3:15 pm, Saturday, 4 January 2025

খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছে অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের সময়ে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ২০ জুলাই কার্ফু জারির পর থেকে ম্যাজিস্ট্রেটরা বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সাথে দায়িত্বপালন করেন। এসব ম্যাজিস্ট্রেটদের কর্মকান্ড ও নির্দেশনার বিস্তারিত বিবরণ পাঠানোর জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা চেয়ে দাপ্তরিক পত্র দিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের সূত্র বলেছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন খুব শিগগিরি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

সূত্র জানায়, গত ৫ জুন থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। যা এক পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। প্রথম দিকে জেলা প্রশাসনের কাছে এ আন্দোলন গুরুত্ব পায়নি। হাইকোর্টের রায়ের পর ছাত্র সমাজ রাস্তায় নামতে শুরু করে। তখনও পুলিশী তৎপরতা শুরু হয়নি। অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পত্রে বলা হয়, বিশেষ করে ১৯ জুলাই কার্ফু জারির পর থেকে পুলিশের তৎপরতা, নির্যাতন, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের হুমকি-ধামকি, একে অপরকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময়ে জেলা প্রশাসনের ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ে খুলনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। কার্ফু জারির প্রথম দিনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাত দফা নির্দেশনা দেন। ওই আদেশে বলা হয়, জনগণের যানমালের নিরাপত্তা বিধান, সরকারি সম্পত্তি ও স্থাপনার নিরাপত্তা বিধান, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মহানগরীসহ ৯ উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।

জেলা প্রশাসনের রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত খুলনা মহানগরী এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা হচ্ছেন নাভিদ সারওয়ার, রুবায়েত আহমেদ, মো. মুনতাসির হাসান খান, মো. আনোয়ার সাদাত, দাকোপ উপজেলায় মো. জুবায়ের জাহাঙ্গীর, পাইকগাছায় মো. ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, বটিয়াঘাটা উপজেলায় মো. আসাদুর রহমান, ফুলতলায় পাপিয়া সুলতানা, ডুমুরিয়ায় আরাফাত হোসেন, তেরখাদায় সুমাইয়া সুলতানা এ্যানি, কয়রায় বিএম তারিক উজ জামান, দিঘলিয়ায় খান মাসুম বিল্লাহ ও রূপসায় কোহিনুর জামান। জুলাই-আগস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন স্থানে বদলি হয়েছেন।

সূত্র উল্লেখ করেন, কার্ফু জারির দুই দিন আগে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানায় খুলনায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি নগরীর শিববাড়ি, সাতরাস্তা, জিরোপয়েন্ট, গল্লামারী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পুলিশী তৎপরতা বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। গত ৪ আগস্ট বিজিবির খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের কাছে এক আবেদনে জেলার জনগণের যানমালের নিরাপত্তা বিধান ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোতায়েনের দাবি করেন। একই দিনে এখানে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের জন্য প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে আবেদন করেন।

খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি দাপ্তরিক পত্র আমরা পেয়েছি। এ বিষয় চূড়ান্ত করতে প্রক্রিয়াধীন।

খুলনা গেজেট/এমএম

The post খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছে অপরাধ ট্রাইব্যুনাল appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.

Tag :
জনপ্রিয়

খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছে অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

Update Time : 10:07:55 pm, Wednesday, 1 January 2025

জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের সময়ে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ২০ জুলাই কার্ফু জারির পর থেকে ম্যাজিস্ট্রেটরা বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সাথে দায়িত্বপালন করেন। এসব ম্যাজিস্ট্রেটদের কর্মকান্ড ও নির্দেশনার বিস্তারিত বিবরণ পাঠানোর জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা চেয়ে দাপ্তরিক পত্র দিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের সূত্র বলেছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন খুব শিগগিরি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

সূত্র জানায়, গত ৫ জুন থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। যা এক পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। প্রথম দিকে জেলা প্রশাসনের কাছে এ আন্দোলন গুরুত্ব পায়নি। হাইকোর্টের রায়ের পর ছাত্র সমাজ রাস্তায় নামতে শুরু করে। তখনও পুলিশী তৎপরতা শুরু হয়নি। অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পত্রে বলা হয়, বিশেষ করে ১৯ জুলাই কার্ফু জারির পর থেকে পুলিশের তৎপরতা, নির্যাতন, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের হুমকি-ধামকি, একে অপরকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময়ে জেলা প্রশাসনের ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ে খুলনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। কার্ফু জারির প্রথম দিনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাত দফা নির্দেশনা দেন। ওই আদেশে বলা হয়, জনগণের যানমালের নিরাপত্তা বিধান, সরকারি সম্পত্তি ও স্থাপনার নিরাপত্তা বিধান, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মহানগরীসহ ৯ উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।

জেলা প্রশাসনের রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত খুলনা মহানগরী এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা হচ্ছেন নাভিদ সারওয়ার, রুবায়েত আহমেদ, মো. মুনতাসির হাসান খান, মো. আনোয়ার সাদাত, দাকোপ উপজেলায় মো. জুবায়ের জাহাঙ্গীর, পাইকগাছায় মো. ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, বটিয়াঘাটা উপজেলায় মো. আসাদুর রহমান, ফুলতলায় পাপিয়া সুলতানা, ডুমুরিয়ায় আরাফাত হোসেন, তেরখাদায় সুমাইয়া সুলতানা এ্যানি, কয়রায় বিএম তারিক উজ জামান, দিঘলিয়ায় খান মাসুম বিল্লাহ ও রূপসায় কোহিনুর জামান। জুলাই-আগস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন স্থানে বদলি হয়েছেন।

সূত্র উল্লেখ করেন, কার্ফু জারির দুই দিন আগে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানায় খুলনায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি নগরীর শিববাড়ি, সাতরাস্তা, জিরোপয়েন্ট, গল্লামারী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পুলিশী তৎপরতা বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। গত ৪ আগস্ট বিজিবির খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের কাছে এক আবেদনে জেলার জনগণের যানমালের নিরাপত্তা বিধান ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোতায়েনের দাবি করেন। একই দিনে এখানে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের জন্য প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে আবেদন করেন।

খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি দাপ্তরিক পত্র আমরা পেয়েছি। এ বিষয় চূড়ান্ত করতে প্রক্রিয়াধীন।

খুলনা গেজেট/এমএম

The post খুলনার ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা চেয়েছে অপরাধ ট্রাইব্যুনাল appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.