যৌতুক সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়ে সালিশে অংশ নিতে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির তিন নেতাকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মী সমর্থকরা এ ঘটনার প্রতিবাদে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেছেন।
আহতরা হলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সংগঠক জিহান মাহমুদ ও সদর উপজেলার সংগঠক হাসান নাসিমুল ওরফে রাসেল।
পুলিশ, আহত নেতারা ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, ব্রাাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি লিশিয়ারা গ্রামের রাবেয়া খাতুন গত তিন থেকে চার মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আদালতে স্বামী মো. হাবিবুল্লাহর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। রাবেয়া খাতুন সম্পর্কে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহর খালা হন। আদালত উভয়পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলসহ দুই পক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। উভয়পক্ষেই বিএনপিপন্থী আইনজীবী নিয়োজিত ছিলেন।
পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী রোববার বিকেল ৫টার দিকে লোকজন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে পৌঁছতে শুরু করেন। তবে রাবেয়া খাতুনের পক্ষের লোকজন কিছুটা বিলম্বে পৌঁছে বলে অন্যদিন সালিশে বসবেন বলে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান। তবে বিকেল ৫টা ১০মিনিটে মফিজুর রহমানের কক্ষে পৌঁছান নাগরিক কমিটির নেতা আতাউল্লাহ, জিহান মাহমুদ ও হাসান নাসিমুল। সেখানে চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসেন আতাউল্লাহ। বিলম্বে পৌঁছাসহ বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আতাউল্লাহসহ বাকিদের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা আতাউল্লাহসহ জাতীয় নাগরিক কমিটির জিহান মাহমুদ ও হাসান নাসিমুলকে মারধর করেন। তবে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আইনজীবীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ বলেন, একজনের জামিনের জন্য আদালতে যাই। পরে কসবার একজন আত্মীয় পরিচয় করিয়ে দিতে আমাকে ডেকে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে নিয়ে যান। আমাদের পরিচয় শুনে তারা মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাতি নিভিয়ে ও দরজা বন্ধ করে আমাদেরকে মারধর করেছে।
এদিকে খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, যৌতুক সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়টি মীমাংসার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে দুই পক্ষের আইনজীবীরা বসেন। খালার কথায় সেখানে যান আতাউল্লাহ। এটি নেহায়েত একটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মামলা। পরিষ্কার করে বলছি এখানে দলাদলির বা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই। দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
খুলনা গেজেট/এইচ
The post ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির তিন নেতাকে মারধর appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.