7:45 pm, Wednesday, 22 January 2025

বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনে রুদ্ররূপ: বিলীন হচ্ছে  বিস্তীর্ণ জনপদ

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি:

সন্ধ্যা কোন এলোকেশী তরুণীর নাম নয়,সন্ধ্যা একটি রাক্ষুসী নদীর নাম যার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বানারীপাাড়ার বিস্তীর্ণ জনপদ। এই সন্ধ্যার ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় ইতোমধ্যেই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মনকাঠি, জম্বদ্বীপ,কাজলাহার, সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের 

খোদাবখসা, খেজুরবাড়ি, চাখার ইউনিয়নের চাউলাকাঠি, সোনাহার হক সাহেবেরহাট,কালিবাজার, সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের নলশ্রী,দিদিহার, মসজিদবাড়ি,তালাপ্রসাদ, জিরারকাঠি ও দাসেরহাট, বাইশারী ইউনিয়নের বাংলাবাজার, নাটুয়ারপাড়, উত্তরকুল, উত্তর নাজিরপুর, দান্ডয়াট শিয়ালকাঠি, ও বৌসেরহাট এবং ইলুহার ইউনিয়নের ইলুহার গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বেশিরভাগ অংশ  উপজেলার মানচিত্রে থাকলেও সরেজমিন হারিয়ে গেছে।

সন্ধ্যার ভাঙনে ধারাবাহিকভাবে হাজারো পরিবার হারিয়েছেন তাদের ভিটেমাটি ঘর -বাড়ি। বসতবাড়ি ছাড়াও সন্ধ্যা তার গর্ভে গ্রাস করেছে বহু রাস্তা-ঘাট মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ খেলারমাঠসহ ফসলিজমি। ভিটেমাটি ও ফসলিজমিসহ সব হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজারো পরিবার। অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে।  

বর্তমানে সন্ধ্যার যে রাক্ষুসেভাব তাতে নদী তীরের বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে রাত-দিন পাড় করছেন। তবে শতবছর পেরিয়ে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগিরা।

তারা জানান, বছর দুয়েক আগে সন্ধ্যার ভাঙ্গনরোধে তৎকালীন সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম প্রথম বারের মতো  হাজার হাজার বালুবর্তি জিও ব্যগ ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধকরার চেষ্টা করেছিলেন। তবে শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। কারন সন্ধ্যার বুক কেটে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করার ফলে  নদীর তলদেশে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙন আরও রুদ্ররূপ ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের উত্তর নাজিরপুর গ্রামের দান্ডয়াটের (ধানের হাট) সংলগ্ন মেসার্স মুনা ব্রিকসের একাংশ এবং হাটের দুটি দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া উত্তর নাজিরপুর দান্ডয়াট জামে মসজিদ,গুচ্ছগ্রাম ও হাটের ৭/৮ টি দোকান ভাঙন হুমকির মুখে রয়েছে। এর আগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের খোদাবখ্সা গ্রামের বয়াতি বাডির বহু পুরনো জামে মসজিদ ও মসজিদ লাগোয়া আয়রণ ব্রীজটি নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে।

বর্তমানে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরে বসবাসকারী পরিবার গুলোর। তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য দাবী জানিয়েছেন।

The post বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনে রুদ্ররূপ: বিলীন হচ্ছে  বিস্তীর্ণ জনপদ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনে রুদ্ররূপ: বিলীন হচ্ছে  বিস্তীর্ণ জনপদ

Update Time : 07:06:32 pm, Friday, 20 September 2024

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি:

সন্ধ্যা কোন এলোকেশী তরুণীর নাম নয়,সন্ধ্যা একটি রাক্ষুসী নদীর নাম যার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বানারীপাাড়ার বিস্তীর্ণ জনপদ। এই সন্ধ্যার ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় ইতোমধ্যেই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মনকাঠি, জম্বদ্বীপ,কাজলাহার, সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের 

খোদাবখসা, খেজুরবাড়ি, চাখার ইউনিয়নের চাউলাকাঠি, সোনাহার হক সাহেবেরহাট,কালিবাজার, সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের নলশ্রী,দিদিহার, মসজিদবাড়ি,তালাপ্রসাদ, জিরারকাঠি ও দাসেরহাট, বাইশারী ইউনিয়নের বাংলাবাজার, নাটুয়ারপাড়, উত্তরকুল, উত্তর নাজিরপুর, দান্ডয়াট শিয়ালকাঠি, ও বৌসেরহাট এবং ইলুহার ইউনিয়নের ইলুহার গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বেশিরভাগ অংশ  উপজেলার মানচিত্রে থাকলেও সরেজমিন হারিয়ে গেছে।

সন্ধ্যার ভাঙনে ধারাবাহিকভাবে হাজারো পরিবার হারিয়েছেন তাদের ভিটেমাটি ঘর -বাড়ি। বসতবাড়ি ছাড়াও সন্ধ্যা তার গর্ভে গ্রাস করেছে বহু রাস্তা-ঘাট মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ খেলারমাঠসহ ফসলিজমি। ভিটেমাটি ও ফসলিজমিসহ সব হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজারো পরিবার। অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে।  

বর্তমানে সন্ধ্যার যে রাক্ষুসেভাব তাতে নদী তীরের বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে রাত-দিন পাড় করছেন। তবে শতবছর পেরিয়ে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগিরা।

তারা জানান, বছর দুয়েক আগে সন্ধ্যার ভাঙ্গনরোধে তৎকালীন সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম প্রথম বারের মতো  হাজার হাজার বালুবর্তি জিও ব্যগ ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধকরার চেষ্টা করেছিলেন। তবে শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। কারন সন্ধ্যার বুক কেটে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করার ফলে  নদীর তলদেশে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙন আরও রুদ্ররূপ ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের উত্তর নাজিরপুর গ্রামের দান্ডয়াটের (ধানের হাট) সংলগ্ন মেসার্স মুনা ব্রিকসের একাংশ এবং হাটের দুটি দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া উত্তর নাজিরপুর দান্ডয়াট জামে মসজিদ,গুচ্ছগ্রাম ও হাটের ৭/৮ টি দোকান ভাঙন হুমকির মুখে রয়েছে। এর আগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের খোদাবখ্সা গ্রামের বয়াতি বাডির বহু পুরনো জামে মসজিদ ও মসজিদ লাগোয়া আয়রণ ব্রীজটি নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে।

বর্তমানে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরে বসবাসকারী পরিবার গুলোর। তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য দাবী জানিয়েছেন।

The post বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা  নদীর ভাঙনে রুদ্ররূপ: বিলীন হচ্ছে  বিস্তীর্ণ জনপদ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.