বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন দাবি আদায়ের শহরে পরিণত হয়েছে গোটা দেশ। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলের ১৫ বছরের নিম্পেশনের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামছে মানুষ। তাদেরকে থামানো যাচ্ছে না, তবে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, তরুণদের বাদ দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্ভব নয়, আন্দোলনে শেষ লাথিটা গোলপোস্টে ছাত্ররাই করেছে। শেষ গোলটা তারাই দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরাতে পেরেছি, এখন রূপান্তর ঘটাতে হবে, যেখানে গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ও চেতনাকে সামনে রেখে দেশ পরিচালনা করা যাবে। তিনি বলেন, বিএনপির ৭০০-এর উপরে নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। গণতন্ত্রের লড়াইয়ে অসংখ্য নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিএনপি। অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, চক্রান্ত চলছে। বিভেদ তৈরির চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের দুঃশাসনের কারণে ১৬ বছর আন্দোলন চলেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করত না। তারা গণতান্ত্রিক দল ছিল না। শুধু বক্তৃতায় ও লেখনিতে ছিল গণতান্ত্রিক। একাত্তরের যুদ্ধের সময়, যুদ্ধ পরবর্তী ও সাম্প্রতিক সময়ে সেটি প্রমাণ হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অপরাধ ছিল বাংলাদেশের আত্মাকে তারা ধ্বংস করেছে। ধীরে ধীরে সব মূল্যবোধ ধ্বংস করে একদলীয় শাসন বাবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল দলটি।
তিনি বলেন, সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তিন মাসে পুরো পরিবর্তন করে ফেলা যাবে তা সম্ভব নয়। সংস্কার হতে হবে এবং তা টেকসই হতে হবে। অবশ্য নির্বাচন যত দ্রুত হবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক। নির্বাচনের জন্য যে সব সংস্কার দরকার তা দ্রুত করতে হবে। কেন না নির্বাচিত সরকারই পারে দেশের স্থিতিশীলতা। এককভাবে সরকার গঠন নয়, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে তাদের সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবে বিএনপি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিএনপির সাড়ে ৭০০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, শাস্তি দেয়া হয়েছে। যারা অন্যায় করছে, লুটপাট করছে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তুলে দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের মিডিয়াতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা সংবাদ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এ আরেক নতুন ষড়যন্ত্র। এরমধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম দিয়ে জোরজবরদস্তি প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এটা খুব অল্প সংখ্যক হলেও বড় করে প্রচারণা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী।
যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত সুধি সমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, ডাক্তার রবিউল ইসলাম, ব্যবসায়ী শ্যামল দাস, সাংবাদিক আকরামুজ্জামান, পূজা পরিষদ নেতা দীপঙ্কর দাস রতন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মান্নান, আইনজীবী আব্দুল মোহাইমেন, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব চিন্ময় সাহা, মানবাধিকার কর্মী বিনয় মল্লিক ও প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেডি
The post নির্বাচন যত দ্রুত হবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক : যশোরে মির্জা ফখরুল appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.