোচ সড়কের উন্নয়ন কাজের ড্রেন নির্মাণের সময় প্রতিষ্ঠানটির সুরক্ষা ওয়াল ভেঙ্গে যায়। এরপর নতুন করে আর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়নি। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৩০ জন শিক্ষক এবং এবং সমান সংখ্যক কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। নানানবিধ কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তিকৃত বিএড, প্রফেশনাল বিএড অনার্স এবং এমএড শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।

এদিকে নানাবিধ কারণে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ দেশের মোট ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিততার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

সূত্রমতে, বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা এবং মানোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কার্যকারী কোন উদ্যোগ নেই।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বর্তমানে প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল , সহযোগী অধ্যাপক, সহকারি অধ্যাপক, অধ্যাপকসহ ৩০ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। যারা প্রত্যেকেই বেতন, ভাতাসহ প্রতি লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক, কর্মচারী নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকেন না। অনেক শিক্ষক আছেন যারা মাসে একবার কলেজে আসেন। আবার অনেক শিক্ষক আছেন তারা শুধুমাত্র তাদের রুটিন ক্লাসের দিন উপস্থিত হন। বাকি সময় তারা কলেজে অনুপস্থিত থাকেন।

প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা গবেষণাধর্মী কোন কাজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নির্ধারিত ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই সেটা হচ্ছে, কবে তাদের প্রোমোশন হবে? বেতন ভাতা বৃদ্ধি পাবে? নিজের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ জাতীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিষয়াদি নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়? কিভাবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়? শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিভাবে নিশ্চিত করা যায়? এসকল বিষয়াদি নিয়ে প্রিন্সিপাল ভাইস, প্রিন্সিপাল কিংবা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলশ্রুতিতে দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিএড, প্রফেশনাল বি এড, অনার্স এবং এমএডসহ প্রতিষ্ঠানটিতে ৩’শ শিক্ষার্থী রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষেরও বিন্দুমাত্র কোন নজর নেই। সদ্য পতন হওয়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ সারাদেশে যে ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে সেগুলোর একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার কারনে প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনাকারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, মহা-পরিচালক, পরিচালক, প্রশিক্ষক পদে যারা আসীন হন তারা সকলেই সরকারি জেনারেল কলেজের নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। সুতরাং তাদের একটাই উদ্দেশ্য থাকে মন্ত্রী, এমপি দলীয় নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে কিভাবে পদোন্নতি নিবেন, নিজের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করবেন, তাদের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য থাকে এগুলো। এজন্য সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর কার্যক্রমের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় না।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। জুলাই মাসের শেষে একদিন সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আর প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত হননি।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস-প্রিন্সিপাল রহিমা খাতুন খুলনা গেজেটকে বলেন, টিচারদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এটা সঠিক নয়। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব আমার। কিন্তু প্রশাসনিক,আর্থিক বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব প্রিন্সিপালের। শিক্ষকদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিন্তের দায়িত্ব প্রিন্সিপাল স্যারের। শিক্ষকদের রুটিন মাফিক ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে কোন শিক্ষকের ছাড় দেওয়া হয় না। আমাদের যারা শিক্ষক আছেন সবাই নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন। এখানে ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে তার ক্লাস অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।খুলনা সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজের আওতাধীন ২৬ টি স্কুল রয়েছে। সে স্কুলগুলোতোও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে।

 

The post খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভোট দিয়ে হয় না, আসে লুটেরা শ্রেণি: ফরহাদ মজহার

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

Atomic Wallet Download

Atomic

Aerodrome Finance

খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক

Update Time : 08:06:10 am, Friday, 20 September 2024

খানজাহানআলী থানার তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অবকাঠামোগত সমস্যা দীর্ঘদিনের। ৫৪ বছর পূর্বে ১৯৭০ সালে নির্মিত একাডেমিক ভবনটি অনেকটা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের নিচতলার কক্ষগুলোতে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লাস রুম নেই। যেগুলোতে ক্লাস নেওয়া হয় সেগুলোও মানসম্মত নয়।

জানা যায়, শুরুতেই অত্যন্ত নিচু জায়গায় প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবন নির্মিত হয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের চারপাশে রাস্তাঘাট উঁচু করা হয়। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটির উত্তর পাশের সীমানা বরাবর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে ৫/৬ ফুট উঁচু করে বালু ভরাট করে। ফলশ্রুতিতে প্রতি বর্ষা মৌসুমী প্রতিষ্ঠানটি পানিতে তলিয়ে যায়।

বৃষ্টি হলেই টিচার্স ট্রেনিং কলেজের নিচ তলায় দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যহত হয়। ভবনের নিচে পানি জমে থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনটি অপসারণ করে নতুনভাবে নির্মিত না হলে অদুর ভবিষ্যতে এই ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

প্রতিষ্ঠানের মহিলা, পুরুষ, বিজ্ঞান হোস্টেল এবং অতিথি ভবনের অবস্থা একই। বৃষ্টি হলেই এ সকল হোস্টেল এবং ভবনের ভেতর পানি জমে যায়। ৬ মাস পূর্বে কুয়েট এপ্রোচ সড়কের উন্নয়ন কাজের ড্রেন নির্মাণের সময় প্রতিষ্ঠানটির সুরক্ষা ওয়াল ভেঙ্গে যায়। এরপর নতুন করে আর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়নি। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৩০ জন শিক্ষক এবং এবং সমান সংখ্যক কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। নানানবিধ কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তিকৃত বিএড, প্রফেশনাল বিএড অনার্স এবং এমএড শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।

এদিকে নানাবিধ কারণে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ দেশের মোট ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিততার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

সূত্রমতে, বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা এবং মানোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কার্যকারী কোন উদ্যোগ নেই।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বর্তমানে প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল , সহযোগী অধ্যাপক, সহকারি অধ্যাপক, অধ্যাপকসহ ৩০ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। যারা প্রত্যেকেই বেতন, ভাতাসহ প্রতি লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক, কর্মচারী নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকেন না। অনেক শিক্ষক আছেন যারা মাসে একবার কলেজে আসেন। আবার অনেক শিক্ষক আছেন তারা শুধুমাত্র তাদের রুটিন ক্লাসের দিন উপস্থিত হন। বাকি সময় তারা কলেজে অনুপস্থিত থাকেন।

প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি কিংবা গবেষণাধর্মী কোন কাজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নির্ধারিত ক্লাস শেষ হওয়ার পর তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই সেটা হচ্ছে, কবে তাদের প্রোমোশন হবে? বেতন ভাতা বৃদ্ধি পাবে? নিজের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ জাতীয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিষয়াদি নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়? কিভাবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়? শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিভাবে নিশ্চিত করা যায়? এসকল বিষয়াদি নিয়ে প্রিন্সিপাল ভাইস, প্রিন্সিপাল কিংবা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলশ্রুতিতে দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিএড, প্রফেশনাল বি এড, অনার্স এবং এমএডসহ প্রতিষ্ঠানটিতে ৩’শ শিক্ষার্থী রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষেরও বিন্দুমাত্র কোন নজর নেই। সদ্য পতন হওয়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজসহ সারাদেশে যে ১৪ টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে সেগুলোর একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার কারনে প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনাকারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, মহা-পরিচালক, পরিচালক, প্রশিক্ষক পদে যারা আসীন হন তারা সকলেই সরকারি জেনারেল কলেজের নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। সুতরাং তাদের একটাই উদ্দেশ্য থাকে মন্ত্রী, এমপি দলীয় নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে কিভাবে পদোন্নতি নিবেন, নিজের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করবেন, তাদের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য থাকে এগুলো। এজন্য সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর কার্যক্রমের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় না।

জানা যায়, খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। জুলাই মাসের শেষে একদিন সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আর প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত হননি।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. শেখ রেজাউল করিমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস-প্রিন্সিপাল রহিমা খাতুন খুলনা গেজেটকে বলেন, টিচারদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এটা সঠিক নয়। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব আমার। কিন্তু প্রশাসনিক,আর্থিক বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব প্রিন্সিপালের। শিক্ষকদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিন্তের দায়িত্ব প্রিন্সিপাল স্যারের। শিক্ষকদের রুটিন মাফিক ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে কোন শিক্ষকের ছাড় দেওয়া হয় না। আমাদের যারা শিক্ষক আছেন সবাই নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন। এখানে ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে তার ক্লাস অন্য শিক্ষকদের দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।খুলনা সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজের আওতাধীন ২৬ টি স্কুল রয়েছে। সে স্কুলগুলোতোও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে।

 

The post খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ : পড়ানোয় মন নেই শিক্ষকদের, অবকাঠামোও নাজুক appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.