2:36 pm, Thursday, 30 January 2025
Aniversary Banner Desktop

সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার বনের গাছ

কলাপাড়া ((পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, বালুক্ষয়, সমুদ্রভাঙন ও ঢেউয়ের ঝাপটায় ধুয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটা সৈকতের বালু। এতে সৈকত লাগোয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পড়ে আছে সৈকতে। জোয়ারের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সমুদ্রে। এগুলো সংরক্ষণে বনবিভাগের নেই কোন তৎপরতা। ‌

সরজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের ঝাপটায় কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পূর্ব দিকে কাউয়ারচর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ পড়ে আছে।

জোয়ার স্রোতে গাছগুলো গভীর সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সংরক্ষিত বনের শত শত গাছ। ফলে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের গঙ্গামতি সূর্যোদয়ের পয়েন্ট যেতে বেগ পেতে হচ্ছে।

উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারীরা যে যার প্রয়োজনে কেটেও নিচ্ছেন। এতে কোটি কোটি টাকার সরকারি গাছ দিন দিন বেহাত হচ্ছে। গাছগুলো সংরক্ষণ কিংবা সংরক্ষিত বন রক্ষায় বনবিভাগের তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সৈকতের গঙ্গামতি এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বড় বড় গাছ এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। কিছু গাছ ইতিমধ্যে বালুর নিচে চাপা পড়ে গেছে। অনেক গাছ ভেসে যাচ্ছে। গাছগুলো নিলামে দিলে সরকারের যেমন কোটি টাকা আয় হবে অন্যদিকে সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ আব্দুস সোবাহান মাঝি বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কিছু অংশ ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। আকাশমনি, রেনটি, ঝাউ, জাম, কেওড়া, সইলা, নারিকেল, তালগাছ সহ কোটি কোটি টাকার গাছ বালুর নিচে চাপা পড়ে নষ্ট হয়েছে। এগুলোর দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত ।

জানা গেছে,গত কয়েক দিনের সাগরের বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। হুমকির মুখে রয়েছে সৈকত লাগোয়া টুরিজম পার্ক, মসজিদ, মন্দির, টুরিস্ট পুলিশ বক্স ও বিশাল বনাঞ্চল। বর্তমানে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত একেবারেই সৌন্দর্যহানি হয়ে পড়েছে।

ফরিদপুরের সালথা থেকে আসা জাকারিয়া ও রুমানা দম্পতি বলেন, সৈকতে যে সারি সারি পড়ে থাকা গাছগুলোর কারণে সূর্যোদয় পয়েন্ট, লাল কাঁকড়ারচরে যাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য। গাছগুলোর প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বন বিভাগের নজর দেওয়া উচিত। এতে সরকারের যেমন আয় হবে অন্যদিকে পর্যটকদের ভোগান্তি কমবে ।

পরিবেশবিদের মতে, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরি। প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় হুমকির মুখে পরে উপকূলের বনাঞ্চল।

এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, সবুজ গাছ প্রতিনিয়ত এভাবে ধ্বংস হতে থাকলে এটি উপকূলর জন্য হুমকি।

পর্যটন এলাকার লোকাল কমিউনিটির জন্য বিচ নরেসমেন্ট করা জরুরী। নরেসমেন্ট প্রসেসটা হলো রিকারিং এর সাথে সাথে যে ধরনের প্লান্টেসন আছে এগুলা রক্ষায় দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।

এ প্রসঙ্গে উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকতা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, সৈকতের ভাঙ্গন রক্ষায় গাছগুলো ন্যাচারাল বেরি হিসেবে কাজ করবে। সাগর প্রতিনিয়ত ভাঙছে এবং সাগরের ঢেউ প্রতিরোধ করে পাশাপাশি মাটির ক্ষয় রোধ করে। এই গাছগুলো অপসারণ বা নিলামে বিক্রি করা হবে না।

The post সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার বনের গাছ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

latitude login

latitude login

tangem wallet

tangem

https://tangamwallet.com

https://tangmwallet.com

tangem wallet

https://tangmwallet.com

সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার বনের গাছ

Update Time : 06:07:48 pm, Tuesday, 22 October 2024

কলাপাড়া ((পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, বালুক্ষয়, সমুদ্রভাঙন ও ঢেউয়ের ঝাপটায় ধুয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটা সৈকতের বালু। এতে সৈকত লাগোয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পড়ে আছে সৈকতে। জোয়ারের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সমুদ্রে। এগুলো সংরক্ষণে বনবিভাগের নেই কোন তৎপরতা। ‌

সরজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের ঝাপটায় কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পূর্ব দিকে কাউয়ারচর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ পড়ে আছে।

জোয়ার স্রোতে গাছগুলো গভীর সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সংরক্ষিত বনের শত শত গাছ। ফলে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের গঙ্গামতি সূর্যোদয়ের পয়েন্ট যেতে বেগ পেতে হচ্ছে।

উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারীরা যে যার প্রয়োজনে কেটেও নিচ্ছেন। এতে কোটি কোটি টাকার সরকারি গাছ দিন দিন বেহাত হচ্ছে। গাছগুলো সংরক্ষণ কিংবা সংরক্ষিত বন রক্ষায় বনবিভাগের তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সৈকতের গঙ্গামতি এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বড় বড় গাছ এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। কিছু গাছ ইতিমধ্যে বালুর নিচে চাপা পড়ে গেছে। অনেক গাছ ভেসে যাচ্ছে। গাছগুলো নিলামে দিলে সরকারের যেমন কোটি টাকা আয় হবে অন্যদিকে সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ আব্দুস সোবাহান মাঝি বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কিছু অংশ ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। আকাশমনি, রেনটি, ঝাউ, জাম, কেওড়া, সইলা, নারিকেল, তালগাছ সহ কোটি কোটি টাকার গাছ বালুর নিচে চাপা পড়ে নষ্ট হয়েছে। এগুলোর দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত ।

জানা গেছে,গত কয়েক দিনের সাগরের বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। হুমকির মুখে রয়েছে সৈকত লাগোয়া টুরিজম পার্ক, মসজিদ, মন্দির, টুরিস্ট পুলিশ বক্স ও বিশাল বনাঞ্চল। বর্তমানে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত একেবারেই সৌন্দর্যহানি হয়ে পড়েছে।

ফরিদপুরের সালথা থেকে আসা জাকারিয়া ও রুমানা দম্পতি বলেন, সৈকতে যে সারি সারি পড়ে থাকা গাছগুলোর কারণে সূর্যোদয় পয়েন্ট, লাল কাঁকড়ারচরে যাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য। গাছগুলোর প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বন বিভাগের নজর দেওয়া উচিত। এতে সরকারের যেমন আয় হবে অন্যদিকে পর্যটকদের ভোগান্তি কমবে ।

পরিবেশবিদের মতে, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরি। প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় হুমকির মুখে পরে উপকূলের বনাঞ্চল।

এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, সবুজ গাছ প্রতিনিয়ত এভাবে ধ্বংস হতে থাকলে এটি উপকূলর জন্য হুমকি।

পর্যটন এলাকার লোকাল কমিউনিটির জন্য বিচ নরেসমেন্ট করা জরুরী। নরেসমেন্ট প্রসেসটা হলো রিকারিং এর সাথে সাথে যে ধরনের প্লান্টেসন আছে এগুলা রক্ষায় দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।

এ প্রসঙ্গে উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকতা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, সৈকতের ভাঙ্গন রক্ষায় গাছগুলো ন্যাচারাল বেরি হিসেবে কাজ করবে। সাগর প্রতিনিয়ত ভাঙছে এবং সাগরের ঢেউ প্রতিরোধ করে পাশাপাশি মাটির ক্ষয় রোধ করে। এই গাছগুলো অপসারণ বা নিলামে বিক্রি করা হবে না।

The post সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার বনের গাছ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.