কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
অস্বাভাবিক জোয়ার ও জলোচ্ছ¡াসের পানিতে দূর্ভিসহ জীবন যাপন করা দুই শতাধিক পরিবারের নিন্ম আয়ের নারী পুরুষ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং কয়েশত এলাকাবাসী এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করে।
কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিমলোন্দা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের টিয়াখালী নদের তীর ঘেঁষা খোকন মোল্লার ব্রিকফিল্ড এলাকা থেকে আঃ খালেক খানের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায়, জোয়ার ভাটায় প্লাবিত প্রায় ২৫০ পরিবার এবং বাড়ির আঙ্গিনা, জমি এবং পুকুওে মাছ চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ধারাবাহিক জলাবদ্ধতায় দেখা দিয়েছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষের পানিবাহিত নানা রোগ। সুপেয় পানির অভাব প্রকট হয়ে দাড়িয়েছে। তাই টেকসই বেড়িবাঁধের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং এলাকাবাসী এই মানববন্ধন করা হয়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মানববন্ধনে দাবি আদায়ে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ফকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ মোল্লা, মোঃ শাহীন মোল্লা, মোঃ সোহেল মোল্লা, ভুক্তভোগী কৃষক মো: মোশারফ হাওলাদার, বেল্লাল হোসেন, মোসাঃ হালিমা আয়শা এবং মেহেদী হাসান প্রমূখ।
মোঃ শাহীন মোল্লা বলেন, জোয়ার-ভাটা আমাদের এলাকার প্রায় ২৫০ পরিবারের ঘর-বাড়ি পানিতে ডুবে যায়। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। রান্না ঘরে পানি উঠে যাওয়ার কারণে আমরা রান্না করতে পারি না। বিগত দিনে ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময়ে ৪ দিন পর্যন্ত আমাদের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে ছিল। জোয়ার-ভাটা কৃষি জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে বছরে একবার চাষাবাদ করতেও আমাদের কষ্ট হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সোহেল মোল্লা বলেন, আমাদের প্রায় ২০০ একর জমি তলিয়ে থাকে। তিন ফসলী এই জমি অথচ আমরা এক ফসলও চাষাবাদ করতে পারি না। আমরা অনেক কষ্টের মাঝে আছি। আমাদের এখানে একটা টেকসই বেড়িবাঁধ খুবই প্রয়োজন।
হালিমা আয়শা বলেন, আমরা এই এলাকার কয়েকজন স্বেচ্ছাসেববক মিলে দীর্ঘ দুইমাস ধরে একটি গবেষণা করেছি। আমাদের গবেষণায় এই এলাকার বিভিন্ন সমস্যা পেয়েছি যার মধ্যে কৃষি উৎপাদন সমস্যা পেয়েছি হওয়া, যাতায়ত ব্যবস্থার সমস্যা পেয়েছি। বাচ্চাদের স্কুলে যেতে অনাগ্রহী। সুচিকিৎসার অভাব। সব কিছুর মূলে গিয়ে একটা সমস্যা পেয়েছি যে টেকসই বেড়িবাঁধ নেই।
মেহেদী হাসান বলেন, যদিও আমি এই এলাকার ভোক্তভোগী না। এলাকার সমস্যা নিয়ে দুই মাস ধরে কাজ করছি। এখানে প্রায় ২৫০টি পরিবার জোয়ার আসলেই ঘরে পানি উঠে যায়। এমনকি ঘূর্ণিঝড় তো দূরের কথা বর্ষার সময়ে ঘরে পানি উঠে যায়।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লোন্দা গ্রামের শত শত পরিবার ঘূর্নিঝড় রিমালের সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা তাদের স্বাস্থ্য সেবা, নিরাপদ পানি প্রাপ্যতা, স্যানিটেশন এবং টিকসই রিং বেড়িবাধ নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রæত বাস্তায়নের উদ্যোগ গ্রহন করেছি।
The post কলাপাড়ায় টেকসই বেড়িবাঁধের দাবীতে মানববন্ধন appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.