5:09 am, Sunday, 5 January 2025

বরিশালের পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বি*রো*ধ ও মামলা, শিক্ষার মান তলানিতে

আমাদের বরিশাল ডেস্ক:

স্থানীয় দ্বন্ধের কারণে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বিরোধ ও মামলায় সৃষ্ট শিক্ষকদের দলাদলিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। মামলার ব্যয় চালাতে স্কুলগুলোতে চলছে অর্থ সঙ্কট। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও শিক্ষার মান এখন তলানিতে এসে পৌঁছেছে। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে শিক্ষাবোর্ড ।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১,৮০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুল আহ্বায়ক ও ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ম্যানেজিং কমিটি গঠনে শঠতা, গোপনীয়তা, দাতা ও প্রতিষ্টাতাদের উপেক্ষা, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েই পাঁচ শতাধিক স্কুলে চলছে অস্থির অবস্থা। বিরোধ আর মামলায় জর্জরিত এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। কোনোভাবেই এ অবস্থাকে সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলছেন, ‘স্কুল কমিটিতে কে আসবে, কে আসতে পারে না, তা নিয়েই বিরোধের শুরু হয়। এমনও দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, স্থানীয় প্রভাবে যারা স্কুলের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা, তাদেরকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রায়শই স্বার্থান্বেষী মহল প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় গোপনে কমিটি গঠন করে। এতে প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষায়। প্রধান শিক্ষক মামলা চালাতে গিয়ে স্কুল চালাতে পারছে না।’

বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র ও বাণিজ্যিক এলাকা গির্জা মহল্লায় পৌনে দুই একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ কে (আসমত আলী খান) স্কুল। বর্তমানে কাল হয়ে দাড়িয়েছে এর অর্থ ও সম্পদ। এ স্কুলের সামনের বাণিজ্যিক স্টল থেকে মাসিক আয় ৬ লাখ টাকা। স্কুল ম্যানেজিং কমিটি এতদিন গঠন হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে। বিগত কমিটি অর্থ লোপাটে প্রধান শিক্ষক বাধা হওয়ায় তাঁকে গত ৪ বছর বহিষ্কার হয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। সম্প্রতি তিনি আইনগতভাবে দায়িত্ব নিয়ে দেখেন শিক্ষার্থী সংখ্যা অর্ধেকে। হিসাব নেই অনেক ব্যয়ের।

এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক এইচ আম জসিম উদ্দীন বলেন, ‘এই স্কুলের মাসিক বড় অংকের আয় ও প্রচুর সম্পদই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কমিটি এসব অর্থ ও সম্পদ অনৈতিকভাবে ভোগ করতে চেয়েছে। এমনকি সাবেক সভাপতি দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি বাধা দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বহিষ্কার করে ৪ বছর স্কুলের বাইরে রেখেছে। স্কুলে সৃস্টি করেছে দলাদলি। এ কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৫০ থেকে সাড়ে ৪৫০ তে নেমেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থী নেমেছে মাত্র ৬৫ জনে।’

অন্যদিকে, স্কুল সভাপতির রাজনৈতিক বিরাগভাজন হওয়ায় অনৈতিকতার অভিযোগে বহিষ্কার হয়ে ২০ মাস পালিয়ে থাকতে হয়েছে শের ই বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। উভয়স্থলেই ঝুলছে একাধিক মামলা।

শেরে বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের স্কুলের সভাপতি একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। গত সিটি নির্বাচনের সময় তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী এই স্কুলে এলে আমি তাকে সাদরে গ্রহণ করায় ক্ষুব্ধ হন সভাপতি। তারপর নানা অভিযোগ করা হয় আমার বিরুদ্ধে, দেওয়া হয় মামলা, আমাকে বহিষ্কার করা হয়। আমিও পাল্টা মামলা করি। সেই সভাপতি আমাকে শুধু গুলি করে হত্যা করা বাকি রেখেছিল। আমার অর্থ কেলেঙ্কারি না পেয়ে সে আমার চরিত্র হরনের অভিযোগ এনে বহিষ্কার করে। স্কুলের অফিস চালাতো বাসায় বসে। ২০ মাস পালিয়ে থেকে পটপরিবর্তনের পর গত ডিসেম্বরে আদালতের নির্দেশে দায়িত্ব নিয়ে স্কুলে বসেছি।’

স্কুলগুলোতে ম্যানেজিং কমিটিগুলোর এমন বিরোধ ও মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ সাধারণ শিক্ষক ও স্টাফ বরখাস্তের ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। এর মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলায় জড়িয়ে কারাবাসসহ বরখাস্ত আছেন আরও অনেকে। শিক্ষকতা করতে এসে ক্লাস রেখে শিক্ষকদের আদালতের বারান্দায় থাকতে হচ্ছে বেশিরভাগ সময়। যে কারণে সার্বিক শিক্ষা কার্ক্রম একাধারে যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে, তেমনই বিপদসঙ্কুল এসব স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ। এমন কথা জানিয়েছে শিক্ষকেরা।

এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। এরা অনেকেই সন্তানদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে দলাদলির কারণে শিক্ষকরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। অন্যদিকে, নিজের দল ভারি করতে কোনো পক্ষই মনিটরিং করছে না। ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের দাবি হলো, বিরোধ হলেই আদালতে মামলা দায়ের করে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। আদালত এমন মামলা গ্রহনের আগে যাচাই করে নিলে জট অনেক কমতে পারে। এমন একজন শিক্ষক হলেন মো. ফকরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা হলে তার প্রভাব শিক্ষার্থীসহ সবার ওপর পড়ে। এ অবস্থায় মামলা গ্রহণের আগে যাচাই করা শ্রেয়। তা না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা খুবই ভুক্তভোগী হয়।’

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীন ১,৮০০টি মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে ৫০২টি স্কুল এমন কোন্দল ও মামলায় জর্জরিত। ৮৬টি স্কুলের মামলা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এর মধ্যে ৭৬টি রিট হয়েছে, আপিল বিভাগে আছে ২টি, রিভিউ/রিভিশনে আছে ২টি, কন্টেপ্ট পিটিশন একটি, দেওয়ানিতে রয়েছে ৪টি ও ফৌজধারি রয়েছে একটি মামলা। শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘উচ্চ আদালতের ৮৬টি মামলার মধ্যে গত এক বছরে আমরা ২১ টি মামলার নিষ্পত্তি করিয়েছি। বাকিগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। বিরোধ ও মামলার কারণে স্কুলগুলোতে লেখাপড়ার মান ঠিক রাখা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অসন্তোষ। এক কথায় শিক্ষার পরিবেশ হারাচ্ছে। মামলা চালাতে অর্থের ব্যয় করতে গিয়ে স্কুলের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে, অর্থ সংকটে পড়ে স্কুলগুলো। আমি আমার কর্মকালীন সময় এসব বিরোধ ও মামলা নিষ্পত্তিতে উদ্যোগ নেব, গঠন করব বিশেষ মনিটরিং সেল।’

The post বরিশালের পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বি*রো*ধ ও মামলা, শিক্ষার মান তলানিতে appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

বরিশালের পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বি*রো*ধ ও মামলা, শিক্ষার মান তলানিতে

Update Time : 07:10:00 pm, Thursday, 2 January 2025

আমাদের বরিশাল ডেস্ক:

স্থানীয় দ্বন্ধের কারণে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বিরোধ ও মামলায় সৃষ্ট শিক্ষকদের দলাদলিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। মামলার ব্যয় চালাতে স্কুলগুলোতে চলছে অর্থ সঙ্কট। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও শিক্ষার মান এখন তলানিতে এসে পৌঁছেছে। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে শিক্ষাবোর্ড ।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১,৮০০ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুল আহ্বায়ক ও ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ম্যানেজিং কমিটি গঠনে শঠতা, গোপনীয়তা, দাতা ও প্রতিষ্টাতাদের উপেক্ষা, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েই পাঁচ শতাধিক স্কুলে চলছে অস্থির অবস্থা। বিরোধ আর মামলায় জর্জরিত এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। কোনোভাবেই এ অবস্থাকে সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলছেন, ‘স্কুল কমিটিতে কে আসবে, কে আসতে পারে না, তা নিয়েই বিরোধের শুরু হয়। এমনও দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, স্থানীয় প্রভাবে যারা স্কুলের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা, তাদেরকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রায়শই স্বার্থান্বেষী মহল প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় গোপনে কমিটি গঠন করে। এতে প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষায়। প্রধান শিক্ষক মামলা চালাতে গিয়ে স্কুল চালাতে পারছে না।’

বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র ও বাণিজ্যিক এলাকা গির্জা মহল্লায় পৌনে দুই একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ কে (আসমত আলী খান) স্কুল। বর্তমানে কাল হয়ে দাড়িয়েছে এর অর্থ ও সম্পদ। এ স্কুলের সামনের বাণিজ্যিক স্টল থেকে মাসিক আয় ৬ লাখ টাকা। স্কুল ম্যানেজিং কমিটি এতদিন গঠন হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে। বিগত কমিটি অর্থ লোপাটে প্রধান শিক্ষক বাধা হওয়ায় তাঁকে গত ৪ বছর বহিষ্কার হয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। সম্প্রতি তিনি আইনগতভাবে দায়িত্ব নিয়ে দেখেন শিক্ষার্থী সংখ্যা অর্ধেকে। হিসাব নেই অনেক ব্যয়ের।

এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক এইচ আম জসিম উদ্দীন বলেন, ‘এই স্কুলের মাসিক বড় অংকের আয় ও প্রচুর সম্পদই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কমিটি এসব অর্থ ও সম্পদ অনৈতিকভাবে ভোগ করতে চেয়েছে। এমনকি সাবেক সভাপতি দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি বাধা দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বহিষ্কার করে ৪ বছর স্কুলের বাইরে রেখেছে। স্কুলে সৃস্টি করেছে দলাদলি। এ কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৫০ থেকে সাড়ে ৪৫০ তে নেমেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থী নেমেছে মাত্র ৬৫ জনে।’

অন্যদিকে, স্কুল সভাপতির রাজনৈতিক বিরাগভাজন হওয়ায় অনৈতিকতার অভিযোগে বহিষ্কার হয়ে ২০ মাস পালিয়ে থাকতে হয়েছে শের ই বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। উভয়স্থলেই ঝুলছে একাধিক মামলা।

শেরে বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের স্কুলের সভাপতি একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। গত সিটি নির্বাচনের সময় তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী এই স্কুলে এলে আমি তাকে সাদরে গ্রহণ করায় ক্ষুব্ধ হন সভাপতি। তারপর নানা অভিযোগ করা হয় আমার বিরুদ্ধে, দেওয়া হয় মামলা, আমাকে বহিষ্কার করা হয়। আমিও পাল্টা মামলা করি। সেই সভাপতি আমাকে শুধু গুলি করে হত্যা করা বাকি রেখেছিল। আমার অর্থ কেলেঙ্কারি না পেয়ে সে আমার চরিত্র হরনের অভিযোগ এনে বহিষ্কার করে। স্কুলের অফিস চালাতো বাসায় বসে। ২০ মাস পালিয়ে থেকে পটপরিবর্তনের পর গত ডিসেম্বরে আদালতের নির্দেশে দায়িত্ব নিয়ে স্কুলে বসেছি।’

স্কুলগুলোতে ম্যানেজিং কমিটিগুলোর এমন বিরোধ ও মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ সাধারণ শিক্ষক ও স্টাফ বরখাস্তের ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। এর মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলায় জড়িয়ে কারাবাসসহ বরখাস্ত আছেন আরও অনেকে। শিক্ষকতা করতে এসে ক্লাস রেখে শিক্ষকদের আদালতের বারান্দায় থাকতে হচ্ছে বেশিরভাগ সময়। যে কারণে সার্বিক শিক্ষা কার্ক্রম একাধারে যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে, তেমনই বিপদসঙ্কুল এসব স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ। এমন কথা জানিয়েছে শিক্ষকেরা।

এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। এরা অনেকেই সন্তানদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে দলাদলির কারণে শিক্ষকরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। অন্যদিকে, নিজের দল ভারি করতে কোনো পক্ষই মনিটরিং করছে না। ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের দাবি হলো, বিরোধ হলেই আদালতে মামলা দায়ের করে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। আদালত এমন মামলা গ্রহনের আগে যাচাই করে নিলে জট অনেক কমতে পারে। এমন একজন শিক্ষক হলেন মো. ফকরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা হলে তার প্রভাব শিক্ষার্থীসহ সবার ওপর পড়ে। এ অবস্থায় মামলা গ্রহণের আগে যাচাই করা শ্রেয়। তা না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা খুবই ভুক্তভোগী হয়।’

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীন ১,৮০০টি মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে ৫০২টি স্কুল এমন কোন্দল ও মামলায় জর্জরিত। ৮৬টি স্কুলের মামলা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এর মধ্যে ৭৬টি রিট হয়েছে, আপিল বিভাগে আছে ২টি, রিভিউ/রিভিশনে আছে ২টি, কন্টেপ্ট পিটিশন একটি, দেওয়ানিতে রয়েছে ৪টি ও ফৌজধারি রয়েছে একটি মামলা। শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘উচ্চ আদালতের ৮৬টি মামলার মধ্যে গত এক বছরে আমরা ২১ টি মামলার নিষ্পত্তি করিয়েছি। বাকিগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। বিরোধ ও মামলার কারণে স্কুলগুলোতে লেখাপড়ার মান ঠিক রাখা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অসন্তোষ। এক কথায় শিক্ষার পরিবেশ হারাচ্ছে। মামলা চালাতে অর্থের ব্যয় করতে গিয়ে স্কুলের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে, অর্থ সংকটে পড়ে স্কুলগুলো। আমি আমার কর্মকালীন সময় এসব বিরোধ ও মামলা নিষ্পত্তিতে উদ্যোগ নেব, গঠন করব বিশেষ মনিটরিং সেল।’

The post বরিশালের পাঁচ শতাধিক স্কুলের কমিটি নিয়ে বি*রো*ধ ও মামলা, শিক্ষার মান তলানিতে appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.