1:04 am, Thursday, 23 January 2025

কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম থাকলে বাস্তবে শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না

বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধিঃ

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ভোসড’র বিরুদ্ধে দূনীর্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোসড সংস্থা ঝরে পড়া শিশুদের জন্য প্রকল্পের স্কুলগুলো যে ভাড়া বাড়িতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল, সেই বাড়ির মালিকদেরকে দুই বছর পর্যন্ত কোনো ভাড়া দেয়নি। ৪৭টি স্কুলের শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের ৯মাসের বেশি বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে নিন্মমানের পোশাক ও ব্যাগ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ না দিয়েই তাঁদের বেতন তুলে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়নি প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ। ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ পরিশোধের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বরং প্রকল্পের যাবতীয় বিল-ভাউচার তৈরি করে টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন,পুরো উপজেলার ঝরে পড়া শিশু-কিশোরদের শিক্ষার আওতায় আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় ২০২২ সালে সেকেন্ড চান্স এডুকেশন কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি উপজেলা থেকে একটি লিড এনজিও নির্বাচন করা হয়। বরিশালে লিড এনজিও হিসেবে ভোসড সংস্থা বাবুগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতেই ভোসড সংস্থার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২৪ সালে জানুয়ারীতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে প্রথম শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেনী বই আনা হলেও ভোসড সংস্থাটি এখন পর্যন্ত ঝড়ে পড়া ৫ম শ্রেনী শিশুদের মাঝে বই বিতরন করেনি। এসব বই জেলা থেকে এনে বাবুগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সাভির্স কার্যালয় সংলগ্ন একটি দ্বিতলা ভবনে ভোসড এর শাখা কার্যালয় স্থাপন করে রাখা হয়েছে। এ বিষয় উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার জহিরউদ্দিন বলেন, ৫ম শ্রেনী ছাত্রদের মাঝে বই কিছুদিনের মধ্যে বিতরন করা হবে। বছরের বাকি আর মাত্র ৩ মাস এখন পর্যন্ত ৪৭টি কেন্দ্রের বই বিতরন করেনি কেন প্রশ্ন করলে? এ বিষয় তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেনি। তবে এটাই প্রমানিত হয় কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম আছে আসলে বাস্তবে ঝড়ে পড়া শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোসড সংস্থার জেলা প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ নিজাম উদ্দিন সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন কেটে দেয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীদের ভাষ্য,২০২২সালে বাবুগঞ্জে ৬টি ইউনিয়নে ভোসডের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগে ঝরে পড়া শিশুর তথ্য সংগ্রহে জরিপকারীদের ৮০ ভাগ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ঝরে পড়া শিশুদের লেখাপড়ার জন্য ৪৭জন শিক্ষকদের বাড়ির বারান্দা স্কুল ভাড়া নেওয়া হয়েছে। সংস্থার সাথে চুক্তি হয় প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে বাসা ভাড়া দেয়ার কথা থাকলেও ৬মাস পর্যন্ত ৭শত টাকা পরিশোধ করেছেন। ভোসড সংস্থা র্দীঘ ২বছর পর্যন্ত ঘরের ভাড়া পায়নি বাড়ির মালিকরা। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ৪৭টি স্কুলকেন্দ্রের (শিখন কেন্দ্র) বেশির ভাগেরই ভাড়া বকেয়া রয়েছে। শিক্ষকদের বেতন বকেয়ার পরিমাণ রয়েছে ২১ লক্ষ ১৫হাজার। শিক্ষকদের প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি মাসে তাঁরা সেই টাকা পাননি। অধিকাংশেরই অর্ধেকের বেশি বেতন বকেয়া। অভিযোগকারীদের ভাষ্য, প্রতিটি শিখন কেন্দ্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ ও উপকরণ সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। প্রতিটি স্কুলের জন্য একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে প্রতিমাসে ১হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলে কোনো প্রতিষ্টানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ না করে কর্মকর্তারা তাদের বেতন আত্মসাত করে আসছে। এসব টাকাই ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে এনজিও কর্তৃপক্ষ তুলে নিয়েছে বলে দাবি অভিযোগকারীদের। বাবুগঞ্জ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলা থেকে কোনো কর্মকর্তা ভোসড স্কুল পরিদশনে গেলে ভোসড সংস্থার শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রদের দিয়ে ছাত্র দেখানো হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলায় ঝড়ে পড়া কোনো শিশু নেই,কারন এ উপজেলায় ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে তাতেই শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে তার উপর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র আওতায় ৪৭টি ঝড়ে পড়া শিশুদের জন্য (শিখন কেন্দ্র)দেয়া মানে সরকারের অর্থের অপচয় বলে তিনি মনে করেছেন।

The post কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম থাকলে বাস্তবে শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম থাকলে বাস্তবে শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না

Update Time : 09:06:33 pm, Sunday, 22 September 2024

বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধিঃ

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ভোসড’র বিরুদ্ধে দূনীর্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোসড সংস্থা ঝরে পড়া শিশুদের জন্য প্রকল্পের স্কুলগুলো যে ভাড়া বাড়িতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল, সেই বাড়ির মালিকদেরকে দুই বছর পর্যন্ত কোনো ভাড়া দেয়নি। ৪৭টি স্কুলের শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের ৯মাসের বেশি বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে নিন্মমানের পোশাক ও ব্যাগ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ না দিয়েই তাঁদের বেতন তুলে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়নি প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ। ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ পরিশোধের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বরং প্রকল্পের যাবতীয় বিল-ভাউচার তৈরি করে টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন,পুরো উপজেলার ঝরে পড়া শিশু-কিশোরদের শিক্ষার আওতায় আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় ২০২২ সালে সেকেন্ড চান্স এডুকেশন কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি উপজেলা থেকে একটি লিড এনজিও নির্বাচন করা হয়। বরিশালে লিড এনজিও হিসেবে ভোসড সংস্থা বাবুগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতেই ভোসড সংস্থার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২৪ সালে জানুয়ারীতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে প্রথম শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেনী বই আনা হলেও ভোসড সংস্থাটি এখন পর্যন্ত ঝড়ে পড়া ৫ম শ্রেনী শিশুদের মাঝে বই বিতরন করেনি। এসব বই জেলা থেকে এনে বাবুগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সাভির্স কার্যালয় সংলগ্ন একটি দ্বিতলা ভবনে ভোসড এর শাখা কার্যালয় স্থাপন করে রাখা হয়েছে। এ বিষয় উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার জহিরউদ্দিন বলেন, ৫ম শ্রেনী ছাত্রদের মাঝে বই কিছুদিনের মধ্যে বিতরন করা হবে। বছরের বাকি আর মাত্র ৩ মাস এখন পর্যন্ত ৪৭টি কেন্দ্রের বই বিতরন করেনি কেন প্রশ্ন করলে? এ বিষয় তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেনি। তবে এটাই প্রমানিত হয় কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম আছে আসলে বাস্তবে ঝড়ে পড়া শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোসড সংস্থার জেলা প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ নিজাম উদ্দিন সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন কেটে দেয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীদের ভাষ্য,২০২২সালে বাবুগঞ্জে ৬টি ইউনিয়নে ভোসডের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগে ঝরে পড়া শিশুর তথ্য সংগ্রহে জরিপকারীদের ৮০ ভাগ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ঝরে পড়া শিশুদের লেখাপড়ার জন্য ৪৭জন শিক্ষকদের বাড়ির বারান্দা স্কুল ভাড়া নেওয়া হয়েছে। সংস্থার সাথে চুক্তি হয় প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে বাসা ভাড়া দেয়ার কথা থাকলেও ৬মাস পর্যন্ত ৭শত টাকা পরিশোধ করেছেন। ভোসড সংস্থা র্দীঘ ২বছর পর্যন্ত ঘরের ভাড়া পায়নি বাড়ির মালিকরা। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ৪৭টি স্কুলকেন্দ্রের (শিখন কেন্দ্র) বেশির ভাগেরই ভাড়া বকেয়া রয়েছে। শিক্ষকদের বেতন বকেয়ার পরিমাণ রয়েছে ২১ লক্ষ ১৫হাজার। শিক্ষকদের প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি মাসে তাঁরা সেই টাকা পাননি। অধিকাংশেরই অর্ধেকের বেশি বেতন বকেয়া। অভিযোগকারীদের ভাষ্য, প্রতিটি শিখন কেন্দ্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ ও উপকরণ সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। প্রতিটি স্কুলের জন্য একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে প্রতিমাসে ১হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলে কোনো প্রতিষ্টানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ না করে কর্মকর্তারা তাদের বেতন আত্মসাত করে আসছে। এসব টাকাই ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে এনজিও কর্তৃপক্ষ তুলে নিয়েছে বলে দাবি অভিযোগকারীদের। বাবুগঞ্জ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলা থেকে কোনো কর্মকর্তা ভোসড স্কুল পরিদশনে গেলে ভোসড সংস্থার শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রদের দিয়ে ছাত্র দেখানো হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলায় ঝড়ে পড়া কোনো শিশু নেই,কারন এ উপজেলায় ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে তাতেই শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে তার উপর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র আওতায় ৪৭টি ঝড়ে পড়া শিশুদের জন্য (শিখন কেন্দ্র)দেয়া মানে সরকারের অর্থের অপচয় বলে তিনি মনে করেছেন।

The post কাগজ কলমে স্কুল কেন্দ্রর নাম থাকলে বাস্তবে শিশুদের কোনো লেখাপড়া শিখানো হচ্ছে না appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.