নিজস্ব প্রতিনিধি:
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দল গোছাতে জেলায় জেলায় সভা করছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গত শুক্রবার বিকেলে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার আটটি ইউনিটের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে দলটি। সভায় নগর বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন কোনো কোনো নেতা। তাঁদের বক্তব্য, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে দলের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে মানুষ এবং বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ ভাবছে। সভা চলাকালে উত্তর জেলা বিএনপির দুই নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু নগরের অভিজাত হোটেল গ্র্যান্ড পার্কে আয়োজিত ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি স্থানীয় নেতাদের মতামত নেন। একপর্যায়ে চাঁদাবাজি ও পকেট কমিটি গঠনের মতো অভিযোগ উঠলে সাত দিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তিনি।
হোটেল গ্র্যান্ড পার্কের সভায় আবদুল আউয়াল মিন্টুর উপস্থিতিতে মহানগর বিএনপির চার নেতা বক্তব্য দেন। একজন বলেন, সম্মেলনের জন্য নগরের ৩০টি ওয়ার্ড একবারে ভেঙে দিলে নব্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দোসরেরা দলে ঢুকে পড়তে পারে। প্রতিটি সেক্টরে চাঁদাবাজি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগর বিএনপির কেউ কেউ এর সঙ্গে জড়িত। দলের ইমেজ রক্ষায় এসব অপকর্ম থামানো দরকার। ঝালকাঠিতে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলে এ ধরনের কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান কেন্দ্রীয় নেত্রী জেবা আমিন।
বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মিজানুর রহমান মুকুল বলেন, প্রকৌশলী আব্দুস সোবাহান জেলার নেতা নন। তিনি কেন এ সভায় এসেছেন—এ নিয়ে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হলে দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান তাঁদের থামিয়ে দেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নগর বিএনপির বঞ্চিত সাবেক নেতারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গ্র্যান্ড পার্কে যান। সেখানে তাঁরা নগর বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দেন। হোটেলের সামনে নেতা-কর্মীরা যখন স্লোগান দিচ্ছিলেন, তখন ভেতরে বিভাগের আটটি ইউনিট নিয়ে সভা চলছিল।
নগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ আহসান কবির হাসান জানান, সহস্রাধিক নেতা-কর্মী গ্র্যান্ড পার্কে মিছিল নিয়ে যান। সেখানে কর্মীরা অবৈধ কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। পরে সিনিয়র নেতারা আবদুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে বলা হয়, কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁরা নগরীর নন, উপজেলার লোক। এ কমিটি দিয়ে সম্মেলন করা যাবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘সম্মেলন করতে হলে ৩০টি ওয়ার্ড ভাঙতে হতে পারে। যাঁরা অভিযোগ দিয়েছেন, সেটি তাঁদের বিষয়, আমাদের নয়। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ছিলেন, তাঁদের দিয়েই কমিটি হয়েছে। আর চাঁদাবাজি যে-ই করুক, আমি তার বিরুদ্ধে। কে কী করছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবই জানেন।’
চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রমাণ করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাঁর সতর্ক হওয়া উচিত। কেউ চাঁদাবাজি করলে দল ব্যবস্থা নেবে।
ঝালকাঠিতে পকেট কমিটি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাঁর যাঁর পছন্দের লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। দল এ ধরনের তৎপরতা ঠেকাতেই সম্মেলনের মাধ্যমে বিভাগের ছয় জেলার আটটি ইউনিট গঠন করতে চায়।
The post চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে বিএনপির সভায় উত্তাপ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.