2:52 am, Friday, 13 December 2024

চার ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ডগড়া সংগ্রহ

অনেকটা গাণিতিক গ্রাফের মতো বাংলাদেশের ইনিংস। শুরুতে নিচে নেমেছে দুই উইকেট পতনে। এরপর সৌম্য সরকার এবং মেহেদি হাসান মিরাজের কল্যাণে উর্ধ্বমুখী চলা। মাঝে ২৬ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানো। শেষদিকে ফের জাকের আলী অনিক এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়। ফিফটি এসেছে চারটি। তাতে বছরের শেষ ওয়ানডেতে এসে ৩০০ রান পার করেছে বাংলাদেশ।

সেইন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ চার ফিফটির সুবাদে করেছে ৩২১ রান। চলতি বছরে এটিই বাংলাদেশের প্রথমবার ৩০০ রান পার করা। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী অনিক যোগ করেছেন ঠিক ঠিক ১৫০ রান। এটি ৬ষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। সেইসঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

অবশ্য প্রথমে ব্যাট করার সাপেক্ষে এটিই সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে টন্টনে রানতাড়া করতে গিয়ে ৩২২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেবার অবশ্য রানতাড়া করতে নেমেছিল বাংলাদেশ।

এদিনের শুরুটাও ছিল আগের মতোই। টপঅর্ডারে ছিল চিরায়ত ধস। স্কোরকার্ডে ৯ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস। তৃতীয় ওভারে জোসেফের করা দ্বিতীয় বলে পুল শট করতে গিয়ে বল ওপরে তুলে রাদারফোর্ডের সহজ ক্যাচে পরিণত হন জুনিয়র তামিম। এক বল বিরতি দিয়েই ফেরেন লিটন কুমার দাস। অনেকটা বাইরের বলে কাট করতে চেয়েছিলেন লিটন। প্রথম ওভারেই সৌম্যর ক্যাচ ফেলে দিলেও এদফায় ব্রেন্ডন কিং ঠিকই বল লুফে নেন।

এরপরেই আসে মিরাজ ও সৌম্যের অসাধারণ এক জুটি। দুজনেই যেখানে পেয়েছেন ফিফটি। দলকে টেনেছেন অনেকটা সময় পর্যন্ত। সম্প্রতি মিরাজের ব্যাটে রান এলেও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ধীরগতির ইনিংসের কারণে। আজ অবশ্য সেই দায় থেকে মুক্ত থাকছেন তিনি। শুরু থেকেই কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন। ব্যাটে-বলে তাল মিলিয়ে খেলতে চেয়েছেন।

সৌম্য সরকারই বরং খানিক ধীরে চলো নীতিতে এগিয়েছেন। দুজনের মাঝে ফিফটির ল্যান্ডমার্কে পার্থক্য ছিল ১ বলের। মিরাজ ফিফটি পেয়েছেন ১৯.৪ ওভারে। আর সেই ওভারের শেষ বলে অর্ধশতক পূরণ হয় সৌম্য সরকারের। দুজনের জুটি থামে ১৪৫ রানে। এরপরেই মিডলঅর্ডারের এমন বিপর্যয়ে ক্রিজে বাংলাদেশের জন্য এসেছে কঠিন সময়। দুজনের জুটি যোগ করেছেন ১৩৬ রান।

এরপরেই ধস দেখেছে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। ২৬ রানের মাথায় পতন ঘটে ৩ উইকেটের। প্রথম ধাক্কা আসে সৌম্য সরকারের বিদায়ে। ৫০ করার পরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেছিলেন এই। জেডিয়াহ ব্লেডসকে তিন চারের পর গুড়াকেশ মোতিকে মেরেছেন ছক্কা। কিন্তু ওটুক পর্যন্তই যেতে পেরেছেন তিনি। পরের বলেই এলবিডব্লু হয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার। ৭৩ বলে ৭৩ করে ফেরেন তিনি।

এরপরেই দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়েছেন মিরাজ। রাদারফোর্ডের থ্রোতে ফিরতে হয়েছে ৭৭ রান করে। পরের ওভারে বল হাতে উইকেট নিলেন শেরফান রাদারফোর্ড। অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা বলটা লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে মিড–উইকেটে ধরা পড়েন ২৯ বলে ১৫ রান করা আফিফ। কিন্তু এরপরেই ক্রিজে আসেন ছন্দে থাকা জাকের আলী অনিক।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রিয় মাঠ সেন্ট কিটস। সেই মাঠেই খেললেন আরও একটা মনে রাখার মতো ইনিংস। সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ ছিল। তবে সেসব ছাপিয়ে স্কোরবোর্ডে তার অবদানটাই বড় হয়ে থাকবে যথারীতি। ৬৩ বলে করেছেন ৮৪ রান। ৭ চারের সঙ্গে আছে ৪ ছক্কা। ক্রিজ যখন ছাড়ছেন তখন এই সিরিজে তার গড় ১৯৬!

অভিজ্ঞ রিয়াদকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়ে গেছেন নতুন মুখ জাকের আলী অনিক। ৫৭ বলে ৬২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। অভিষেকের পর থেকে মুগ্ধতা ছড়ানো জাকের এদিনও খেলেছেন মনে রাখার মতো ইনিংস। রিয়াদের সঙ্গে ৬ষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ জুটি করেছেন। আর তাতেই বছরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ থেমেছে ৩২১ রান করে।

খুলনা গেজেট/এএজে

The post চার ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ডগড়া সংগ্রহ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :
জনপ্রিয়

চার ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ডগড়া সংগ্রহ

Update Time : 12:24:23 am, Friday, 13 December 2024

অনেকটা গাণিতিক গ্রাফের মতো বাংলাদেশের ইনিংস। শুরুতে নিচে নেমেছে দুই উইকেট পতনে। এরপর সৌম্য সরকার এবং মেহেদি হাসান মিরাজের কল্যাণে উর্ধ্বমুখী চলা। মাঝে ২৬ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানো। শেষদিকে ফের জাকের আলী অনিক এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়। ফিফটি এসেছে চারটি। তাতে বছরের শেষ ওয়ানডেতে এসে ৩০০ রান পার করেছে বাংলাদেশ।

সেইন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ চার ফিফটির সুবাদে করেছে ৩২১ রান। চলতি বছরে এটিই বাংলাদেশের প্রথমবার ৩০০ রান পার করা। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী অনিক যোগ করেছেন ঠিক ঠিক ১৫০ রান। এটি ৬ষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। সেইসঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

অবশ্য প্রথমে ব্যাট করার সাপেক্ষে এটিই সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে টন্টনে রানতাড়া করতে গিয়ে ৩২২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেবার অবশ্য রানতাড়া করতে নেমেছিল বাংলাদেশ।

এদিনের শুরুটাও ছিল আগের মতোই। টপঅর্ডারে ছিল চিরায়ত ধস। স্কোরকার্ডে ৯ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস। তৃতীয় ওভারে জোসেফের করা দ্বিতীয় বলে পুল শট করতে গিয়ে বল ওপরে তুলে রাদারফোর্ডের সহজ ক্যাচে পরিণত হন জুনিয়র তামিম। এক বল বিরতি দিয়েই ফেরেন লিটন কুমার দাস। অনেকটা বাইরের বলে কাট করতে চেয়েছিলেন লিটন। প্রথম ওভারেই সৌম্যর ক্যাচ ফেলে দিলেও এদফায় ব্রেন্ডন কিং ঠিকই বল লুফে নেন।

এরপরেই আসে মিরাজ ও সৌম্যের অসাধারণ এক জুটি। দুজনেই যেখানে পেয়েছেন ফিফটি। দলকে টেনেছেন অনেকটা সময় পর্যন্ত। সম্প্রতি মিরাজের ব্যাটে রান এলেও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ধীরগতির ইনিংসের কারণে। আজ অবশ্য সেই দায় থেকে মুক্ত থাকছেন তিনি। শুরু থেকেই কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন। ব্যাটে-বলে তাল মিলিয়ে খেলতে চেয়েছেন।

সৌম্য সরকারই বরং খানিক ধীরে চলো নীতিতে এগিয়েছেন। দুজনের মাঝে ফিফটির ল্যান্ডমার্কে পার্থক্য ছিল ১ বলের। মিরাজ ফিফটি পেয়েছেন ১৯.৪ ওভারে। আর সেই ওভারের শেষ বলে অর্ধশতক পূরণ হয় সৌম্য সরকারের। দুজনের জুটি থামে ১৪৫ রানে। এরপরেই মিডলঅর্ডারের এমন বিপর্যয়ে ক্রিজে বাংলাদেশের জন্য এসেছে কঠিন সময়। দুজনের জুটি যোগ করেছেন ১৩৬ রান।

এরপরেই ধস দেখেছে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। ২৬ রানের মাথায় পতন ঘটে ৩ উইকেটের। প্রথম ধাক্কা আসে সৌম্য সরকারের বিদায়ে। ৫০ করার পরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেছিলেন এই। জেডিয়াহ ব্লেডসকে তিন চারের পর গুড়াকেশ মোতিকে মেরেছেন ছক্কা। কিন্তু ওটুক পর্যন্তই যেতে পেরেছেন তিনি। পরের বলেই এলবিডব্লু হয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার। ৭৩ বলে ৭৩ করে ফেরেন তিনি।

এরপরেই দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়েছেন মিরাজ। রাদারফোর্ডের থ্রোতে ফিরতে হয়েছে ৭৭ রান করে। পরের ওভারে বল হাতে উইকেট নিলেন শেরফান রাদারফোর্ড। অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা বলটা লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে মিড–উইকেটে ধরা পড়েন ২৯ বলে ১৫ রান করা আফিফ। কিন্তু এরপরেই ক্রিজে আসেন ছন্দে থাকা জাকের আলী অনিক।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রিয় মাঠ সেন্ট কিটস। সেই মাঠেই খেললেন আরও একটা মনে রাখার মতো ইনিংস। সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ ছিল। তবে সেসব ছাপিয়ে স্কোরবোর্ডে তার অবদানটাই বড় হয়ে থাকবে যথারীতি। ৬৩ বলে করেছেন ৮৪ রান। ৭ চারের সঙ্গে আছে ৪ ছক্কা। ক্রিজ যখন ছাড়ছেন তখন এই সিরিজে তার গড় ১৯৬!

অভিজ্ঞ রিয়াদকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়ে গেছেন নতুন মুখ জাকের আলী অনিক। ৫৭ বলে ৬২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। অভিষেকের পর থেকে মুগ্ধতা ছড়ানো জাকের এদিনও খেলেছেন মনে রাখার মতো ইনিংস। রিয়াদের সঙ্গে ৬ষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ জুটি করেছেন। আর তাতেই বছরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ থেমেছে ৩২১ রান করে।

খুলনা গেজেট/এএজে

The post চার ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ডগড়া সংগ্রহ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.