10:45 pm, Saturday, 30 November 2024

পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগা-২ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার নৌখালী নদীতে অপ্রয়োজনীয় স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের রামনগর এলাকার নৌখালী নদীতে এই স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণ কাজের ভূয়া প্রকল্পের নামে সরকারী টাকা লুটপাটের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।

অপয়োজনীয় স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণের কাজ বন্ধ করাসহ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে জনস্বার্থে তথ্য সম্বলিত কাগজপত্রসহ জেলা প্রশাসক ও পাউবো’র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন অবসর প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাতক্ষীরার আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের বাঁশঘাটা গ্রামের কাজী এনামুল হক।

তিনি লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন যে, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী/ শাখা কর্মকর্তা কর্তৃক জারিকরা একটি নোটিশটিতে বলা হয়েছে, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার রামনগর স্লুইচ পুনঃনির্মাণ কাজটি চলমান রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় পানি নিষ্কাশনের জন্য পূর্বেই রামনগর স্লুইচ গেট নির্মিত হয়েছিল। জারীকৃত নোটিশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জমির উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কথাও বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাউবো কর্তৃপক্ষ এলাকার কোন জমি অধিগ্রহণ করেনি। কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে তা যদি জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয় তাহলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। অতীতে এলাকাতে কোন জলাবদ্ধতা ছিল না যা পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজন পড়বে। স্লুইচ গেট নামে খ্যাত এই প্রকল্পটি এখানে নির্মাণের কোন যৌক্তিকতা নেই। এখানে স্লুইচ গেটটি পুনঃনির্মাণ করলে তা হবে অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয়। এটি জনস্বার্থের পরিপন্থি একটি প্রকল্প যা শুধু সরকারি অর্থের অপচয় ঘটিয়ে দুর্নীতিবাজ লোকদের লুটপাট করার পরিকল্পনা মাত্র।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে স্লুইস গেট নির্মাণের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জনৈক্য ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল এবং বলেছিল তিনি বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ২৫/৩০ বছর অফিসে যোগাযোগ করেও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কোন ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। সেসময় কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে জানিয়েছিল কোন জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মিথ্যাচার এবং ধোকাবাজি করেছে। যা ঘটনার প্রমাণ স্বরুপ ঐ জমির উপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বাড়ীটি আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। স্লুইজ গেটটি নৌখালী নদীতে নির্মিত হয়েছিল যার পূর্ব পাশে বাঁশঘাটা গ্রাম এবং পশ্চিম পার্শ্বে রামনগর গ্রাম। নৌখালী নদীতে প্রাকৃতিক নিয়মেই জোয়ার ভাটা বইত।

এই নদীটি ছিল এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদ স্বরপ। এই নদীতে স্লুইচ গেট নির্মাণ করে পাউবো কর্তৃপক্ষ নদীটির জোয়ার ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। নদীটি এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে যার ফলে আমরা সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। নদীটির ২ পাশে ২ গ্রামের বাসীন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার জন্য নৌখালী নদীর উপর একটি ব্রীজ দরকার। অবিলম্বে রামনগর সুইস পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে নৌখালী নদীতে যে স্লুইচ গেট নির্মিত হয়েছিল তা অপসারণের ব্যবস্থা করে নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা দরকার। তাহলে নদীটিতে আবার জোয়ার ভাটা চলমান হবে, নদী থেকে এলাকার জনগণ সকল সুযোগ সুধিধা ভোগ করতে পারবে। যেহেতু এই এলাকায় কোন সময় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়নি। সেহেতু এলাকাবাসী মনে করে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেট তৈরীর মধ্য দিয়ে সরকারের বিপুল অর্থের অপচয় হবে। এটিা জনগণের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। এছাড়া ওই প্রকল্প নিয়ে এলাকাবাসীর কোন মতামত নেওয়া হয়নি।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ -২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলার নেীখালী নদীতে স্লুইচ গেট নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

অভিযোগের সত্যতা পর্যালোচনা পূর্বক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক অবিলম্বে চলমান কাজটি বন্ধ রেখে ওই স্থানে স্লুইস গেট নির্মাণের পরিবর্তে একটি ব্রীজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল ও ভূক্তভোগি এলাকাবাসী।

খুলনা গেজেট/ টিএ

The post পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :
জনপ্রিয়

পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ

Update Time : 06:07:10 pm, Saturday, 30 November 2024

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগা-২ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার নৌখালী নদীতে অপ্রয়োজনীয় স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের রামনগর এলাকার নৌখালী নদীতে এই স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণ কাজের ভূয়া প্রকল্পের নামে সরকারী টাকা লুটপাটের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।

অপয়োজনীয় স্লুইচ গেট পুনঃনির্মাণের কাজ বন্ধ করাসহ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে জনস্বার্থে তথ্য সম্বলিত কাগজপত্রসহ জেলা প্রশাসক ও পাউবো’র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন অবসর প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাতক্ষীরার আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের বাঁশঘাটা গ্রামের কাজী এনামুল হক।

তিনি লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন যে, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী/ শাখা কর্মকর্তা কর্তৃক জারিকরা একটি নোটিশটিতে বলা হয়েছে, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার রামনগর স্লুইচ পুনঃনির্মাণ কাজটি চলমান রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় পানি নিষ্কাশনের জন্য পূর্বেই রামনগর স্লুইচ গেট নির্মিত হয়েছিল। জারীকৃত নোটিশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জমির উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কথাও বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাউবো কর্তৃপক্ষ এলাকার কোন জমি অধিগ্রহণ করেনি। কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে তা যদি জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয় তাহলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। অতীতে এলাকাতে কোন জলাবদ্ধতা ছিল না যা পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজন পড়বে। স্লুইচ গেট নামে খ্যাত এই প্রকল্পটি এখানে নির্মাণের কোন যৌক্তিকতা নেই। এখানে স্লুইচ গেটটি পুনঃনির্মাণ করলে তা হবে অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয়। এটি জনস্বার্থের পরিপন্থি একটি প্রকল্প যা শুধু সরকারি অর্থের অপচয় ঘটিয়ে দুর্নীতিবাজ লোকদের লুটপাট করার পরিকল্পনা মাত্র।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে স্লুইস গেট নির্মাণের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জনৈক্য ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল এবং বলেছিল তিনি বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ২৫/৩০ বছর অফিসে যোগাযোগ করেও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কোন ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। সেসময় কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে জানিয়েছিল কোন জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মিথ্যাচার এবং ধোকাবাজি করেছে। যা ঘটনার প্রমাণ স্বরুপ ঐ জমির উপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বাড়ীটি আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। স্লুইজ গেটটি নৌখালী নদীতে নির্মিত হয়েছিল যার পূর্ব পাশে বাঁশঘাটা গ্রাম এবং পশ্চিম পার্শ্বে রামনগর গ্রাম। নৌখালী নদীতে প্রাকৃতিক নিয়মেই জোয়ার ভাটা বইত।

এই নদীটি ছিল এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদ স্বরপ। এই নদীতে স্লুইচ গেট নির্মাণ করে পাউবো কর্তৃপক্ষ নদীটির জোয়ার ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। নদীটি এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে যার ফলে আমরা সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। নদীটির ২ পাশে ২ গ্রামের বাসীন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার জন্য নৌখালী নদীর উপর একটি ব্রীজ দরকার। অবিলম্বে রামনগর সুইস পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে নৌখালী নদীতে যে স্লুইচ গেট নির্মিত হয়েছিল তা অপসারণের ব্যবস্থা করে নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা দরকার। তাহলে নদীটিতে আবার জোয়ার ভাটা চলমান হবে, নদী থেকে এলাকার জনগণ সকল সুযোগ সুধিধা ভোগ করতে পারবে। যেহেতু এই এলাকায় কোন সময় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়নি। সেহেতু এলাকাবাসী মনে করে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেট তৈরীর মধ্য দিয়ে সরকারের বিপুল অর্থের অপচয় হবে। এটিা জনগণের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। এছাড়া ওই প্রকল্প নিয়ে এলাকাবাসীর কোন মতামত নেওয়া হয়নি।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ -২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলার নেীখালী নদীতে স্লুইচ গেট নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

অভিযোগের সত্যতা পর্যালোচনা পূর্বক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক অবিলম্বে চলমান কাজটি বন্ধ রেখে ওই স্থানে স্লুইস গেট নির্মাণের পরিবর্তে একটি ব্রীজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল ও ভূক্তভোগি এলাকাবাসী।

খুলনা গেজেট/ টিএ

The post পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.