ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম তালুকদারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জেলার পূবালী ব্যাংকের শাখা থেকে টাকা উঠিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে বিএনপির নেতাকর্মীরা আটকে রেখে তাকে লাঞ্ছিত করে টাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের পূবালী ব্যাংকের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে মনিরুল ইসলাম তালুকদার টাকা তুলতে পূবালী ব্যাংকে আসেন। টাকা নিয়ে নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে কিল-ঘুষি ও লাথি দিতে শুরু করেন। এ সময় তার জামা ছিঁড়ে ফেলেন কয়েকজন। এ সুযোগে টাকা ছিনিয়ে নেন আরও কয়েকজন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যবসায়িক পার্টনার জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে মারধর করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ঝালকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান। পরে তাকে সেখান থেকে চলে যেতে সহায়তা করেছেন আনিছুর রহমান ও তার কর্মী-সমর্থকরা।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম তালুকদারের ব্যবসায়িক জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘আমি ও মনির ভাই একসঙ্গে পূবালী ব্যাংকে যাই টাকা তোলার জন্য। কারণ একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল পত্রিকার প্রকাশক মনির ভাই। পত্রিকার সাংবাদিকদের বেতনের টাকা উঠাতে তিনি আমাকে ব্যাংকে আসতে বলেন। টাকা তুলে ব্যাংকের নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন। ওই সময় সেখান থেকে আমাকে তারা চলে যেতে বলায় পাশে সরে যাই। তখন দেখলাম বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান মনির ভাইকে পাশের একটি কাপড়ের দোকানে নিয়ে যান। সেখানে মনির ভাইয়ের কাছ থেকে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।’
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, ‘মনিরুল ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আমি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায় বিএনপির একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে শুনেছি, তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির যেসব নেতাকর্মী জড়িত আছে, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপির ছয় নেতাকর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তারা কারা আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মবিন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, ‘আমি ফেসবুকে দেখেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘পূবালী ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা তুলেছি। এর মধ্যে দুই লাখ টাকা একজনকে দিয়েছি। বাকি টাকা নিয়ে ব্যাংকের নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুবেল ফকিরসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা আমাকে আটকে রেখে টাকা দাবি করেন। পরে জোর করে আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন তারা।’
ঝালকাঠি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মনিরুল ইসলাম তালুকদার দুই মামলার আসামি। তাকে আটকে রাখার খবর শুনে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই তিনি চলে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি।’
The post ঝালকাঠিতে আ.লীগ নেতার ১০ লাখ টাকা ছি*নি*য়ে নেওয়ার অভিযোগ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.