তেরখাদায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই প্রভাব শক্তি আর ক্ষমতায় প্রায় সমানে সমান। অথচ ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর গা ঢাকা দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এখন বিএনপির মামলায় গ্রেপ্তোর এড়াতে ঘরছাড়া তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, মামলায় যাদের নাম আছে তারা জেনে বুঝেই আত্মগোপনে আছে। মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন কর্মীরাও। তবে এসব নেতাকর্মীর মধ্যে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব রয়েছেন। শুধু মূল দল নয়, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারাও লাপাত্তা। যারা এলাকায় অবস্থান করছেন, তারাও ‘অজ্ঞাত পরিচয় আসামি’ আতঙ্কে রয়েছেন। যে কাউকে যে কোনো সময় আটক করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূলের কর্মীরা।
জানা যায়, উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর একচ্ছত্র দাপটে গত ষোল বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা মাঠেই দাঁড়াতে পারেননি। বিচ্ছিন্ন কিছু দলীয় কর্মসূচি ছাড়া ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে সরব ছিল বিএনপি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতির মাঠ দখলে নিয়েছে বিএনপি। তৃণমূলের অনেকেই এত দিন নিজ নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসব কর্মীও এখন মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। যদিও আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীর একাংশ ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে সরব রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রমতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে তৃণমূলের নেতারা পালিয়ে আছেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের নামে এ পর্যন্ত তেরখাদা থানায় একটি মামলা হয়েছে, সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের ২০৫ জনের নামে মামলা করেন উপজেলা বিএনপির নেতা আজিজুল হাকিম। ওই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামী করা হয়েছে ১০০-১৫০ জনকে। মামলায় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মূর্শেদীকে ১ নং আসামী সহ তার স্ত্রীকে আসামী করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়মী লীগের নেতারা আত্মগোপনে থাকলেও অনেকেই ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের সঙ্গে কেবল হোয়াটসআ্যাপে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। শুধু বিশ^স্থ কর্মী বা পরিচিত জনদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এফ এম অহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের নেতা কর্মীদের উপর মামলা হচ্ছে, আপাতত তাদের নিরাপদে থাকতে অনুরোধ করছি। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা বিএনপির সাথে লবিং গ্রুপিং করার কারণে মামলায় আসামী হয়নি। সে সব আ’লীগ নেতারা এলাকায় বহাল তবিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বুলু বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকা কালীন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মামলা দিয়েছিল। এসব মামলায় নেতা কর্মীরা বছরের পর বছর আত্মগোপনে ছিলেন। কেউ আবার মাসের পর মাস কারাভোগ করেছেন। ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আমাদের নেতা আজিজুল বারি হেলালের উপর হামলা করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। আমরা ওই মামলাটি থানায় করেছি। কিন্তু মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রসাশন তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মেহেদী হাসান “খুলনা গেজেটকে” বলেন, এ পর্যন্ত থানায় একটি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামী করা হয়েছে। আসামীদের ৬জনকে গ্রেপ্তর করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি
The post তেরখাদায় আত্মগোপনে আ’লীগ নেতারা, অজ্ঞাত আতঙ্কে কর্মীরা appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.
ঠিকানা : গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশ || তথ্য, খবর ও বিজ্ঞাপন : +8809611719385 || ইমেইল : songbadpatra24@gmail.com
Visit : songbadpatra.com
All rights reserved © সংবাদপত্র-2024