প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম খুলনা জেলা শাখার পক্ষ থেকে ‘গণ-অভ্যুত্থান ও বৈষম্য বিরোধী চেতনার প্রেক্ষিতে শিক্ষা এবং শিক্ষক আন্দোলন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) বৈঠক কক্ষে উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভার শুরুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক শেখ সাদী ভূঞা’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিবরতা পালন করা হয়।
সংগঠনের খুলনা জেলার প্রধান সংগঠক শিক্ষক নেতা প্রলয় মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং সদস্য গৌর বর্মনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আলোচনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ সাহা, বিএমএ খুলনা জেলা সভাপতি ডাঃ বাহারুল আলম, বিশিষ্ট আইনজীবী ও নাগরিক নেতা এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি রায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আবুল ফজল, সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামাল পপলু, টিআরসি ইন্সট্রাক্টর জগজ্জীবন বিশ্বাস, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নজরুল গবেষক সৈয়দ আলী হাকিম, কলেজ শিক্ষক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ভবতোষ কুমার ঘোষ, কালিপদ দাস, স্টার জুট মিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাঁটাইকৃত শিক্ষক রাজা খান, অবসরপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক নেতা নিত্যানন্দ সরকার, মাসুদ হাসান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আলোচকরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে সর্ব প্রথমে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে হবে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সর্বস্তরে আর্থিক, লৈঙ্গিক, আঞ্চলিক, অবকাঠামোগত নানা বৈষম্য তীব্রমাত্রায় বিরাজমান। সংবিধানে একই পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার কথা থাকলেও বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে ১৩ ধারা, মাধ্যমিকে ৪ ধারা, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায়ও একাধিক ধারা বিদ্যমান। শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ গবেষণা হলেও এই খাতে বরাদ্দ যা দেয়া হয় তা না দেয়ার শামিল। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমরা সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারিনি। শিক্ষা এখন লাভজনক পণ্য। সরকারে চেহারা পাল্টেছে, কিন্তু নীতিগতভাবে সব সরকার বৈষম্য লালন করেছে। শিক্ষকদের বেতনকাঠামো অমানবিক। তারা সামাজিক নানা অপশক্তির হাতেও জিম্মি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্য দূর করার সূচনা করবে এই আকাক্সক্ষা মানুষ করেছিল। কিন্তু এখনও শিক্ষকরা যেভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন, পুলিশ কর্তৃক হামলার শিকার হচ্ছেন, শিক্ষাখাতে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে সেসব বিষয়ে সরকারের নির্লিপ্ততা মানুষকে আশাহত করছে। বক্তারা একটি সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক একই পদ্ধতির বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভার শেষে শিক্ষক নেতা প্রলয় মজুমদারকে আহ্বায়ক এবং গৌর বর্মনকে সদস্য সচিব করে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম খুলনা জেলা কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হয়।
-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
খুলনা গেজেট/এএজে
The post শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দূর না করে সমাজকে বৈষম্যমুক্ত করা সম্ভব নয় appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.